Australia: নদীর বুকে লক্ষ লক্ষ মরা মাছের ‘কার্পেট’, আটকে যাচ্ছে নৌকা; পচা গন্ধে আতঙ্কিত শহরবাসী

Australia millions of dead fish: সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োগুলিতে দেখা যাচ্ছে, নদীপৃষ্ঠে মৃত মাছের স্তরে আটকে যাচ্ছে নৌকা। লক্ষ লক্ষ মরা মাছের পচা গন্ধে বসবাস করাই দায় হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Australia: নদীর বুকে লক্ষ লক্ষ মরা মাছের 'কার্পেট', আটকে যাচ্ছে নৌকা; পচা গন্ধে আতঙ্কিত শহরবাসী
লক্ষ লক্ষ মরা মাছে ঢেকে গিয়েছে নদীর জল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 19, 2023 | 5:46 PM

সিডনি: নদীর জল ঢেকে গিয়েছে লক্ষ লক্ষ মরা মাছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একাধিক ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, নদীপৃষ্ঠে মৃত মাছের একটি স্তর ভেদ করে এগোতে হচ্ছে নৌকাগুলিকে। নৌকোর ধাক্কায় মরা মাছে স্তর সরে গেলে তবেই জলের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। পচা মাছের গন্ধে অতিষ্ট স্থানীয় বাসিন্দারা। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রত্যন্ত শহর, মেনিন্ডি এখন সম্মুখীন অভিনব বিপর্যয়ের। সাম্প্রতিক অতীতে এই নিয়ে তৃতীয়বার গণহারে মৃত্যু হল মাছেদের। এর আগে, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে এই অঞ্চলেই অপর্যাপ্ত জলপ্রবাহ, জলের নিম্ন মান এবং আচমকা তাপমাত্রা ওঠানামার কারণে প্রায় দশ লক্ষ মাছ মারা গিয়েছিল। কেন এইভাবে গণহারে মাছের মৃত্যু হচ্ছে?

গত শুক্রবার নিউ সাউথ ওয়েলস সরকার জানিয়েছে, মেনিন্দি শহরের কাছে যে ডার্লিং নদী আছে সেখানে কয়েক লক্ষ মাছের মৃত্যু হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলস ডিপার্টমেন্ট অব প্রাইমারি ইন্ডাস্ট্রিজের মতে, কিছুদিন আগে এই এলাকা ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছিল। বন্যার জল কমে যাওয়ায়, বর্তমানে নদীর জলে অক্সিজেনের মাত্রায় উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছে। আর তাতেই মৃত্যু হচ্ছে লক্ষ লক্ষ মাছের। পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলেছে উষ্ণ আবহাওয়া। কারণ, এই রকম পরিবেশে মাছেদের অতিরিক্ত অক্সিজেন প্রয়োজন হয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে একের পর এক বন্যা এবং খরায় বিধ্বস্ত হয়েছে মেনিন্দি শহর। নিউ সাউথ ওয়েলস সরকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কয়েক মাস আগে যে বন্যা হয়েছিল, তাতে ডার্লিং নদীতে ‘বোনি হেরিং’ এবং ‘কার্প’ জাতীয় মাছের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু, বন্যার জল নেমে যাওয়ায় এখন সেইসব মাছের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। হাইপক্সিয়া অর্থাৎ জলে অক্সিজেনের মাত্রার কম থাকার কারণেই এই মাছগুলির মৃত্যু হচ্ছে। বন্যার জল নেমে যাওয়ায়, সার্বিকভাবে নদীর জলের পরিমাণ কমেছে। ফলে এখন আগের থেকে কম পরিমাণ জলে বেশি পরিমাণ মাছ রয়েছে। তাই প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব হচ্ছে। এই অঞ্চলের বর্তমানে আবহাওয়াও ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। যার ফলে হাইপক্সিয়ার প্রভাব আরও বাড়ছে। কারণ, উষ্ণ জলে ঠান্ডা জলের তুলনায় অনেক কম অক্সিজেন থাকে। পাশাপাশি উষ্ণ তাপমাত্রায় মাছেদের অক্সিজেনের চাহিদাও বেড়ে যায়। এই দুইয়ের যৌথ প্রভাবেই মরা মাছের কার্পেটে ঢেকে গিয়েছে ডার্লিং নদীর জল।

এদিকে গণহারে মাছের মৃত্যুতে বিপর্যস্ত ৫০০ জনসংখ্যার ছোট্ট শহর মেনিন্ডি। পচা মাছের গন্ধে তাদের বসবাস করাই দায় হয়ে পড়েছে। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে স্থানীয় বাসিন্দা গ্রায়েম ম্যাকক্র্যাব বলেছেন, “পরিস্থিতি সত্যিই ভয়ঙ্কর। যতদূর চোখ যাচ্ছে শুধুই মৃত মাছ দেখা যাচ্ছে। একেবারে পরাবাস্তব দৃশ্য। এই ঘটনার পরিবেশগত প্রভাব অকল্পনীয়।”