Hijack of India-bound ship: লোহিত সাগরে ভারতগামী জাহাজ হাইজ্যাকের পিছনে ব্যাঙ্কের তথ্য ফাঁস? দাবি বিশেষজ্ঞের
Hijack of India-bound ship in Red Sea: জাহাজটি ছাড়ানোর জন্য, ইজরায়েল, সৌদি আরব, ওমান ও ইরানের সঙ্গে পরামর্শ করে হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাপান সরকার। এদিকে, শিপিং বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন সঞ্জয় প্রশারের সন্দেহ, গ্যালাক্সি লিডার হাইজ্যাকের পিছনে ব্যাঙ্কের তথ্য ফাঁসের ঘটনা থাকতে পারে। যা তাঁর মতে, শিপিং, অর্থাৎ, জাহাজে মাল পরিবহণের ক্ষেত্রে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
মুম্বই: রবিবার (১৯ নভেম্বর) হুথি বিদ্রোহীরা, লোহিত সাগরে তুরস্ক থেকে ভারতে আগত একটি মালবাহী জাহাজ হাইজ্যাক করেছে। ‘গ্যালাক্সি লিডার’ নামে জাহাজটির গুজরাটের পিপভাভ বন্দরে আসার কথা ছিল। হুথিদের এই দুঃসাহসী পদক্ষেপে পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হাইজ্যাকের সময় জাহাজটিতে কোনও মাল না থাকলেও, ফিলিপাইন্স, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, ইউক্রেন এবং মেক্সিকোর ২৫ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। জাহাজটি ছাড়ানোর জন্য, ইজরায়েল, সৌদি আরব, ওমান ও ইরানের সঙ্গে পরামর্শ করে হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাপান সরকার। এদিকে, শিপিং বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন সঞ্জয় প্রশারের সন্দেহ, গ্যালাক্সি লিডার হাইজ্যাকের পিছনে ব্যাঙ্কের তথ্য ফাঁসের ঘটনা থাকতে পারে। যা তাঁর মতে, শিপিং, অর্থাৎ, জাহাজে মাল পরিবহণের ক্ষেত্রে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
বাহামার পতাকায় জাহাজটি নিবন্ধিত ছিল। মূলত, গাড়ি পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয় এই জাহাজ। জাহাজটি একটি ব্রিটিশ সংস্থার মালিকানাধীন হলেও, ইজরায়েলি শিল্পপতি আব্রাহাম উঙ্গারও অংশত জাহাজটির মালিক। জাহাজটি বর্তমানে এক জাপানি সংস্থা লিজ নিয়েছিল। সাধারণত, মালবাহী জাহাজগুলির প্রকৃত মালিক কারা, তা জানা প্রায় অসম্ভব হয়। কারণ এই জাহাজগুলির বহুবার মালিকানা বদল হয়।
ভিআর মেরিটাইম সার্ভিসেসের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও, ক্যাপ্টেন সঞ্জয় প্রশার জানিয়েছেন, এই জাহাজ হাইজ্যাকের পিছনে ব্যাঙ্কিং তথ্য ফাঁসের ঘটনা থাকতে পারে। কারণ, কোনও জাহাজে কারা লগ্নি করেছেন, এই ধরনের তথ্য শুধুমাত্র ব্যাঙ্কের কর্মীদের কাছেই থাকে। কাজেই ব্যাঙ্কের কেউ যদি গ্যালাক্সি লিডারের লগ্নিকারীদের সম্পর্কে তথ্য না দিয়ে থাকে, তাহলে এই তথ্য কারও পক্ষে জানা সম্ভব হত না। তাঁর মতে, জাহাজটি তুরস্ক ছাড়ার সময় থেকেই জাহাজটি হাইজ্যাকের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সম্ভবত ব্যাঙ্কের কর্মীদের মধ্যেই প্যালিস্তিনীয়দের প্রতি সহানুভূতিশীল কেউ এটা করেছেন। সঞ্জয় প্রশার জানিয়েছেন, শিপিং শিল্পের জন্য এটা মোটেই ভাল ঘটনা নয়, কারণ এর ফলে সব তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গিয়েছে, একটি হেলিকপ্টার থেকে দড়ি বেয়ে জাহাজটির বুকে নেমে এসেছিল হাইজ্যাকাররা। সঞ্জয় প্রশারের মতে, সামরিক সহায়তা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। তিনি জানিয়েছেন, গাড়িবাহী জাহাজগুলিতে বিমান অবতরণ করানো সনম্ভব নয়। তাই, সামরিক অভিযান সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা কেউ এই হাইজ্যাকের পরিকল্পনা করেছিল বলে মনে করছেন তিনি। সেই সামরিক ব্যক্তিরা বর্তমানে কর্মরত হতে পারেন বা প্রাক্তন সামরিক কর্মীও হতে পারেন।
এই ঘটনা শিপিং শিল্পের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে বলেও মনে করছেন সঞ্জয় প্রশার। কারণ, গ্যালাক্সি লিডার হাইজ্যাক হওয়ায়, মালবাহী জাহাজগুলির বিমার খরচ বহুগুণে বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাইওয়ানের ক্ষেত্রে চিনও অদূর ভবিষ্যতে জাহাজ হ্যাইজ্যাক করার মতো কৌশল নিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন সঞ্জয়। ফলে বেসরকারি মেরিটাইম সুরক্ষা বাহিনীগুলির গুরুত্বও বাড়বে। আগামী দিনে, সমুদ্রপথে মাল পরিবহণের ক্ষেত্রে জাহাজগুলি বিমা করাবে, নাকি, বিমার পরিবর্তে নৌ সুরক্ষা বাহিনীগুলিকে নিয়োগ করা সস্তা হবে, সেই আলোচনা শুরু হবে বলে মনে করেন সঞ্জয় প্রশার।