Biography of UK New PM Liz Truss : বরিসের হাত ধরেই ‘অভিষেক’, জনসনের আসনেই লিজ, ব্রিটেনের তৃতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রীর ইতিবৃত্তান্ত
Biography of UK New PM Liz Truss : ২০২১ সালের মন্ত্রিসভায় রদবদলে বৈদেশিক বাণিজ্য সচিব থেকে বিদেশ এবং কমনওয়েলথ ও ডেভেলপমেন্ট বিষয়ের সচিব হন লিজ ট্রাস। আর তারপর ২০২২ সালে ব্রিটেনের তৃতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন লিজ ট্রাস।
লন্ডন : গত দু’মাস ধরে চলা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হল সোমবার। ব্রিটেনের শাসক দল কনজারভেটিভ পার্টি নেতা ও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হল বিদেশ সচিব লিজ ট্রাসের। এমনিতেই এই লড়াইতে এগিয়ে ছিলেন বরিস জনসনের পছন্দের প্রার্থী লিজ। সোমবার বিকেলেই ঋষি সুনককে হারিয়ে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর শিরোপা ছিনিয়ে নিলেন তিনি। থেরেসা মে ও মার্গারেট থ্যাচারের পর তৃতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন লিজ ট্রাস ( Liz Truss)। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রাজনীতিতে তাঁর উত্থান।
ব্যক্তিগত জীবন :
মার্গারেট এলিজাবেথ ট্রাস। ১৯৭৫ সালের ২৬ জুলাই অক্সফোর়্ডে জন্মগ্রহণ করেন লিজ। বাবা লিডসের বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কের অধ্যপক ছিলেন তাঁর বাবা। মা ছিলেন বল্টন স্কুলের লাতিনের শিক্ষক। ২০০০ সালে হাগ ওলিয়ারিকে বিয়ে করেন ট্রাস। তাঁর দুই কন্যা সন্তান রয়েছে।
পড়াশোনা :
লিডসের রাউনধায় এলাকায় রাউনধায় স্কুলে পড়াশোনা করতেন তিনি। মের্টন কলেজে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে তাঁর পড়াশোনা। ১৯৯৬ সালে তিনি স্নাতক হন।
কর্মজীবন :
১৯৯৯ সালে ২৪ বছর বয়সে শুরু হয় কর্মজীবন। চার্টাড ম্যানেজমেন্ট অ্য়াকাউন্ট্য়ান্ট (ACMA) হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। পরে কেবল ও ওয়্যারলেসে নিযুক্ত হন। ২০০৫ সালে সংস্থা ছেড়ে যাওয়ার আগে অর্থনৈতিক ডিরেক্টর পদে উন্নীত হন তিনি। এরপর তিনি তিনটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু হেরে যান। তারপর ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে রিফর্মের ডেপুটি ডিরেক্টর হন।
রাজনৈতিক জীবন :
১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত লুইশাম ডেপ্টফোর্ড কনসারভেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ার পদ সামলেছেন তিনি। তারপর ২০০৬ সালে গ্রীনউইচ লন্ডন বরো কাউন্সিল নির্বাচনে লড়ে এলথাম সাউথের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন।
সংসদীয় জীবন :
২০১০ সালের ৬ মে হাউস অব কমনসের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দফতরের আন্ডার সেক্রেটারি হিসেবে নিযুক্ত হন ট্রাস। এর পাশাপাশি শিশু যত্ন, প্রাথমিক শিক্ষা, মূল্যায়ন, যোগ্যতা, পাঠ্যক্রম সংস্কার, আচরণ, উপস্থিতি ও স্কুলের খাবার পর্যালোচনার দায়িত্বও দেওয়া হয় তাঁকে। ২০১৪ সালে মন্ত্রিসভায় রদবদল হয়। সেই সময় ২০১৪ সালের ১৫ জুলাই পরিবেশ, খাদ্য ও গ্রামীণ বিষয়ক দফতরের সচিব হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তিনি ওয়েন প্য়াটারসনকে প্রতিস্থাপন করে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
২০১৬ সালে তিনি থেরেসা মে এর প্রথম মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নেন। বিচার বিভাগের সচিব এবং লর্ড চ্যান্সেলর হিসেবে কাজ শুরু করেন। এই দায়িত্ব গ্রহণ করেই ইতিহাস তৈরি করেন তিনি। লিজই প্রথম মহিলা যিনি একই সঙ্গে এই দুটি পদের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এই লর্ড চ্যান্সেলরের অফিসের হাজার বছরের ইতিহাসে প্রথম মহিলা লর্ড চ্যান্সেলর হন লিজ ট্রাস।
এরপর ২০১৭ সালে ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে বছর ১১ জুলাই ট্রেসারির মুখ্য সচিব পদে উন্নীত হন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে তাঁর রাজনৈতিক জীবন এক অন্য মোড়ের অপেক্ষায় ছিল। সবাইকে চমকে দিয়ে তিনি ঘোষণা করেছিলেন থেরেসা মে-র পরবর্তীতে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হওয়ার লড়াইয়ে তিনি প্রার্থী হতে পারেন। কিন্তু শেষ অবধি তিনি বরিস জনসনকেই এগিয়ে দেন। তাঁর হয়ে প্রচার করেন। বরিসের পছন্দের রাজনীতিক হিসেবেই পরিচিত ট্রাস। বরিসকে সমর্থন করার জন্য তাঁর পদোন্নতি হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সচিব হিসেবে নিযুক্ত হন। পাশাপাশি বোর্ড অব ট্রেডের প্রেসিডেন্ট হন তিনি। বরিসের মন্ত্রিসভায় অ্যাম্বার রুডের ইস্তফার পর ট্রাসকে অতিরিক্ত মহিলা ও সমতা মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে ২০২১ সালে আরও বড় প্রাপ্তি অপেক্ষা করছিল ট্রাসের জন্য। ২১ সালের মন্ত্রিসভায় রদবদলে বৈদেশিক বাণিজ্য সচিব থেকে বিদেশ এবং কমনওয়েলথ ও ডেভেলপমেন্ট বিষয়ের সচিব করা হয়। এবং তা হয় বরিস জনসনের হাত ধরেই। মার্গারেট বেকেটের পর তিনিই দ্বিতীয় মহিলা যিনি এই অফিসের দায়িত্বে ছিলেন। ২০২১ সালেই ভাগ্য খুলছিল। আর অবশেষে ২০২২ সালে প্রধান মন্ত্রীর কুর্শিটাই নিজের নামে করে নিলেন মার্গারেট এলিজাবেথ ট্রাস।