AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

BRICS Summit: ‘দিবাস্বপ্ন’ ব্রিকস কারেন্সি! রিও সম্মেলনে কার্যত নীরবতা

সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সেই বিশ্বাসযোগ্যতাও নেই। ঝুঁকি নেওয়ার সাহসও নেই। প্রশ্নের মুখে ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রী দাবি করলেন, 'ব্রিকস এখনই কোনও অভিন্ন মুদ্রার কথা ভাবছে না। আমাদের লক্ষ্য, ১১টা দেশই যাতে নিজস্ব মুদ্রায় নিজেদের মধ্যে আরও বেশি ব্যবসা করতে পারে, তা নিশ্চিত করা।'

| Edited By: | Updated on: Jul 08, 2025 | 9:08 PM
Share

সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানের ভূমিকার উল্লেখ না থাকায় হাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের যৌথ বিবৃতিতে সই করেনি। ব্রাজিলে ব্রিকস সম্মেলনে অবশ্য তেমন কিছু হল না। ব্রিকসের যৌথ বিবৃতিতে পহেলগাঁও-এর জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা করল ব্রিকস। সম্মেলন শেষ হওয়ার ঠিক আগে হাতে হাত মিলিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ার শপথ নিলেন ব্রিকস ভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। কিন্তু এসব তো সেই কবে থেকেই হচ্ছে? সন্ত্রাস তো তাতে বন্ধ হচ্ছে না। বিভিন্ন দেশ খোলাখুলি জঙ্গিদের মদত দিচ্ছে। দিয়েই চলেছে। কিছু দেশ খোলাখুলি তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। তাই এসব বিবৃতিতে খুব একটা কিছু যায় আসে না। সম্মেলন শেষ হলে ওগুলো বাজে কাগজের ঝুলিতে চলে যায়। এবারও যাবে। বরং ব্রিকস যেটা করতে পারত, সেটা নিয়ে তেমন একটা নাড়াচাড়াই হল না।

এবারের ব্রিকস সম্মেলন বুঝিয়ে দিল, এই মুহূর্তে ব্রিকস কারেন্সি দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। ডলারের একাধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করতে এক দশক আগে ব্রিকস কারেন্সির কথা ভাবা হয়েছিল। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা – ব্রিকসের পাঁচ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ২০১৫ সালে ব্রিকসের ৫ দেশ সিদ্ধান্ত নেয়, পাঁচ বছরের মধ্যে ব্রিকস কারেন্সির রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। কোভিড আবহে সেই সময় সীমা কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হয়। চলতি বছরের প্রথমে ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, ব্রিকস কারেন্সির রূপরেখা প্রায় চূড়ান্ত। রিও-তে সম্মেলনের পরই তা প্রকাশ্যে আসবে। কিন্তু যা হয়ইনি, তা কীভাবে প্রকাশ্যে আনা হবে? তাই ব্রিকস কারেন্সি নিয়ে উচ্চবাচ্য না করেই শেষ হল এবারের সম্মেলন।

কেন? বেশ কয়েকটা কারণ আছে। সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সেই বিশ্বাসযোগ্যতাও নেই। ঝুঁকি নেওয়ার সাহসও নেই। প্রশ্নের মুখে ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রী দাবি করলেন, ‘ব্রিকস এখনই কোনও অভিন্ন মুদ্রার কথা ভাবছে না। আমাদের লক্ষ্য, ১১টা দেশই যাতে নিজস্ব মুদ্রায় নিজেদের মধ্যে আরও বেশি ব্যবসা করতে পারে, তা নিশ্চিত করা।’ অর্থাত্‍ ভারত ব্রিকসের বাকি দেশগুলোর সঙ্গে টাকায় ব্যবসা করবে। চিন ইউয়ান, রাশিয়া রুবলে ব্যবসা করবে – এইরকম। যাকে বলে লোকাল কারেন্সি ট্রানস্যাকশন। এই মুহূর্তে ব্রিকসের মধ্যে এই লোকাল কারেন্সি ট্রানস্যাকশনের পরিমাণ কত? সংখ্যাটা চমকে ওঠার মতো। ৩ পারসেন্টেরও কম। ২০৩০ সালের মধ্যে এটা ২৫ শতাংশে নিয়ে যেতে চায় ব্রিকস দেশগুলো। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটাও ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো একটা পরিসংখ্যান। ব্রিকস কারেন্সি নিয়ে ঠিক এরকমই হাওয়ায় বিভিন্ন তত্ত্ব ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নুরিয়েল রুবিনির মতো নামকরা অর্থনীতিবিদও বলছিলেন, ডলারের রমরমা মধ্যবিত্ত ও গরিব দেশগুলোর কাছে সবচেয়ে বড় বাধা। ডলারকে চ্যালেঞ্জ করা কম কথা নয়। কিন্তু নিজেদের স্বার্থেই ব্রিকস দেশগুলিকে সেই পথে হাঁটতে হবে।

ব্রিকসের দেশগুলির মধ্যে স্বার্থের সংঘাতই ব্রিকস কারেন্সির পথে সবচেয়ে বড় বাধা। ব্রিকস দেশগুলোই ব্রিকস কারেন্স নিয়ে উত্‍সাহ দেখায়নি। কেন? এদিন ব্রিকসের ইকোমনিক কমিটির বৈঠক শুরুর আগেই ট্রুথ হ্যান্ডেলে হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের বক্তব্য, ব্রিকস নিয়ে আমেরিকার স্বার্থ বিরোধী কোনও পদক্ষেপ হলে সংশ্লিষ্ট দেশের উপর ১০ শতাংশ বাড়তি কর চাপবে। এমনিতেই ট্রাম্পের শুল্কনীতির চাপে অধিকাংশ দেশের হাঁসফাঁস অবস্থা। তার উপর আবার ১০ শতাংশ কর! গত ফেব্রুয়ারিতেও ঘুরিয়ে একই বার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এই হুঁশিয়ারি না দিলেও কিছু এসে যেত না। ব্রিকস মুদ্রা নিয়ে ব্রিকসের সদস্যরাই সিরিয়াস ছিল কীনা সন্দেহ।