নয়াদিল্লি: ইউনূস প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় ভারত। কিন্তু, বাংলাদেশের নেতাদের ভারত নিয়ে আলটপকা মন্তব্যকে যে ভালভাবে নেওয়া হচ্ছে না, ইউনূস প্রশাসনকে স্পষ্ট বার্তা দিল নয়াদিল্লি। শুক্রবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানালেন, ভারতের কড়া আপত্তির কথা জানানো হয়েছে বাংলাদেশকে। প্রকাশ্যে মন্তব্য নিয়ে সচেতন হওয়া উচিত বলে ইউনূস প্রশাসনকে বার্তা দিল ভারত।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে গত ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। তার তিনদিন পর মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়। ইউনূস প্রশাসনের চার মাস কাটতে না কাটতেই ফের উত্তপ্ত বাংলাদেশ। হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে বারবার বার্তা দিয়েছে ভারত। তবে ইউনূস প্রশাসনের বিশেষ হেলদোল দেখা যায়নি।
কিন্তু, ইউনূস প্রশাসনের সঙ্গে ভারত যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়, সেই বার্তা বারবার দিয়েছে নয়াদিল্লি। এমনকি, কিছুদিন আগে ঢাকা সফরে যান বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। সেখানেও তিনি বার্তা দেন, ভারত ইউনূস প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়। এমনকি, পদ্মাপারের দেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার পর ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশন ও ডেপুটি হাইকমিশনে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।
ভারত যখন বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বার্তা দিচ্ছে, তখন বাংলাদেশের নেতা ও প্রাক্তন সেনা আধিকারিকদের আলটপকা মন্তব্য করতে দেখা যায়। দিন তিনেক আগে মহম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠ ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি পশ্চিমবঙ্গ, অসম এবং ত্রিপুরাকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত দেখিয়েছেন। যা নিয়ে বিতর্ক বাধে। পোস্টটি ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে সরিয়ে নেন মাহফুজ।
কিন্তু, অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টার এমন পোস্ট যে ভারত ভালভাবে নিচ্ছে না, সেই বার্তা ইউনূস প্রশাসনকে দিল বিদেশ মন্ত্রক। এদিন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “বাংলাদেশের নেতার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নিয়ে কড়া ভাষায় নিজের আপত্তি বাংলাদেশকে জানিয়েছে ভারত।” তাঁর কথায়, “ভারত বরাবরই জানিয়ে এসেছে, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। কিন্তু সে সম্পর্ক বাংলাদেশের তরফ থেকেও বজায় রাখার জন্য তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যে, সেখানকার নেতারা প্রকাশ্যে কী মন্তব্য করছেন।”
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “ভারতের তরফে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে নিজেদের অবস্থান জানানো হয়েছে। ভারত গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল বাংলাদেশের পক্ষে।” দু’পক্ষের যৌথ বিশ্বাস বজায় রাখার জন্য কাজ করে যাওয়া হবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশি স্লিপার সেলের ৮ সদস্যের গ্রেফতারি নিয়ে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “ভারতের নিরাপত্তার বিষয়গুলি সবসময়ই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। বিভিন্ন এজেন্সি ভারতের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নিবিড়ভাবে কাজ করছে।”