Ukraine’s First Lady: কমেডিয়ান থেকে প্রেসিডেন্ট! জ়েলেনস্কির যাবতীয় মুসকিল আসানের ‘চাবিকাঠি’কে চেনেন?
Ukraine's First Lady: একসঙ্গে পড়াশোনা করেছিলেন ভোলোদিমির ও ওলেনা। কর্মজীবনে প্রবেশের পরও কোনওদিন জ়েলেনস্কির পাশ থেকে সরে দাঁড়াননি ওলেনা। তাঁর স্বামী যখন টিভিতে নিজেকে কমেডিয়ান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছিলেন, সেই সময়ই তিনি পর্দার আড়াল থেকে স্বামীকে কাজে সাহায্য করছিলেন।
কিয়েভ: এক সপ্তাহ আগেও তাঁকে চিনতো না গোটা বিশ্ব। কিন্তু ইউক্রেনের উপরে রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরুর পরই ঘরে ঘরে পরিচিত হয়েছে একটা নাম, ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy)। বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন(Vladimir Putin)-র বিরুদ্ধে যেভাবে তিনি রুখে দাড়িয়েছেন এবং যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে না যাওয়ার শপথ নিয়েছেন, তাঁকে সাধুবাদ জানিয়েছে গোটা দুনিয়া। তবে কথায় আছে, প্রত্যেক সফল পুরুষের পিছনেই একজন শক্তিশালী মহিলার হাত থাকে। জ়েলেনস্কিও ব্যতিক্রম নন। প্রথম জীবনে কৌতুককে পেশা হিসাবে বেছে নেওয়া থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্টের গদিতে বসা, সমস্ত ক্ষেত্রেই পাশে পেয়েছেন স্ত্রী ওলেনা জ়েলেনস্কা(Olena Zelenska)-কে।
হাতিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া:
এক সময় নিজেই জানিয়েছিলেন, তিনি পর্দার আড়ালেই থাকতে ভালবাসেন। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্বামীকে শক্তি জোগাতে হাতে অস্ত্র তুলে নিতেও রাজি হয়েছেন ওলেনা জ়েলেনস্কা। রাশিয়ার নিশানায় এক নম্বরেই রয়েছেন ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি। তারপরেই তালিকায় রয়েছেন ওলেনা জ়েলেনস্কার নাম, এমনটাই জানা গিয়েছে গোপনসূত্রে। তবে খুনের হুমকিতেও ভয় পাচ্ছেন না ওলেনা, বরং সোশ্যাল মি়ডিয়ায় নিজের বিপুল জনপ্রিয়তাকেই কাজে লাগিয়ে দেশের হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি।
View this post on Instagram
ইন্সটাগ্রামে ২১ লক্ষেরও বেশি ফলোয়ার্স রয়েছে ওলেনার। ফার্স্ট লেডির দায়িত্ব পাওয়ার পর সামাজিক কাজের পোস্ট করলেও, তার মাঝেই ফাঁকফোকরে জায়গা করে নিত স্বামী বা সন্তানদের সঙ্গে ছবি। তবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই দেশের সঙ্গে সঙ্গে ওলেনার ইন্সটা প্রোফাইলও রূপ বদলেছে। সেখানে স্থান পেয়েছে মানবতার বার্তা বা যুদ্ধের ভয়াবহতার চিত্র। চলতি সপ্তাহর বুধবারও তিনি যে পোস্ট করেছেন, সেখানে তিনি বিশ্বের অন্যান্য দেশের ফার্স্ট লেডিদেরও ‘সত্যি’ তুলে ধরার অনুরোধ করেছেন। সামরিক অভিযানের নামে রাশিয়া যে পুরোদমে যুদ্ধ শুরু করেছে, তাও দাবি করেছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি যেমন টুইটারের মাধ্যমে নিজের কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরছেন, একইভাবে তাঁর স্ত্রীও সোশ্যাল মিডিয়াকেই ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছে রুশ আগ্রাসন ও যুদ্ধের ভয়াবহতা সম্পর্কে তুলে ধরছেন। এই মিল কিন্তু নতুন নয়, তাঁদের সম্পর্কের ভিতই গড়ে উঠেছে নিজেদের একই ধরনের পছন্দ ও মিলের উপর ভিত্তি করে।
কীভাবে পরিচয় দুজনের?
একসঙ্গে পড়াশোনা করেছিলেন ভোলোদিমির ও ওলেনা। কর্মজীবনে প্রবেশের পরও কোনওদিন জ়েলেনস্কির পাশ থেকে সরে দাঁড়াননি ওলেনা। তাঁর স্বামী যখন টিভিতে নিজেকে কমেডিয়ান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছিলেন, সেই সময়ই তিনি পর্দার আড়াল থেকে স্বামীকে কাজে সাহায্য করছিলেন। ”স্টুডিয়ো কোয়াটের ৯৫” নামক যে প্রযোজনা সংস্থা শুরু করেছিলেন জ়েলেনস্কি, সেখানে কী কী অনুষ্ঠান হতে পারে, তার পরিকল্পনা থেকে চিত্রনাট্য লেখার দায়িত্বও সামলেছেন ওলেনা।
লেখালেখি শুরু করার আগে ওলেনা স্থাপত্য (আর্কিটেকচার) নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। সেখানেই আইনের ছাত্র জ়েলেনস্কির সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাঁর। ২০০৩ সালে তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুই সন্তানও রয়েছে, সাশা ও সিরিল।
প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার কথা জানতেনই না ওলেনা:
জ়েলেনস্কি যখন প্রেসিডেন্টের পদপ্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেই সময় তিনি স্ত্রীকেও জানাননি। ১ জানুয়ারি টিভি শোতে ঘোষণার পর সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই তিনি জানতে পেরেছিলেন। সেই সময় তিনি যখন জ়েলেনস্কিকে প্রশ্ন করেছিলেন যে কেন তাঁকে জানাননি, জ়েলেনস্কি উত্তর দিয়েছিলেন ‘আমি ভুলে গিয়েছিলাম’।
সামাজিক সমস্যা দূর করতে সিদ্ধহস্ত ওলেনা:
স্থাপত্য নিয়ে পড়াশোনা করলেও, ফার্স্ট লেডি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি দেশের শিশুদের স্বাস্থ্য, মহিলাদের সমান অধিকার থেকে সাংস্কৃতিক কূটনীতির উপরই জোর দিয়েছিলেন। স্কুলে শিশুদের খাবারের পরিবর্তন তাঁকে সংবাদের শিরোনামে এনে দিয়েছিল। গার্হস্থ্য় হিংসার মতো সামাজিক সমস্যাকেও দূর করেছেন তিনি। প্যারাঅলিম্পিক প্রতিযোগীদের সাহায্য থেকে শুরু করে ইউক্রেনের পরিকাঠামোর পরিবর্তন এনেছেন তিনি।