AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Planet Mercury: ১৪ কিমি পুরু হিরের স্তরে ঠাসা এক গ্রহ, ঘুরছে পৃথিবীর আশপাশেই

Planet Mercury: পৃষ্ঠের নীচে লুকিয়ে আছে ৯ মাইল বা ১৪ কিলোমিটার পুরু হিরের স্তর। কোথায় এই হিরের জগৎ? না আমাদের পৃথিবী থেকে অনেক দূরে নয়। সৌরজগতেই অবস্থিত এই গ্রহ। তাহলে কি ওই হিরে খনন করে এনে পৃথিবীর সকল মানুষ বড়লোক হয়ে যাবে?

Planet Mercury: ১৪ কিমি পুরু হিরের স্তরে ঠাসা এক গ্রহ, ঘুরছে পৃথিবীর আশপাশেই
বুধের ভূত্বকের নীচে লুকিয়ে ১৪ কিলোমিটার পুরু হিরের স্তর Image Credit: Twitter
| Updated on: Jul 24, 2024 | 12:43 AM
Share

বেজিং: পুরো গ্রহ হিরেয় ঠাসা। পৃষ্ঠের নীচে লুকিয়ে আছে ৯ মাইল বা ১৪ কিলোমিটার পুরু হিরের স্তর। কোথায় এই হিরের জগৎ? না আমাদের পৃথিবী থেকে অনেক দূরে নয়। সৌরজগতেই অবস্থিত, আমাদের অতি চেনা বুধ গ্রহের কথা হচ্ছে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এই অতি চেনা গ্রহের এক নতুন কম্পিউটার সিমুলেশন তৈরি করেছেন। আর তাতেই বেরিয়ে এসেছে, আমাদের চেনা গ্রহের এই অচেনা ছবি। তাহলে কি ওই হিরে খনন করে এনে পৃথিবীর সকল মানুষ বড়লোক হয়ে যাবে?

না, সে গুড়ে বালি। এই হিরে খনন করার কোনও সুযোগ নেই। সূর্যের সবথেকে কাছের গ্রহ। দিনের বেলায় তাপমাত্রা থাকে ৪৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর রাতে নেমে যায় -১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এই চরম তাপমাত্রার কারণেই এই গ্রহের কাছাকাছিও যাওয়ার উপায় নেই। তবে, এই হিরের পুরু স্তরের সন্ধান বুধ গ্রহের বেশ কিছু রহস্যের ব্যাখ্যা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে গ্রহটির গঠন এবং এর অদ্ভুত চৌম্বক ক্ষেত্র সম্পর্কে অনেক রহস্যেরই সমাধান হয়েছে এই একটি সম্ভাবনায়।

বুধের চৌম্বক ক্ষেত্র পৃথিবীর তুলনায় খুবই দুর্বল। তবে গ্রহটি আকারে এতটাই ছোট এবং ভূতাত্ত্বিক কোনও কার্যকলাপ না থাকায় গ্রহটিতে কোনও চৌম্বকত্ব থাকারই কথা নয়। গ্রহটির ভূপৃষ্ঠে একটি গাঢ় প্যাচ রয়েছে। নাসার মেসেঞ্জার মিশনে জানা গিয়েছিল ওই প্যাঁচটি গ্রাফাইট। হিরে থাকর গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে, নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে। গবেষণার সহ-লেখক তথা বেজিং-এর সেন্টার ফর হাই-প্রেশার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অ্যাডভান্সড রিসার্চের বিজ্ঞানী, ইয়ানহাও লিন জানিয়েছেন বুধ গ্রহের এই বৈশিষ্ট্যটিই বিজ্ঞানীদের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি করেছিল। তিনি বলেছেন, “বুধে যে অত্যন্ত উচ্চ পরিমাণে কার্বন রয়েছে, তাতেই আমি বুঝেছিলাম, এর অভ্যন্তরে সম্ভবত বিশেষ কিছু ঘটেছে।”

বুধের ভূপৃষ্ঠের নীচে কীভাবে হিরের এই পুরু স্তর তৈরি হল? বিজ্ঞানীদের মতে, বুধের অনেক কিছুই বড় অদ্ভুত। তবে, সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ যেমন উত্তপ্ত ম্যাগমার মহাসাগর শীতল হয়ে জমাট বেঁধে তৈরি হয়েছে, বুধও একইভাবে তৈরি হয়েছে। তবে, বুধের ক্ষেত্রে এই মহাসাগর ছিল সিলিকেট এবং কার্বনে ভরা। প্রথমে এর মধ্যে জমাটবদ্ধ হয়েছিল বিভিন্ন ধাতু। এভাবেই তৈরি হয়েছিল বুধ গ্রহের কোর অংশ। আর অবশিষ্ট ম্যাগমা, গ্রহটির মধ্যম আবরণ এবং বাইরের ভূত্বকের মধ্যে স্ফটিকে পরিণত হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, ম্যান্টলের তাপমাত্রা এবং চাপে গ্রাফাইট গঠন করেছে কার্বন। এটি ম্যান্টেলের থেকে হালকা হওয়ায় ভূপৃষ্ঠে ভেসে উঠেছে।

তবে, ২০১৯ সালের একটি গবেষণা এই ধারণা অনেকটাই বদলে দিয়েছিল। জানা গিয়েছিল, বুধের ম্যান্টল অংশটি আগেকার ধারণার থেকে অনেক বেশি গভীর। ফলে, ম্যান্টল এবং কোরের মধ্যবর্তী অংশে তাপমাত্রা এবং চাপও অনেক বেশি হবে। যা, কার্বনকে হিরেয় পরিণত করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। এই সম্ভাবনাটি খতিয়ে দেখতে, লোহা, সিলিকা এবং কার্বন-সহ বেশ কয়েকটি রাসায়নিকের মিশ্রন নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন বেলজিয়াম এবং চিনের গবেষকদের একটি যৌথ দল। যার নেতৃত্বে ছিলেন ইয়ানহাও লিন। বুধের শিশুকালে যে ম্যাগমা মহাসাগর ছিল, তা এই রাসায়নিকের মিশ্রনের অনুরূপ বলে মনে করা হয়। আর এভাবেই জানা গিয়েছে, বুধের গাঢ় ভূপৃষ্ঠের তলায় লুকিয়ে রয়েছে চকচকে হিরের পুরু স্তর।