নয়া দিল্লি: কেবল প্রতিবেশী দেশেই সীমাবদ্ধ নয়, চিনা যোগ প্রবেশ করেছে ভারতের গভীরেও। সম্প্রতি চিনের প্রকাশিত তথ্যে জানা গিয়েছে চিনের শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টি অব চিন (Communist Party of China)-র সাতটি শাখার সঙ্গে সরাসরি ভারতের যোগ রয়েছে। চিনের নিয়োগসংস্থার সাহায্যে এক সিপিসি (CPC) সদস্য ভারতীয় দূতাবাস কাজ করেছেন বলেও দাবি করা হয়েছে ওই প্রকাশিত তথ্যে।
এই প্রথম চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সমস্ত শাখা ও সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করা হল। প্রতিটি শাখায় সদস্য সংখ্যার বিস্তারিত তথ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন বড় কর্পোরেট অফিসগুলিতে যে দলের কমিটি রয়েছে, সেই তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। প্রকাশিত তথ্যে জানা গিয়েছে, কমপক্ষে ৭৯ হাজার সিপিসির শাখা রয়েছে। প্রায় ১০ লাখ ৯৫ হাজারেরও বেশি মানুষ সেই শাখাগুলির সদস্য।
চিনের প্রকাশিত তথ্যেই জানা গিয়েছে, বিশ্বের তাবড় তাবড় সংস্থায় কাজ করেন সিপিসির সদস্যরা। এই সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, প্রতিরক্ষা, ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাও যেমন এইচএসবিসি (HSBC), ফাইজ়ার (Pfizer), আস্ট্রাজেনেকা (AstraZeneca), ভস্কওয়াগন (Volkswagen) ও বোয়িং (Boeing)।
আরও পড়ুন: শেষমেশ বছরের শুরুতেই করোনার উৎস খুঁজতে চিনে যাচ্ছে হু-র বিশেষজ্ঞ দল
সিপিসির শাখা বিভাজনের তথ্যেই উঠে আসে ভারতীয় যোগ। দেখা যায়, কমপক্ষে সাতটি শাখার সঙ্গে ভারতীয় যোগ রয়েছে এবং ওই সাতটি শাখায় ৯১জন সদস্য রয়েছে। অন্য একটি তালিকায় চিনের বিদেশমন্ত্রকের সাহায্যে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে যে চিনারা কাজ করেন, সেই তালিকাও প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, সাংহাইয়ের ভারতীয় দূতাবাসেও সিপিসির সদস্য এক কর্মচারী ছিল। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময় অবধি সেই ব্যক্তি কাজ করেছিলেন ভারতীয় দূতাবাসে।
সিপিসি-র শাখা ও সদস্য পদের তথ্য ২০১৬ সালে প্রথম ব্যক্তিগত চ্যাটরুমে ভাগ করে নেওয়া হয়। এরপর সম্প্রতি চিনের আন্তঃসংসদীয় জোট এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত হয় এই তথ্য।
আইপিএসি (IPAC) নামেই পরিচিত জোট সংস্থাটি বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশের চিনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের কাজ করে। ইন্টারনেট ২.০ (Internet 2.0) নামক আরেকটি সাইবার সুরক্ষা সংস্থাও এই তথ্যের মূল্যায়ন করে।
ভারতীয় দূতাবাসে চিনের শাসকদলের সদস্যের কাজ করার বিষয়ে দিল্লিতে অবস্থিত চিনা দূতাবাস (Chinese Embassy) মুখ খোলেনি। তারা কেবল একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, “কমিউনিস্ট পার্টি অব চিনের সদস্য সংখ্যা নয় কোটিরও বেশি। এরা সকলেই সাধারণ মানুষ, যারা মন-প্রাণ দিয়ে কাজ করেন। তাদের ভয় পাওয়ার কি কোনও কারণ রয়েছে? নয় কোটি সদস্যরা সকলেই গুপ্তচর, এই ভাবনাটি অত্যন্ত ভুল ও লজ্জাজনক।”
আরও পড়ুন: বিগুলের করুণ সুরে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানালেন শেখ হাসিনা