Camlin: আপনারও কি ছিল ক্যামলিনের জ্যামিতি বক্স? তাহলে এই খবর আপনাকে নাড়া দেবেই

Camlin: গত শতাব্দীর নয়ের দশকে যারা স্কুলে পড়ত, তাদের কাছে অনেক কিছুই ছিল না। মোবাইল ফোন ছিল না, শপিং মল ছিল না, আইপ্যাড ছিল না, রিলস বানানো ছিল না - তালিকা করতে বসলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে। এই নেই-এর দুনিয়ায় ছাত্রছাত্রীদের কাছে দুর্মূল্য ছিল জ্যামিতি বক্স বা কম্পাস বক্স। গত শতাব্দীর আট ও নয়ের দশকে এমন কেউ ছিল না, যে কিংবদন্তি ক্যামলিন 'কম্পাস বক্স' ব্যবহার করেনি।

Camlin: আপনারও কি ছিল ক্যামলিনের জ্যামিতি বক্স? তাহলে এই খবর আপনাকে নাড়া দেবেই
গত শতাব্দীর আট ও নয়ের দশকে এমন কেউ ছিল না, যে কিংবদন্তি ক্যামলিন 'কম্পাস বক্স' ব্যবহার করেনিImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Updated on: Jul 18, 2024 | 6:29 PM

মুম্বই: গত শতাব্দীর নয়ের দশকে যারা স্কুলে পড়ত, তাদের কাছে অনেক কিছুই ছিল না। মোবাইল ফোন ছিল না, শপিং মল ছিল না, আইপ্যাড ছিল না, রিলস বানানো ছিল না – তালিকা করতে বসলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে। এই নেই-এর দুনিয়ায় ছাত্রছাত্রীদের কাছে দুর্মূল্য ছিল জ্যামিতি বক্স বা কম্পাস বক্স। একটু বড় বয়সে জ্যামিতি পড়া শুরু হলে বাবা-মা কিনে দিতেন। কম্পাস, কাঁটা-কম্পাস, চাঁদা, ত্রিকোণ স্কেল – সব মিলিয়ে জ্যামিতি বাক্স ছিল সেই সময়ের শিক্ষার্থীদের কাছে গুপ্তধনের বাক্সর মতো। কায়দার একটা জ্যামিতি বাক্সই ক্লাসে কাউকে কাউতে হিরো বানিয়ে দিত। সবাই ভিড় করে আসত সেই জ্যামিতি বাক্স দেখতে। আর এই জ্যামিতি বাক্সর জগতে একছত্র আধিপত্য ছিল একটি ব্র্যান্ডের, ‘ক্যামলিন’। শুধু জ্যামিতি বাক্স কেন, স্কুল পড়ুয়াদের প্রয়োজনীয় হরেক স্টেশনারি পণ্যই তৈরি করে ক্যামলিন। সম্প্রতি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ক্যামলিন সংস্থার প্রধান, সুভাষ দান্ডেকর। আর তাঁর মৃত্যু, নস্টালজিক করে দিয়েছে নেটিজেনদের।

সুভাষ দাণ্ডেকরের পরিবারবর্গ জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহের সোমবার, মুম্বাইয়ের বাসভবনে প্রয়াণ ঘটে সুভাষ দান্ডেকরের। বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই, ইন্টারনেটে স্মৃতির সরণি বেয়ে হাঁটা শুরু করেছেন নেটিজেনরা। তাঁরা অধিকাংশই জানিয়েছেন, সুভাষ দান্ডেকরকে তাঁরা চিনতেন না। কিন্তু অদ্ভুতভাবে, তাঁর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার খবর পেয়ে, তাঁর সৃষ্ট ব্র্যান্ড সম্পর্কে নস্টালজিক বোধ করছেন তাঁরা। ক্যামলিন ব্য়্যান্ডের জ্যামিতি বাক্স থেকে শুরু করে পেনসিল, ইরেজার সবই তাঁদের শৈশবের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল বলে জানিয়েছেন।

আসলে, গত শতাব্দীর আট ও নয়ের দশকে এমন কেউ ছিল না, যে কিংবদন্তি ক্যামলিন ‘কম্পাস বক্স’ ব্যবহার করেনি। এক নেটিজেন যেমন জানিয়েছেন, ক্লাস সেভেনে ক্যামলিন জ্যামিতি বাক্স ছিল তাঁর গর্বের অধিকার। জ্যামিতি বাক্স, পেনসিল, ইরেজার, রং-তুলির মতো পণ্যগুলি দিয়ে কত মানুষের জীবন যে তিনি স্পর্শ করেছেন, তা খোদ সুভাষ দান্ডেকরই জানতেন না বলে মন্তব্য করেছেন এক নেটিজেন। শৈশবের স্মৃতিতে এবং নস্টালজিয়ায় এত বড় অবদান রাখার জন্য নেটিজেনরা তাঁকে বলছেন, “ধন্যবাদ স্যার।” তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।

১৯৩১ সালে ডিপি দান্ডেকর এবং তাঁর ভাই জিপি দান্দেকর, ক্যামলিন সংস্থার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ‘হর্স ব্র্যান্ড’ -এর গুঁড়ো কালি এবং ট্যাবলেট দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তাঁরা। এরপর, ফাউন্টেন পেনের ‘ক্যামেল’-এর কালি তৈরি করা শুরু করেছিল তারা। ১৯৪৬ সালে সংস্থাটি একটি ব্যক্তিগত সত্ত্বা হয়ে উঠেছিল। তবে, ১৯৯৮ সালে এটি একটি প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থায় পরিণত হয়। উচ্চমানের পেইন্টিং উপকরণ তৈরির জগতে ক্যামলিনকে এক শীর্ষস্থানীয় নামে পরিণত করেছিলেন সুভাষ দান্ডেকর।

২০১১-য় , ৩৬৬ কোটি টাকার বিনিময়ে ক্যামলিনের ৫০.৭৪ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করেছিল জাপানি স্টেশনারি সংস্থা, কোকুয়ো কোং লিমিটেড। তবে, সংস্থার চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদটি ধরে রেখেছিলেন সুভাষ দান্দেকর। এই চুক্তির সময়, পেন্সিল, প্যাস্টেল রং, কালি এবং মার্কার সহ ২,০০০টিরও বেশি পণ্য ছিল ক্যামলিনের। ক্যামলিন এবং ক্যামেল ব্র্যান্ডও ধরে রাখে তারা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ‘কোকুয়ো ক্যামলিন’ গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান ইমেরিটাসের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।