AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

GST on Bidi: সিগারেটে দাম বাড়ছে, বিড়ির দাম কমছে কেন? কী ব্য়াখ্যা?

GST cut on Bidi: জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে উঠে এসেছে, কৃষিজাত পণ্যের ক্ষেত্রে জিএসটি কমানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও সেই যুক্তি খাটে। টেন্ডু পাতা এ ক্ষেত্রে সেই কৃষিজাত পণ্য। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, অসমের মতো রাজ্যে এই ধরনের পাতা প্রচুর উৎপন্ন হয়। তাহলে সেই পাতা যারা কেনেন, তাঁদেরও কিছুটা সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

GST on Bidi: সিগারেটে দাম বাড়ছে, বিড়ির দাম কমছে কেন? কী ব্য়াখ্যা?
Image Credit: Getty Image
| Updated on: Sep 05, 2025 | 2:12 PM
Share

নয়া দিল্লি: নতুন জিএসটি ব্যবস্থায় আরও দামি হচ্ছে সিগারেট। তবে এটা নতুন কিছু নয়। অনেক সময়েই বাজেটেও সিগারেটের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, এবার ব্যাপারটা একটু আলাদা। কারণ, জিএসটি-র এই পরিমার্জনের ফলে সিগারেটের দাম বাড়লেও, সস্তা হয়েছে বিড়ি! ব্যাপারটা কি সত্যিই তাই? যদি হয়েও থাকে তাহলে এর পিছনে আসল কারণটা কী?

বুধবার জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, জিএসটি-র স্ল্যাবে বদল আনা হয়েছে। শুধুমাত্র ১৮ শতাংশ আর ৫ শতাংশের দুটো স্ল্যাব থাকছে। সেই সঙ্গে একগুচ্ছ প্রোডাক্টে জিএসটি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তেল, সাবান থেকে টিভি -এসি – যে সব জিনিসে জিএসটি কমেছে, তা সাধারণের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য যথেষ্ট।

সব শেষে অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ৪০ শতাংশ কর বসানো হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে, সিগারেট, তামাক, তামাকজাত দ্রব্য, জর্দা ইত্যাদি।

যে সব মানুষ নিজের প্রিয়জনকে ধূমপান ছাড়ার অনুরোধ করে থাকেন, তাঁরা এই ঘোষণায় মনে মনে কিছুটা খুশিই হয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে যা হয়েছে, তা একযাত্রায় পৃথক ফল। বিড়ির দাম বাড়ল না, অথচ সিগারেটে বাড়ল।

এখানেই আছে একটা অঙ্ক। অর্থমন্ত্রী যখন লিস্টটা পড়ছিলেন, তখন তাতে সিগারেটের পাশাপাশি বিড়ির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ সেই হিসেবে বিড়ির ক্ষেত্রেও জিএসটি ধার্য হচ্ছে ৪০ শতাংশ। কিন্তু প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো-তে যে লিস্ট দেখা যাচ্ছে, সেখানে স্পষ্ট, বিড়ির ক্ষেত্রে জিএসটি ২৮ থেকে কমে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিড়ি বানাতে গেলে যে পাতায় তামাক মোড়া হয়, সেই পাতার ক্ষেত্রেও জিএসটি কমে ১৮ থেকে ৫ শতাংশ হয়েছে। টেন্ডু পাতা বা কেন্দু পাতায় মোড়া হয় বিড়ি। অর্থাৎ এই তালিকার হিসেব বলছে, সার্বিকভাবে বিড়ির দাম কমে যাবে।

সরকারের ব্যাখ্যা হল, এই ৪০ শতাংশ জিএসটি আসলে যে সব জিনিসের উপর বসতে চলেছে, সেগুলিকে কেন্দ্র বলছে সিন গুডস (Sin Goods)। শুধু তামাকজাত দ্রব্য নয়, এর মধ্যে রয়েছে অ্যালকোহল, কোল্ড ড্রিংক, মিষ্টিযুক্ত খাবার, কফি সমৃদ্ধ ড্রিংকস ইত্যাদি। অর্থাৎ মোটের উপর ডাক্তাররা স্বাস্থ্যের কথা ভেবে যে সব জিনিস খেতে নিষেধ করে থাকেন, সেগুলির ক্ষেত্রেই এই সিন ট্যাক্স বসানো হচ্ছে। সরকারের বার্তাটা অনেকটা এরকম যে- এই সব পণ্যের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে এভাবে সতর্কও করা হচ্ছে।

তাহলে বিড়ি কেন সেই তালিকায় নেই? প্রশ্ন উঠবেই। বিড়ির ভিতরেও তো তামাক আছে! সিগারেটের থেকে কিছু কম ক্ষতি হয়, এমন কোনও বৈজ্ঞানিক তত্ত্বও নেই। এ ক্ষেত্রে সরকারের তরফে কোনও ব্যাখ্যা নেই। তবে কিছু কিছু যুক্তি এ ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথম কথা হল, বিড়ি কারা খায়? সাধারণত উচ্চবিত্ত মানুষদের হাতে বিড়ি থাকে না। তাই দাম কমলে নিম্নবিত্ত মানুষের কিছুটা সুবিধা হবে, এটা ধরে নেওয়াই যায়। কেউ কেউ আবার বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন।

যদি সেটাই ধরে নেওয়া হয়, তাহলে পশ্চিমবঙ্গের ভোটই বা বাদ যায় কেন! মুর্শিদাবাদের বিড়ি ইন্ডাস্ট্রির কথা সবারই জানা। শুধু মুর্শিদাবাদ কেন! বাংলার একাধিক জায়গায় ক্ষুদ্র শিল্পের মধ্যে পড়ে এই বিড়ি শিল্প। অনেকেই বাড়িতে বসে বিড়ি বেঁধে অর্থাৎ মশলা পাতার ভিতর মুড়ে বাঁধার কাজ করে রোজগার করেন। ফলে, সেই বিড়ির বিক্রিবাটা বাড়লে তো ওই মানুষদেরও লাভ। তথ্য় বলছে, সারা দেশে অন্তত ৭০ লক্ষ মানুষ কোনও না কোনও ভাবে এই বিড়ি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত। বহু মহিলা এই কাজ করে আয় করেন।

আর একটা যুক্তিও অগ্রাহ্য নয়। জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে উঠে এসেছে, কৃষিজাত পণ্যের ক্ষেত্রে জিএসটি কমানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও সেই যুক্তি খাটে। টেন্ডু পাতা এ ক্ষেত্রে সেই কৃষিজাত পণ্য। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, অসমের মতো রাজ্যে এই ধরনের পাতা প্রচুর উৎপন্ন হয়। তাহলে সেই পাতা যারা কেনেন, তাঁদেরও কিছুটা সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া, এই বিড়ির ট্যাক্স নিয়ে বারবার সরব হয়েছে আরএসএসের অন্যতম সংগঠন স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ। তাদের বরাবরই একটাই বক্তব্য, বিড়িতে ট্যাক্স বাড়ানো হলে, ওই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেক মানুষ কাজ হারাবে। ২৮ শতাংশ জিএসটি কমান, এই মর্মে কেন্দ্রকে চিঠিও দিয়েছে ওই সংগঠন। এই সিদ্ধান্তের পিছনে কি সেই চিঠির কথাও মাথায় রাখা হয়েছে? প্রশ্নটা থাকছেই।