‘আমি স্ট্রিট ফাইটার, ভাঙি তবু মচকাই না’, বাঘমুণ্ডির সভা থেকে মমতা
এই প্রথমবার বসে বক্তব্য রাখছেন মমতা (Mamata Banerjee)। যদিও তিনি বার্তা দিয়ে রেখেছেন, 'হুইল চেয়ারে বসেই বাংলা জয় হবে।'
পুরুলিয়া: হুইল চেয়ারে জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার পুরুলিয়ার সভায় এ এক অচেনা ছবি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা মানেই, মঞ্চ জুড়ে মুখ্যমন্ত্রীর হাঁটা, উদ্ধত তর্জনী। এই প্রথমবার বসে বক্তব্য রাখলেন মমতা। যদিও তাঁর বার্তা, ‘হুইল চেয়ারে বসেই বাংলা জয় হবে।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি স্ট্রিট ফাইটার। বহু বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও তিনি রাস্তায় নেমে লড়াই করতে জানেন। তাই পা ভাঙা পায়েই খেলা হবে, হুঁশিয়ারি তৃণমূল সুপ্রিমোর।
LIVE NEWS & UPDATES
-
‘এদের রথযাত্রায় বিজেপি নেতা বসে থাকে, খাচ্ছে, দাচ্ছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে’
রেল, সেল, কোল, বিএসএনএল সব বিক্রি করে দিচ্ছে। সব প্রাইভেটাইজেশন হচ্ছে। কোথায় যাবেন, সব বন্ধ হয়ে গেলে? আপনারা জোট বাঁধুন, তৈরি হন। এরা সর্বনাশা, বিনাশের সরকার। রথযাত্রা করবে। এদের রথযাত্রায় বিজেপি নেতা বসে থাকে। খাচ্ছে, দাচ্ছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে। সব জগন্নাথ মনে করছে নিজেকে। বিজেপি বাংলার কুৎসা করছে। কারও একজনের বাড়িতে খেয়ে বলবে তফশিলি বন্ধু। আগে তফশিলির হাতে রান্না করা খাবার খাও। হোটেল থেকে রান্না করা খাবার এনে তফশিলি বন্ধু। এই যে আমি থাকতে পারছি না, আমার সঙ্গে একটা বাউরি মেয়ে এসেছে। আমরা এক বিছানায় ঘুমাই। একসঙ্গে খাই। বিজেপি তিলক কেটে পান চিবোতে চিবোতে দেশটার সর্বনাশ করছে।
-
‘এমপি হয়ে ভরাডুবি, এবার এমএলএ হয়ে বাজাবে ডুগডুগি’
আদিবাসীদের জমি কাড়া যাবে না। এ আইন আমরা করেছি। কুর্মিদের জন্য বোর্ড তৈরি হয়েছি, আমি নিজে কুরমালি ভাষায় কবিতা লিখেছি। বাউড়ি, বাগদি, মতুয়া বোর্ড, তফশিলিদের জন্য অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল তৈরি করেছি। আমরা মেডিক্যাল কলেজ, কিষাণ মাণ্ডি, পলিটেকনিক কলেজ, আইটিআই করেছি। রঘুনাথ মুর্মুকে আমরা সম্মান জানাই। আজ পর্যন্ত দেখাক বিজেপি একটা কাজ করেছি। বাংলা থেকে ১৮ জন এমপি। কোনও কাজ নেই। এখন তাঁরা বিধানসভা ভোটে দাঁড়াচ্ছে। এমপি হয়ে ভরাডুবি, এমএলএ হয়ে বাজাবে ডুগডুগি। জিজ্ঞাসা করুন কী কী করবে আর?
-
-
‘আমি স্ট্রিট ফাইটার, ভাঙি তবু মচকাই না’
আমি গাড়ির পাদানিতে দাঁড়িয়ে মানুষকে নমস্কার করছিলাম। তখন আমার গাড়ির দরজা এমনভাবে চেপে দেওয়া হয় বড় চোট পাই। আমাকে চিকিৎসকরাও বলেছিলেন ১৫ দিন একদম উঠতে পারবেন না। আমি বললাম, আপনারা চিকিৎসাটা করে দিন। বাকি আমি ঠিক হুইল চেয়ারে মানুষের কাছে পৌঁছে যাব। আমায় হাজরায় মাথা ফাটানো হয়, দু’হাত ভাঙা নয়, অনেক মার খেয়ে এখানে এসেছি। অনেকে ভেবেছিল মমতা ভোটের সময় বেরোতে পারবে না। ডুগডুগি বাজিয়ে দেব। কিন্তু আমি ভাঙি তবু মচকাই না। যতক্ষণ পর্যন্ত শ্বাস থাকবে, কন্ঠ চলবে তা রোখার দুঃসাহস যেন কেউ না দেখায়। আমি রাস্তায় থেকেই লড়াই করি। আমি স্ট্রিট ফাইটার।
-
বলরামপুরে পৌঁছলেন মমতা
হুইল চেয়ারে বসেই বলরামপুরের মঞ্চে পৌঁছলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝালদায় সভা করার পর পৌনে তিনটে নাগাদ বলরামপুরে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। এখানেও মঞ্চের উপর হুইল চেয়ারে বসেই বক্তব্য রাখছেন তিনি।
-
‘বিজেপির ন্যাকা কান্নায় ভুলবেন না’
বিজেপির ন্য়াকা কান্নায় ভুলবেন না। ওরা ফাইভ স্টার হোটেল থেকে খাবার আনে, আর দেখায় গরীবদের ঘরে খাচ্ছে। ওসব ফাঁদে পা দেবেন না। আপনাদের একটাই মন্ত্র হোক, বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও। আর কংগ্রেসকে তো একটাও ভোট নয়। ওরা একটা সিট নিয়ে বিজেপির সঙ্গে দালালি করে। অথর্ব পাথর। নড়েও না চড়েও না। ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিন কংগ্রেসকে।
-
-
‘ভোটের সময় অভিমান করে ঘরে বসে থাকতে নেই’
আমি যদি ভাঙা পায়ে লড়ে যেতে পারি, মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে তবু লড়তে পারি তোমরাও পারবে। যুদ্ধের সময় অভিমান করে বসে থাকতে নেই। সবাই এগিয়ে এসো। কেউ কেউ ভেবেছিল আমি আর বেরোতে পারব না। এসেছি আমি। তোমরাও বেরিয়ে এসো। লড়াই কর।
-
‘বিজেপি একটা পার্টি খালি দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে’
আমরা উন্নয়ন করে যাচ্ছি, বিজেপি একটা পার্টি খালি দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। বিনা পয়সায় চাল পাচ্ছেন। অথচ তা রান্না করতে গিয়ে যা দাম গ্যাসের। উজালা এখন অধরা হয়ে পালিয়ে গিয়েছে। দু’ বছর আগে লোকসভায় বিজেপি তো পুরুলিয়ায় জিতল মিথ্যা বলে। ১৫ লক্ষ টাকা দেবে বলল। দিয়েছে? ভোটের সময় টাকা দিয়ে কিনতে চায়। মনুষ্যত্ব বিক্রি করবেন না। বিজেপি এত টাকা কোথা থেকে পাচ্ছে? সব বেচে দিচ্ছে। আমরা গরীব হতে পারি, মাথা নত করি না।
-
‘আমরাই সন্ত্রাসমুক্ত করেছি অযোধ্যাকে’
এক সময় অযোধ্যায় সন্ত্রাস ছিল। আমরা সে পরিস্থিতিতে বদল এনেছি। সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে অযোধ্যা। আগামী মে মাস থেকে বিধবাদের এক হাজার টাকা দেওয়া হবে। উন্নয়নের চূড়ান্ত কাজ করা হয়েছে। রেশন বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে বিনামূল্যে। খাদ্য, স্বাস্থ্য বিনা পয়সায় এই সরকার দিচ্ছে। আমি তো আগে এসে দেখেছি ভাঙা রাস্তা। এখন ঝাঁ চকচকে পথ। আমি খুব খুশি হই যদি বাঘমুণ্ডি, ঝালদা ভাল থাকে। আপনারা ভাল থাকলে আমি খুশি হই। সকলে যখন একসঙ্গে থাকে, কোনও ভাগাভাগি নেই তার থেকে ভাল আর কী হতে পারে। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, সাঁওতাল, কুম্ভকার, বাউড়ি সবাই আছেন এখানে।
-
আমার যন্ত্রণার থেকে মানুষের যন্ত্রণার দাম বেশি
ঝালদার জনসভায় উঠেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার শরীরে অনেক যন্ত্রণা রয়েছে ঠিকই। তবে আমার যন্ত্রণার থেকে মানুষের যন্ত্রণা অনেক বেশি। কপাল জোরে বেঁচে গিয়েছি।”
Published On - Mar 15,2021 4:16 PM