১৪ জুন, ২০২০। মুম্বইয়ে বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ। সুশান্ত মৃত্যু মামলা এখনও আদালতের আওতায়। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর নেপোটিজ়ম নিয়ে অনেক বেশি চর্চা হয়েছিল। এক বছর পর নেপোটিজ়ম এবং সুশান্তকে ফিরে দেখলেন অভিনেতা সৌরভ দাস।
অ্যান্টি নেপোটিজ়ম ডে। আজকের দিনটা অর্থাৎ ১৪ জুন আমার মনে হয় এটাই হওয়া উচিত। ঠিক এক বছর আগে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু হয়েছে। কী ঘটেছে, সেটা আমরা কেউ জানি না। তদন্ত চলছে। সেটা নিয়ে এখন কেউ কিছু বলবেন না। বলা উচিতও নয়। কিন্তু নেপোটিজ়ম বিষয়টা সুশান্তের মৃত্যুর পর অনেক বেশি চর্চায়। নেপোটিজ়ম আগেও ছিল, পরেও থাকবে। সব ইন্ডাস্ট্রিতেই রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে চর্চা গত এক বছরে অনেক বেশি হয়েছে।
যাঁরা সুশান্তের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের থেকে শুনেছি, হালকা হলেও এ সব নিয়ে কথা হত। হয়তো কখনও কোনও ক্ষেত্রে বলেছিল, ফেভারিটিজ়ম আছে বলেই অমুক লোক কাজটা পেল। আসলে সবাই তো ইনসিকিওরড।
নেপোটিজ়ম একটা ওপেন এন্ডেড বিষয়। আমি আজ লিখছি এ কথা। ভবিষ্যতে আমি হয়তো আরও নাম করলাম। আমার সন্তান হল। কেউ তাকে ছবিতে নিতে চাইল। আমি তো তখন ‘না’ বলব না।
তবে সুশান্তের সঙ্গে আমি রিলেট করতে পারি। আমি যখন অভিনয় করতে শুরু করলাম, তখন প্রথমে একটা ডায়লগ বলতে দেওয়া হত। সেখান থেকে আজ আমার নামে একটা সিরিজ হচ্ছে, ফিল করতে পারি জার্নিটা। আমার আর সুশান্তের জন্মদিনও এক। ২১ জানুয়ারি। এটা অবশ্য বাচ্চাদের মতো ব্যাপার। কিন্তু ‘পবিত্র রিস্তা’র সময় থেকেই ওকে ফলো করতাম। ওকে প্রমিসিং লাগত। যেমন দীপিকা পাড়ুকোনকে স্কুলে যেতে-যেতে হোর্ডিংয়ে দেখতাম। এই মেয়েটা কে, মনে হত নাম করবে একদিন। আমি সুশান্তের বিশাল বড় ফ্যান, তেমন নয়। সবাই মারা যাওয়ার পর ওকে লেজেন্ড বলছে। কিন্তু ছেলেটা বেঁচে থাকতে ভালবাসলে হয়তো এই ঘটনা হত না। আমি দেখেছিলাম, সুশান্ত ইন্ডিভিজ্যুয়ালি ফ্যানদের অ্যাড্রেস করত। আমিও চেষ্টা করি।
নেপোটিজ়ম তো সব ইন্ডাস্ট্রিতেই রয়েছে। টলিউডও ব্যতিক্রম নয়। আমার সঙ্গেও ঘটেছে শুরুর দিকে। তখন সিরিয়াল করতাম। একটা সিনেমা করার কথা হয়েছিল। সাউথের ছবির রিমেক। অডিশন দিয়েছিলাম। ভাল অডিশন হয়েছিল। আমার মনে আছে, ওই প্রজেক্টের ইপি (এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার) আলাদা করে ফোন করে বলেছিল, ‘ভাল হয়েছে’। একদিন হাউজে ডেকে পেন ড্রাইভ হাতে দেওয়া হল। বলা হল, ‘এটা দেখে নিস, এটাই হবে’। তারপর দেখি আর ফোন আসে না। আমি কিছুদিন পর ফোন করলাম। তখন আমাকে বলা হল, ‘আসলে পরিচালকের ওমুককে খুব ভাল লাগে। বুঝতেই পারিস…’। সেই একবারই মনে হয়েছিল, ইশশশ… আমার বাবা যদি এই ইন্ডাস্ট্রিতে কিছু একটা করত, আমিও সুযোগ পেতাম। তারপর থেকে আর কখনও কিছু হয়নি। এখানে হালকা নেপোটিজ়ম আছে। অত কিছু নয়। হয়তো সময় লাগবে, কিন্তু ট্যালেন্ট থাকলে কাজ পাওয়া যাবে।
সুশান্ত আমার কাছে ইন্সপিরেশন। যেমন শাহরুখ খান। কোথা থেকে কোথায় পৌঁছেছে লোকটা। তেমনই সুশান্তের জার্নিটা ইন্সপায়ার করে। আমার নিজের জার্নির সঙ্গে মেলাতে পারি। সিরিয়াল থেকে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ… সুশান্তের কেরিয়ারটাও ছোট থেকে শুরু হয়ে অনেক দূর গিয়েছিল। আর ওর কাজ দেখা যাবে না, সেটা দুর্ভাগ্যের।
অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ।
আরও পড়ুন, সুশান্তের ব্যক্তিজীবন নিয়েও তো বহু চর্চা হয়েছে… কিন্তু সত্যিটা তো জানা যাবে না: সন্দীপ্তা সেন
আরও পড়ুন, ফিরে দেখা: কত কোটি টাকার সম্পত্তি ছিল সুশান্তের?
আরও পড়ুন, সুশান্ত সিং রাজপুতকে খোলা চিঠি লিখলেন তাঁর সহ-অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়
আরও পড়ুন সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যুবার্ষিকী—ফিরে দেখা
আরও পড়ুন SSR Case: কী কী ঘটল এক বছরে, কোথায় দাঁড়িয়ে মামলা, সুশান্তের মৃত্যুবার্ষিকীতে ফিরে দেখা ঘটনাপ্রবাহ
আরও পড়ুন, ‘রিয়া কী করতে চান, কী করতে চান না—তা তিনিই নির্ধারণ করবেন, সমাজ অথবা পুরুষ নয়’