AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Soumitra-Poulami: ‘‘কাজ করে বাপিকে ট্রিবিউট দিচ্ছি, এটাই তিনি চাইতেন’’: পৌলমী

এক রবিবার চলে গিয়েছিলেন সৌমিত্র। বছর ঘুরতেই আর এক রবিবারকেই কর্মমুখর করে তুললেন মেয়ে পৌলমী। ঠিক যে কর্মমুখরতা ভালবাসতেন সৌমিত্র। আজ ১৪ নভেম্বর, সৌমিত্রর মৃত্যুবার্ষিকীর ঠিক একদিন আগেই অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে মঞ্চস্থ হতে চলেছে তাঁর লেখা দু’টি নাটক: একটি নতুন, অন্যটি পুরনো। TV9 বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে পৌলমী জানালেন বাবার দেখানো পথেই রয়েছেন তিনি।

Soumitra-Poulami: ‘‘কাজ করে বাপিকে ট্রিবিউট দিচ্ছি, এটাই তিনি চাইতেন’’: পৌলমী
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও পৌলমী বসু
| Updated on: Nov 14, 2021 | 12:53 PM
Share

‘বাপি’ (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) অন্তঃপ্রাণ মেয়েটি। সেই ছোট থেকেই বাবা-মায়ের পায়ে-পায়ে ঘুরতেন পৌলমী বসু। ঠিক একবছর আগে বাবাকে হারিয়ে এক্কেবারে ভেঙে পড়েছিলেন। কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে দীর্ঘ ৪৫ দিন একটানা লড়াই করেছিলেন তাঁর বাবা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর সেই লড়াইয়ের ইতি। বাবা—বলা ভাল—জীবনের সবচেয়ে কাছের বন্ধুকে হারালেন পৌলমী। বাংলা তথা গোটা বিশ্ব হারাল এক বিদগ্ধ শিল্পী তথা এক দিকপালকে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় চলে গেলেন।

দিনটা ছিল রবিবারের দুপুর। টেলিভিশনের পর্দায় রঙিন লেখা হঠাৎই সাদা-কালো হয়ে যায়। বড়বড় হরফে ফ্ল্যাশ হতে থাকে ‘প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়’। একবছর কেমনভাবে কাটাল ‘অপু’বিহীন গল্ফ গ্রিনের সাদা বাড়িটা? সৌমিত্রর মৃত্যুর মাস পাঁচেক পর চলে গিয়েছিলেন স্ত্রী দীপা চট্টোপাধ্যায়ও। তখন পৌলমী সম্পূর্ণ একা। কিন্তু তাঁর বাবা-মা সবসময়ই বলেছেন এগিয়ে যেতে। কাজ থামালে চলবে না। তিনিও তাই-ই থেমে নেই। এক রবিবার চলে গিয়েছিলেন সৌমিত্র। বছর ঘুরতেই আর এক রবিবারকেই কর্মমুখর করে তুললেন পৌলমী। ঠিক যে কর্মমুখরতা ভালবাসতেন পৌলমীর জীবনের সবচেয়ে কাছের বন্ধু সৌমিত্র। আজ ১৪ নভেম্বর, সৌমিত্রর মৃত্যুবার্ষিকীর ঠিক একদিন আগেই অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে মঞ্চস্থ হতে চলেছে তাঁর লেখা দু’টি নাটক: একটি নতুন, অন্যটি পুরনো। TV9 বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে পৌলমী জানালেন বাবার দেখানো পথেই রয়েছেন তিনি।

মা (দীপা চট্টোপাধ্যায়) ও বাবার (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে পৌলমী

প্রশ্ন: আজ দু’টো নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। দু’টোই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা… উত্তর: হ্যাঁ, আজ অ্যাকাডেমিতে দু’টো নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। একটা নতুন, একটা পুরনো। পুরনো নাটকটির নাম ‘দুটি কাপুরুষের কথা’। নতুন নাটকটি ‘টাইপিস্ট’। দু’টো নাটকই আমার পরিচালনায় হচ্ছে। লিখেছিলেন বাবা (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়)।

মেকআপ রুমে মেয়ে পৌলমীর সঙ্গে সৌমিত্র

প্রশ্ন: করোনার প্রথম ঢেউয়ের পর আপনাদের নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর এই প্রথম… উত্তর: হ্যাঁ, একেবারেই। ২০২১ সালের মার্চ মাসে ‘মুখোমুখি’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। তারপর দ্বিতীয় ঢেউয়ে সব বন্ধ হয়ে যায়। এতগুলো মাস কেটে গিয়েছে। আমরা নাটক করতে পারিনি। এবার করছি। বাবা নেই। তা-ও করছি।

প্রশ্ন: সৌমিত্রবাবু তো নাটকের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকতেন। উনি এখন থেকেও নেই আমাদের মাঝে। এই শূন্যতা কাটিয়ে কীভাবে কাজ করছেন? উত্তর: এই কারণেই কিন্তু আমরা আরও বেশি করে এই নাটকটা করছি। উনি বারবার চাইতেন, কাজ না-করে আমরা যেন বসে না-থাকি। এটা বাপির ভীষণ অপছন্দ ছিল। সবসময় বলেছেন, বি পজ়িটিভ। এগিয়ে যাও, লাইফ গোজ় অন। জীবনকে আলিঙ্গন করো। জীবনের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না। সেই জন্য জীবনের থেকে মুখ না-ফিরিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বাপিকে আমরা কাজের মধ্যে দিয়েই সবচেয়ে বড় ট্রিবিউট দিতে চাই। বাপি কাজ পাগল মানুষ ছিলেন। এবং কোনওদিন চাননি কাজ না করে বসে থাকতে। যে কারণে বাপির লকডাউনে ভীষণ অসুবিধে হয়েছিল। ওঁর কাছে কাজটাই ছিল সব। কাজই ছিল ধর্ম ও জ্ঞান। এবং সেটাই তিনি আমাকে যেহেতু শিখিয়েছেন, আমার মনে হয়েছে নতুন কাজ করে এভাবেই আমি বাপিকে ট্রিবিউট দিতে পারি।

স্ত্রী দীপা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

প্রশ্ন: এই যে কথাগুলো আপনি বললেন, এক দিকে শূন্যতা থাকলেও, বাবার থেকে পাওয়া এই শিক্ষা কোথাও গিয়ে কি আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে? উত্তর: বাবাই আমাকে শিখিয়েছেন, এগিয়ে যেতে হবে। জীবনকে ফেস করতে হবে। এটা আমি বাবার কাছ থেকেই শিখেছি। আমার আত্মবিশ্বাস বরাবরই ছিল। সেটা নিয়ে কোনওদিনও কোনও প্রশ্নচিহ্ন ছিল না। আজও নেই। এই আত্মবিশ্বাস বাবা-মায়ের থেকেই শেখা।

প্রশ্ন: সৌমিত্রবাবুর বেশ কিছু অভিনীত ছবি তৈরি হয়ে রয়েছে। সেগুলো এখনও মুক্তি পায়নি। আবার তাঁর চলে যাওয়ার পর অনেক ছবি তৈরিও হয়েছে। কোথাও গিয়ে তিনি আছেন। আবার নেইও। মেয়ে হিসেবে কীভাবে আপনি বিষয়টা দেখেন…? উত্তর: দেখুন, এটা কিন্তু জীবনের নিয়ম। এটা মেনে নিতে হবে। মানুষ চলে যাবেনই। কিছু করার নেই।

ছোটবেলায় বাপির (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে পৌলমী

প্রশ্ন: সৌমিত্রবাবুর এত হাতে আঁকা, কবিতা… কী করবেন সেগুলো নিয়ে, কিছু ভাবলেন…? উত্তর: সেগুলো আমাদের আর্কাইভ করার কথা চলছে। ফাউন্ডেশনের কাজ চলছে। সেই ফাউন্ডেশনের মধ্যে বাপির ছবিও থাকবে।

মেকআপ রুমে সকলের সঙ্গে আড্ডায় মেতে সৌমিত্র-পৌলমী

প্রশ্ন: সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের শেষ শুটিং ভারতলক্ষ্মী স্টুডিয়োয়। সেই শুটিংয়ের সঙ্গী ছিলেন আপনি। আপনারই ব্রেইন-চাইল্ড ছিল। সেই শুটিংয়ে গিয়েওছিলাম। স্পষ্ট মনে আছে কতখানি প্রাণশক্তিতে ভরপুর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে দেখেছিলাম। তারপরই অসুস্থ হয়ে বেলভিউ-এ ভর্তি হলেন… আর ফিরলেন না। সেই শুটিং শেষ করেছিলেন বলেই আমরা জানি। সৌমিত্রবাবুর জীবনের নানা আঙ্গিক তুলে ধরা হয়েছিল। সন্দীপ রায় থেকে শুরু করে অতনু ঘোষ সকলেই তাঁকে নিয়ে কিছু বলতে এসেছিলেন। সেই কাজ কবে প্রকাশিত হচ্ছে? উত্তর: ওটার কাজ শেষের দিকে। সকলে মিলে ঠিক করব কবে রিলিজ হবে। 

আরও পড়ুন: Bidisha Chakraborty: পরিচালনায় ডেবিউ করছেন অভিনেতা বিপ্লবকেতন চক্রবর্তীর মেজো কন্যা বিদিশা