‘আদিরার জন্য স্তনদুগ্ধ পাম্প করে বেড়িয়ে পড়তাম শুটিংয়ে’, বললেন রানি
সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার ছবিতে আট ঘণ্টার ওয়ার্ক শিফটের দাবি করায় দীপিকা পাড়ুকোন ছবিটি ছেড়ে দিয়েছেন—এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। এবার এই ৮ ঘণ্টার শিফটের দাবি ঘিরে নিজের অভিজ্ঞতা ও মতামত প্রকাশ করলেন অভিনেত্রী রানি মুখোপাধ্যায়। যিনি কাজ ও মাতৃত্বের ভারসাম্য নিয়ে নিজের যাত্রাপথের কথা জানালেন।

সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার ছবিতে আট ঘণ্টার ওয়ার্ক শিফটের দাবি করায় দীপিকা পাড়ুকোন ছবিটি ছেড়ে দিয়েছেন—এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। এবার এই ৮ ঘণ্টার শিফটের দাবি ঘিরে নিজের অভিজ্ঞতা ও মতামত প্রকাশ করলেন অভিনেত্রী রানি মুখোপাধ্যায়। যিনি কাজ ও মাতৃত্বের ভারসাম্য নিয়ে নিজের যাত্রাপথের কথা জানালেন। অনেক বছর ধরে বলিউডে নিজের অবস্থান ধরে রাখা এবং অন্যতম প্রতিভাবান অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন রানি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “যখন আমি ‘হিচকি’ ছবিতে কাজ করছিলাম, তখন আমার মেয়ে আদিরা ছিল মাত্র ১৪ মাস বয়সী। আমি তখনও তাকে স্তন্যপান করাতাম, তাই সকালে দুধ পাম্প করে বের হতাম এবং শহরের একটি কলেজে শুটিং করতাম।”
জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই অভিনেত্রী ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে তাঁর শিডিউল মেয়ের প্রয়োজন অনুযায়ী সাজানো হতো। “আমার বাড়ি জুহুতে, সেখান থেকে লোকেশনে পৌঁছাতে প্রায় দুই ঘণ্টা লাগে। আমি সকাল ৬:৩০-এ স্তনদুগ্ধ পাম্প করে বেরিয়ে পড়তাম, সকাল ৮টার সময় আমার প্রথম শট হতো এবং দুপুর ১২:৩০ থেকে ১টার মধ্যে শুটিং শেষ করতাম। আমার ইউনিট এবং ডিরেক্টর এতটাই পরিকল্পনা করে কাজ করতেন যে, ৬-৭ ঘণ্টার মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যেত। শহরের ট্র্যাফিক বাড়ার আগেই আমি ৩টার মধ্যে বাড়ি ফিরে আসতাম। আমি এভাবেই পুরো ছবির কাজ শেষ করি,” রানি বলেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, নমনীয় সময়সূচি সব সময়ই পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে হয়ে থাকে। “আজকাল এই বিষয়গুলো নিয়ে বেশি কথা হচ্ছে কারণ এখন এগুলো নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু সব পেশাতেই এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। আমি নিজেও এমনভাবে কাজ করেছি যেখানে নির্দিষ্ট কিছু ঘণ্টা কাজ করেছি। যদি প্রযোজক রাজি থাকেন, তা হলে ছবিটা করা যায়। আর যদি না থাকেন, তা হলে ছবিটা না করাটাই ভালো। এটা একটা পছন্দের ব্যাপার। কেউ কাউকে কিছু জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছেন না,”বক্তব্য রানির। ‘গুলাম’ খ্যাত এই অভিনেত্রী আরও বলেন, তিনি সন্তানের যত্ন নেওয়ার জন্য কিছুটা সময় চলচ্চিত্র থেকে বিরতি নিয়েছিলেন। পাশাপাশি, তিনি এটাও তুলে ধরেন যে, নারী অভিনেত্রীদের সব সময় কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হয়, যেখানে পুরুষদের সেই চাপ থাকে না।
“পুরুষদের শারীরিক কোনও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয় না। তার উপর, আমি মনে করি, আমরা মা হওয়ার সময় শারীরিক এবং মানসিক উভয় রকম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাই। আর আমি একজন নারী হতে পেরে খুবই গর্বিত। মা হওয়ার অভিজ্ঞতা এতটাই অসাধারণ, যেটা পুরুষেরা কখনও অনুভব করতে পারবেন না। আমরা তখন ঈশ্বরের সবচেয়ে কাছাকাছি চলে যাই, কারণ আমরা একটি জীবন সৃষ্টি করি। ঈশ্বর যেমন জীবন সৃষ্টি করেন, মা-ও তাই করেন। গর্ভাবস্থার সেই নয় মাসে মা হয়ে ওঠেন ঈশ্বরের মতো, কারণ তার শরীরেই একটি নতুন প্রাণ গঠিত হয়। এই অভিজ্ঞতাটা পুরুষরা কখনও বুঝবে না। আমি তাঁদের জন্য দুঃখই পাই।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এমনও মনে হয় যে ঈশ্বর আমাদের উপর সন্তানের জন্মদানের দায়িত্ব দিয়েছেন। ভাবুন তো, যদি পুরুষদের গর্ভধারণ করতে হতো, তা হলে ওরা পুরো দুনিয়াকে পাগল করে দিত। এখন ওদের হাতে অনেক সময় আছে, তাই ওরা যুদ্ধ করছে। যদি ওদের সন্তান ধারণ করতে হতো, তা হলে হয়তো এই পৃথিবীতে আর কোনও যুদ্ধই থাকত না। ওরা ব্যস্ত থাকত শুধু বাচ্চা জন্ম দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে!”
