Durga Puja 2021: আমাদের বাড়িতে পুজো হয়, মা দুর্গা স্বপ্নে পাওয়া ঠাকুর: অন্বেষা হাজরা
Durga Puja 2021: পুজো এমন একটা সময় সব আত্মীয় স্বজন গ্রামের বাড়িতে আসেন। সকলের সঙ্গে দেখা হয় বছরের এই সময়টাতেই। তাই কলকাতায় থাকিনি কোনওবার।
দুর্গা পুজোতে আমি কোনও বারই কলকাতায় থাকি না। আমাদের বাড়িতে পুজো হয়। সেখানেই হইহই করে কেটে যায় পুজোর কয়েকটা দিন। বর্ধমানের মেমরিতে আমাদের বাড়ি। কিন্তু পুজো মেমরির বাড়িতে হয় না। পুজো হয় আমাদের গ্রামের বাড়িতে। মেমরি থেকে আর একটু ভিতরের দিকে যেতে হয়। ধানখেরু গ্রাম। এক সময় ওখানকার জমিদারি ছিল আমাদের। অনেক পুরনো বাড়ি। প্রায় ২০০ বছরের পুজো। মেমরির বাড়িটাও ২০০ বছরের পুরনো। কিন্তু গ্রামের বাড়ি আরও পুরনো।
পুজো এমন একটা সময় সব আত্মীয় স্বজন গ্রামের বাড়িতে আসেন। সকলের সঙ্গে দেখা হয় বছরের এই সময়টাতেই। তাই কলকাতায় থাকিনি কোনওবার। এ বারও শুটিং শেষ হলেই গ্রামে চলে যাব। এ বছর বাইরে যাঁরা থাকেন, কতটা আসতে পারবেন জানি না। করোনা পরিস্থিতিতে হয়তো সকলের আসা সম্ভব হবে না। তবুও যাঁরা আসতে পারবেন, তাঁদের নিয়েই পুজো হবে। খুব আনন্দ করে কাটে আমাদের পুজো।
গ্রামের বাড়িতে আমাদের দুর্গা দালান আছে। একই দালানে লক্ষ্মী পুজোও হয়। আমরা পুজোর আগে গ্রামে চলে যাই। লক্ষ্মী পুজোর পর আবার মেমরির বাড়িতে ফিরি। বাবা নবমীর দিন যায় গ্রামের বাড়িতে। আবার হয়তো চলে আসে। বাড়ির সকলেই চলে যাই গ্রামে। বাবা শুধু মেমরিতে থেকে যায়। বাবার আসলে ব্যবসা। ফলে কাজ থাকে। সব দিক মেমরিতে থেকে বাবা একা সামলায়। পুজোর কয়েকদিন ঠাকুর দিয়ে রান্না করানো হয়। ভোগ নিবেদন হয়। দারুণ ব্যাপার।
আমাদের বাড়ির মা দুর্গা স্বপ্নে পাওয়া ঠাকুর। দাদুর বড়পিসির তখন পাঁচ বছর বয়স। সেই পাঁচ বছরের ছোট্ট মেয়ে একদিন ঘুম থেকে উঠে বলে দিয়েছিল, কী ভাবে দুর্গা পুজো করতে হবে। পাঁচ বছর বয়সের একটা মেয়ের পক্ষে দুর্গা পুজোর সব নিয়ম জানা তো সম্ভব নয়। আমি এখনও এই ২৫ বছর বয়সে এসেও জানি না দুর্গা পুজোয় কী জোগাড় লাগে। সে স্বপ্ন দেখেছিল। তখন থেকেই আমাদের বাড়ির পুজো চালু হয়।
আমাদের বাড়ির ৪০০ বছরের প্রাচীন ইতিহাস। গোপাল ঠাকুর আছেন। সে ইতিহাস সবটা আমি জানিও না। আর আমার তো মনে হয়, সব ঠাকুরই সব সময় জাগ্রত। এটা বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে। এই যে কখনও কলকাতা থাকি না, কোনওদিন ইচ্ছেই হয়নি আমার, আফশোসও হয়নি কলকাতার পুজো নিয়ে। বাড়িতে এত মজা হয়…। জেঠু, জেঠিমা, ঠাকুমা, বাবা, মা, আমি। দাদু চলে গিয়েছেন ২০১৭-এ।
আমার কলকাতার বন্ধুরা কেউ এখনও আমার বাড়ির পুজোতে যাওয়ার সুযোগ পায়নি। আসলে সারা বছর ধরে কাজ করার পর কেউ হয়তো বেড়াতে চলে গেল এই সময়টা। সব মিলিয়ে যাওয়া হয়ে ওঠে না বন্ধুদের। তবে কেউ যদি যায় আমার ভালই লাগবে।
এই বছরের পুজোতে আমি নিজের জন্য কিছু কিনিনি। মা দুটো শাড়ি দিয়েছে। শ্রুতির (অভিনেত্রী শ্রুতি দাস) মা একটা জামা দিয়েছে। আমি কারও জন্য কিছু কেনার একেবারে সময় পাইনি। আসলে পুজোতেই উপহার দিতে হবে, এটাতে বিশ্বাসী নই। উপহার যে কোনও সময় দেওয়া যায়। সারা বছর ইন্ডিয়ান, ওয়েস্টার্ন সব রকম পোশাক পরি আমি। তবে লম্বা ঘেরওয়ালা জামা পরতেই আমি ভালবাসি। শাড়ি পরতেও ভাল লাগে। আর বাড়ির পুজোতে শাড়ি পরেই কেটে যায়। আমার ওটাই ভাল লাগে।
আরও পড়ুন, Riddhi Bandyopadhyay: মাকে ছাড়া মন খারাপের পুজো ঋদ্ধির, তার মধ্যেই মুক্তি পেল নতুন গান
আরও পড়ুন, Durga Puja 2021: বাড়ির সবাই এক জায়গায় হলেই হইহই করে পুজো কেটে যায়: পূজারিনি ঘোষ