‘মিডলাইফ ক্রাইসিসের ফ্রাস্ট্রেশন’, রিমঝিমের কটাক্ষের উত্তরে মুখ খুললেন শ্রীলেখা

Sreelekha Mitra: ঘটনা পরম্পরা নতুন নয়। বরং তার শেষতম সংযোজন হয়েছে গত মঙ্গলবার রাতে। ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট করেন রিমঝিম। কটাক্ষের তির শ্রীলেখার দিকেই।

‘মিডলাইফ ক্রাইসিসের ফ্রাস্ট্রেশন’, রিমঝিমের কটাক্ষের উত্তরে মুখ খুললেন শ্রীলেখা
শ্রীলেখা এবং মিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 28, 2021 | 5:45 PM

দুই ‘মিত্র’র মিত্রতা নয়। বরং সোশ্যাল ওয়ালে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগারই গত কয়েকদিন ধরে দেখছেন দর্শক। দুই ‘মিত্র’ হলেন টলিউডের দুই অভিনেত্রী। রিমঝিম মিত্র এবং শ্রীলেখা মিত্র।

ঘটনা পরম্পরা নতুন নয়। বরং তার শেষতম সংযোজন হয়েছে গত মঙ্গলবার রাতে। ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট করেন রিমঝিম। কটাক্ষের তির শ্রীলেখার দিকেই। রিমঝিম দু’টি স্ক্রিনশট তাঁর লেখার সঙ্গে শেয়ার করেছেন। একটি স্ক্রিনশটে শ্রীলেখার নিজেকে নিয়ে লেখা একটি খবর। আর অন্যটিতে শ্রীলেখাকে নিয়ে প্রকাশিত একটি খবর। ঠিক কী লিখেছেন রিমঝিম?

‘মিড লাইফ ক্রাইসিস সত্যি মানুষকে এতটা ফ্রাস্ট্রেটেড করে দেয় জানা ছিল না। ইগনোরেন্স ইজ ব্লিস ইজ হোয়াট আই হ্যাভ অলওয়েজ বিলিভড ইন। তাই যে যা খুশি বলুক গায়ে মাখি না, কারণ আমার বেসিক্যালি কিছু এসে যায় না এই সব পাবলিকদের কথায়। একটু ফুটেজের জন্য আউট অব কনটেক্সট কথা কোট করা পাবলিকদের কষ্টটা বুঝি। এই পোস্টের উদ্দেশ্য হল অনুভূতিতে বিশাল আঘাত পাওয়া মরাল মাসি/মেসোদের একি পদস্খলন! নাকি ওনাদের অঙ্গুলির ছোঁয়ায় স্ল্যাঙ্গও আজ পবিত্র? লিখেছেন রিমঝিম। শ্রীলেখাকে দিদিমণি সম্বোধন করে তাঁর কটাক্ষ, দিদিমণি(বৌদি বলিনি কিন্তু) যে ভাবে শয়নে স্বপনে এখনও আমায় দেখে চলেছেন আমি সেফ তো বন্ধুরা?’

শ্রীলেখা নিজের করা পোস্টে যে শব্দের ব্যবহার করেছেন, তা নিয়ে দৃশ্যতই আপত্তি রয়েছে রিমঝিমের। তিনি কটাক্ষের সুরে বলেছেন, ‘দিদি শেখালেন ইংরিজিতে বললেই শব্দ শুদ্ধ হয়ে যায়।’ তাঁর এই পোস্ট থেকে শ্রীলেখা আগামী কিছুদিনের ফুটেজ পেয়ে যেতে পারেন বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। পোস্টের একেবারে শেষে রিমঝিম লিখেছেন, ‘আশা করি বৌদি সরি, ডিডি আমার ওপর রাগ করবেন না, অন্তত এক দেড় মাসের ফুটেজ আমার সস থেকে খেয়ে নিতে পারবেন, কি ডিডি? তাই তো?’

হঠাৎ করেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই কটাক্ষ কেন? এর উত্তরে TV9 বাংলাকে রিমঝিম বললেন, “ইলেকশনের আগে দু’জন দুই পার্টির সমর্থক, সেখান থেকে শুরু হয়েছিল ব্যাপারটা। তারপর তো লোকে ভুলে যায়। কিন্তু উনি কিছুতেই মুভ অন করছেন না। যিনি ওঁকে যাই বলুক, উনি দেখি আমার নাম টেনে আনবেনই। আমাকে শ্রীলেখাদি ব্লক করে দিয়েছেন। আমি দেখতেও পাই না। কিন্তু পরে দেখছি, সব কিছুতেই আমার নাম লিখছেন।” রিমঝিমের আরও সংযোজন, “তাতে আমার কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু নোংরা গালাগালি ব্যবহার করেছেন, সেটা খারাপ লেগেছে। আমি তো ঝগড়া করতে যাবে না। আমি চাই লোকে দেখুক। ট্রোলকে কমব্যাট করতে নিজেও ট্রোল করব, অ্যাবিউসিভ ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করব, এটা তো ঠিক নয়। এটা অপমানজনক লেগেছে। শ্রীলেখাদির থেকে এক্সপেক্টটেড নয়।”

এখনও পর্যন্ত এই পোস্টের প্রকাশ্য কোনও উত্তর দেননি শ্রীলেখা। কিন্তু TV9 বাংলাকে তিনি বললেন, “আমি এই ধরনের কোনও পোস্ট দেখিনি, দেখতে চাইও না।‌ উইশ দেম অল দ্য ভেরি বেস্ট। সামনেই আমার ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। সেটা নিয়েই ব্যস্ত আমি। এখন শুধুই পজিটিভ ভাইবস। কোনও নেগেটিভ কথাকে আমি গুরুত্ব দিতে চাই না।” প্রসঙ্গত, আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্তের তৃতীয় ছবি, ‘ওয়ানস আপন এ টাইম ইন কলকাতা’ ৭৮ তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নিজের স্থান করে নিয়েছে। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন শ্রীলেখা মিত্র।

রিমঝিম নিজে কি মনে করেন, তিনিও এক সময় ট্রোল করেছিলেন? অভিনেত্রীর যুক্তি, “আমি ঠিক, ভুলের মধ্যে যাব না। ওটা অন্য কনটেক্সটের কথা। পুরনো কথা। আমি তো ধরে বসে থাকব না। শ্রীলেখাদি, আর ওর বন্ধুরা আমাকে নিয়ে যে নোংরা কথা বলেছিল, সেগুলো তো ধরে বসে নেই আমি। আমাকে নিয়ে সবথেকে বেশি নোংরা মিম তৈরি হয়েছিল। আর নোংরা গালাগালি দিয়েছেন বলেই আমি চেয়েছি বিষয়টা সকলে দেখুক।”

তবে শ্রীলেখা-রিমঝিম তরজার সাম্প্রতিকতম ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগে। নিজের গাওয়া একটি গানের ভিডিয়ো ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন শ্রীলেখা। সেই পোস্টে তাঁর বডি শেমিং করা হয়। পৌলমী বিনয় যোশী নামক এক ইনস্টা প্রোফাইল থেকে লেখা হয়, ‘স্ট্র্যাপটা খুলে ফেলো, আরও ভাল লাগবে, আরও ভাল বডি শো-অফ করবে’। সেই কমেন্টের উত্তর দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। তা নিয়েই একটি সংবাদ পরিবেশিত হয়। সেই সংবাদকে নিজের ওয়ালে জায়গা দেন শ্রীলেখা। কিন্তু তার ক্যাপশনে যা লেখেন, সেই শব্দচয়ন নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তি করেছেন রিমঝিম। জনৈক পৌলমী বিনয় যোশীকে উত্তর দিতে গিয়ে পরোক্ষ রিমঝিমকে কটাক্ষ করেছিলেন শ্রীলেখাও। তিনি ক্যাপশনে লেখেন, ‘একটি রিল পোস্ট করার পরে ইন্সটা মন্তব্য। মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাস্টার আমি নই, তবে বিশ্লেষণাত্মক মন রয়েছে তাই এই ধরণের নারীর প্রতি সহানুভূতি রয়েছে। এবং আপনারা ভাবেন পুরুষরাই এ সব করে!!! অন্য ‘মিত্র’র কথা ভুলে গিয়েছেন যে আমাকে বডি শেমিং এবং স্লাট শেমিং করেছিল। ওটা বিরক্তকর ছিল, এটা নয়।’

‘মিত্র’ বলতে শ্রীলেখা যে রিমঝিম মিত্রকে বোঝাতে চেয়েছেন তা কিন্তু স্পষ্ট। কারণ গত মে মাসে শ্রীলেখা, রিমঝিমের লেখা এক কমেন্টের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। সেখানে দেখা যায় যে জনৈক শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি পোস্টের কমেন্ট সেকশনে রিমঝিম মিত্র লিখেছেন, “থলথলে বৌদি আমায় ব্লকিয়েছে। কমরেট মাংস পিণ্ড কি এটা ঠিক করল আমার সঙ্গে?” এরপরেই প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর নামকে বিকৃত করে খানিক সারকাজমের সুরে রিমঝিম লিখেছিলেন, “মুদী মাস্ট রিজাইন”। সেই শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর পোস্টে লিখেছিলেন, ‘ওয়ান অ্যাডভার্টাইজমেন্ট ওয়ান্ডার বামপন্থী বৌদি অভিনেত্রী’…।

না! কমেন্টে রিমঝিম বা ওই ব্যক্তি শ্রীলেখার নাম নেননি। কিন্ত টিভিনাইন বাংলাকে শ্রীলেখা জানান, যে কেউ দেখলেই বুঝবে পোস্টটি তাঁর উদ্দেশ্যেই। ফের একদফা প্রকাশ্য মতবিরোধ স্পষ্ট। এর শেষ কোথায়, তা দেখার অপেক্ষায় দর্শক।

আরও পড়ুন, স্বস্তিকার ‘আনকাট ইভনিং’, লুকিয়ে ভিডিয়ো করলেন অন্য কেউ!