Uttam Kumar- Suchitra Sen: ‘উত্তমকে কমাতে বলুন, আমি পারিশ্রমিক কমাবো না!’ বিকাশ রায়কে কেন বলেছিলেন সুচিত্রা?
Suchitra Sen Refused to work in Bikash Roy Movie: সময়টা পাঁচের দশক। 'সূর্যমুখী' নামের একটি ছবি তৈরির পরিকল্পনা করছিলেন বিকাশ রায়। তাঁর ইচ্ছে ছিল সুচিত্রা সেন তাঁর এই ছবিতে নায়িকা হন। এবং পরিকল্পনা ছিল উত্তমই হবেন সেই ছবির নায়ক। এমনিতেই সুচিত্রা সেনের সঙ্গে সিনেমার বাইরে তাঁর গভীর বন্ধুত্ব ছিল।

বিকাশ রায় ছিলেন বাংলা সিনেমার ‘ডার্ক হর্স’ অভিনেতা। নায়কোচিত চেহারা না হলেও, সিনেমার পর্দায় তাঁর দাপুটে অভিনয় চ্য়ালেঞ্জ ছুড়ে দিত সেই সময়ের এক নম্বর নায়কদের। উত্তম কুমার হোক বা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সবার সঙ্গেই সিনে লড়াই চলত বিকাশ রায়ের। তবে শুধুই সিনেমায় অভিনয় নয়, সিনেমা পরিচালনা করেও তাক লাগিয়ে ছিলেন বিকাশ রায়। ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’, ‘সূর্যমুখী’, ‘বসন্ত বাহার’, ‘কেরি সাহাবের মুন্সি’, ‘রাজা সাজা’ ছবি গুলি যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। একদিকে দাপুটে অভিনেতা ও আরেক দিকে সফল সিনেপরিচালক,স্বাভাবিকভাবেই টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে বিকাশ রায়ের দাপট ছিল দেখার মতো। কিন্তু জানেন কি, সেই বিকাশ রায়ের ছবিতেই অভিনয় করতে রাজি হননি সুচিত্রা সেন। বিকাশের মুখের উপর ছবির অফার নাকচ করেছিলেন মহানায়িকা।
সময়টা পাঁচের দশক। ‘সূর্যমুখী’ নামের একটি ছবি তৈরির পরিকল্পনা করছিলেন বিকাশ রায়। তাঁর ইচ্ছে ছিল সুচিত্রা সেন তাঁর এই ছবিতে নায়িকা হন। এবং পরিকল্পনা ছিল উত্তমই হবেন সেই ছবির নায়ক। এমনিতেই সুচিত্রা সেনের সঙ্গে সিনেমার বাইরে তাঁর গভীর বন্ধুত্ব ছিল। সুযোগ পেলেই আড্ডা দিতেন দুজনে। উত্তমও ছিলেন তাঁর প্রিয় পাত্র। বিকাশ রায়ের বিশ্বাস ছিল, একবার বলাতেই হয়ত উত্তম-সুচিত্রা ছবিটি করতে রাজি হবেন। হয়তো বন্ধুত্বের কথা ভেবে তাঁদের পারিশ্রমিকেও ছাড় মিলবে। কিন্তু বিকাশের ভাবনায় জল ঢাললেন মহানায়িকা নিজেই।
ঠিক কী ঘটেছিল?
বিকাশ রায়ের সূর্যমুখী ছবির চিত্রনাট্য পড়ে বেশ পছন্দ হয় উত্তম কুমারের। এমনকী, তিনি ছবি করতে রাজিও হন। বিকাশ রায় যে পারিশ্রমিক দেওয়ার কথা উত্তমকে বলেছিলেন, তা নিয়েও মহানায়কের কোনওরকম আপত্তি ছিল না। কিন্তু এই পারিশ্রমিক নিয়েই বিকাশের সঙ্গে বচসা শুরু হয় সুচিত্রার। বিকাশের লেখা চিত্রনাট্য না পড়েই, সুচিত্রা সেন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি কম পারিশ্রমিকে ছবি করবেন না। বিকাশ তাঁকে অনুরোধ করাতেও রাজি হন না মহানায়িকা। উলটে তিনি বলেন, ”কোনওমতেই কম পারিশ্রমিকে কাজ নয়। বন্ধুত্বের জায়গাটা আলাদা। কাজের জায়গাটা আলাদা। যদি পারিশ্রমিক কমাতেই হয়, তাহলে উত্তমকে গিয়ে বলুন, আমি কিছুতেই পারিশ্রমিক কমাবো না!” বিকাশ রায় শুনেছিলেন পারিশ্রমিকের ব্যাপারে কোনও সমঝোতায় কখনও যান না সুচিত্রা। এমনকী, শুনেছিলেন ছবিতে যদি উত্তম থাকতেন, তাহলে সুচিত্রার নাকি বায়ানাক্কা দ্বিগুণ হয়ে যেত। যা রটে, তাঁর যে অনেকটাই বটে, এই ঘটনা থেকে সেদিন বুঝতে পেরেছিলেন বিকাশ।
সুচিত্রার এমন কথা শুনে সেদিন খুবই দুঃখ পেয়েছিলেন বিকাশ। সে কথা জানিয়ে ছিলেন উত্তমকেও। বিকাশের কাছে সব ঘটনা শুনে নিজেই ছবি থেকে সরে আসেন মহানায়ক। বিকাশ বুঝে যান, এই ছবি সুচিত্রা-উত্তমকে নিয়ে করা যাবে না। পরে সূর্যমুখী ছবিটি তৈরি হয় সন্ধ্য়ারাণী, অভি ভট্টাচার্যকে নিয়ে। এছাড়াও ছিলেন ছবি বিশ্বাস। এই ছবিতে খলনায়ক ছিলেন খোদ বিকাশ রায়। ছবিটি সুপারহিট হয়। সন্ধ্যারাণীর অভিনয় হয়েছিল প্রশংসিত। তবুও শেষ জীবন পর্যন্ত বিকাশ রায়ের আক্ষেপ ছিল, যদি উত্তম-সুচিত্রা ছবিটা করতেন, তাহলে হয়তো আরও ভাল হত।
