Suchitra Sen: সুচিত্রার কথায় বদলে গিয়েছিল ‘সপ্তপদী’র ক্লাইম্যাক্স! উত্তমকে নিয়ে কী চাল চেলেছিলেন ছিলেন মহানায়িকা?
Story about Suchitra-Uttam movie Saptapadi: পরিচালক অজয় করের এই ছবি তো এক পারফেক্ট লাভ স্টোরির উদাহরণ। আর বাঙালিদের কাছে এই ছবির 'এই পথ যদি না শেষ হয়', গান তো প্রেম ম্যাজিক। সুচিত্রার রিনা ব্রাউন এবং উত্তমের কৃষ্ণেন্দু চরিত্রকে টেক্কা দিতে পারে, এমন কোনও চরিত্র আজও তৈরি হয়নি।

১৯৬১ সালে মুক্তি পায় ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক মাইলস্টোন ছবি ‘সপ্তপদী’। উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত এই ছবি আজও সিনেপ্রেমীদের মনে নাড়া দেয়। পরিচালক অজয় করের এই ছবি তো এক পারফেক্ট লাভ স্টোরির উদাহরণ। আর বাঙালিদের কাছে এই ছবির ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’, গান তো প্রেম ম্যাজিক। সুচিত্রার রিনা ব্রাউন এবং উত্তমের কৃষ্ণেন্দু চরিত্রকে টেক্কা দিতে পারে, এমন কোনও চরিত্র আজও তৈরি হয়নি। আর তাই তো সপ্তপদী ইতিহাসের পাতায় এক আলাদা জায়গা করে নেয়। কিন্তু জানেন কি, প্রথমে এই ছবির ক্লাইম্যাক্স ছিল একেবারে অন্যরকম। সুচিত্রার কথাতেই পরিচালক একেবারে বদলে ফেলেছিলেন এই ছবির শেষ।
সেই সময়ের গসিপ ম্যাগাজিনে ঝড় তুলেছিল সপ্তপদীর এই ক্লাইম্য়াক্স বদলের গল্প। গুঞ্জনে রয়েছে, সুচিত্রার বুদ্ধিতেই নাকি ‘সপ্তপদী’র শেষাংশ একেবারেই বদলে দেন পরিচালক অজয় কর।
তারাশঙ্কর বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সপ্তপদী উপন্যাস অবলম্বনেই ছবিটা তৈরি করেছিলেন অজয় কর। উপন্য়াসের মতো ছবির শেষটা প্রথমে রেখেছিলেন পরিচালক। তবে হঠাৎ সুচিত্রা মনে করলেন, ছবির শেষে উত্তম অভিনীত কৃষ্ণেন্দু চরিত্রের কুষ্ঠ হবে তা দর্শক মেনে নিতে পারবে না। আর এরকম দৃশ্য উত্তম-সুচিত্রার রোমান্টিক জুটির জন্যও ঠিক নয়। শোনা যায়, ছবির শুটিং শুরুর পর থেকেই সুচিত্রা নাকি রিনা ব্রাউনের চরিত্রটি নিজের মতো করে পালটাতে থাকেন। তবে ক্লাইম্যাক্সের কথা জানতে পেরে, এবার উত্তমের দৃশ্য কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত নেন মহানায়িকা।
সেই সময় খবরে এসেছিল, ক্লাইম্যাক্স বদলানোর জন্য নাকি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন পরিচালক অজয়। তবে পরিচালকের এমন কথা শুনে, বেশ রেগেই যান সাহিত্যিক। ঠিক এই সময়ই মোক্ষম চাল চালেন সুচিত্রা। উত্তমের ভাই তরুণ কুমারকে পাঠান তারাশঙ্করের কাছে। আর সাহিত্যিককে বলতে বলেন, একজন মানুষ শুধু ভালোবাসার জন্য নিজের পরিবার, নিজের ধর্ম থেকে সরে গেল। সেই মানুষটার কুষ্ঠ হতে পারে! মানুষ তো ভালোবাসাকে পাপ হিসেবে দেখবে। সুচিত্রার এমন কথা, তারাশঙ্করকেও নাড়িয়ে দেয়। তিনি অনুমতি দেন। আর সেই মতোই নতুন করে লেখা হয় সপ্তপদীর শেষাংশ।
এই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন উত্তম। তিনি বুঝতেই পেরেছিলেন ক্লাইম্যাক্স বদলে গেলে, তাঁর কিছু দৃশ্য কাটছাঁট হবে। মহানায়িকার সিদ্ধান্তে তবে কোনও কথাই বলেননি উত্তম। কারণ, উত্তম বুঝতে পেরেছিলেন, নায়কের কুষ্ঠরোগ দর্শক মেনে নেবেন না। এর পরের ঘটনা তো ইতিহাস। ভারতীয় চলচ্চিত্রের সেরা ছবির তালিকায় স্থান পেল উত্তম-সুচিত্রার এই অমরপ্রেম কাব্য সপ্তপদী।
