ফুড পয়োজন বা হজমের যে কোনও সমস্যা সবচেয়ে বেশি বাড়ে গরমেই। খুব গরম খাবার যেমন হতে পারে ফুড পয়োজনিং-এর কারণ তেমনই রান্নার পদ্ধতিগত ভুলের জন্যও কিন্তু খাবার সহজে দূষিত হয়ে যায়। এছাড়াও বাতাসে বেশ কিছু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ময়লা থাকে। যা খাবারকে বিষাক্ত করে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এই দূষিত, পচা খাবার খেলে শরীর খারাপ অবধারিত। অতিরিক্ত বমি, ফুড পয়োজনের সমস্যা হলে শরীর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণ জল বেরিয়ে যায়। যা মৃত্যুর কারণও হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) দেওয়া তথ্য অনুসারে বিশ্বে প্রতি ১০ জনে ১ জন রোজ দূষিত খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে বছরে ৪ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয় ফুড পয়োজন থেকে। সেন্ট্রাল ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (CDC) তরফে খাদ্যে বিষক্রিয়া প্রতিরোধের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেওয়া হয়েছে। এই টিপস মেনে চলতে পারলে উপকার পাবেন।
প্রথমেই মাথায় রাখবেন পরিষ্কর-পরিচ্ছন্নতা। রান্না করার আগে হাত ভাল করে ধুয়ে নিন। প্রতিবার হাত ধুয়ে রান্না করতে হবে। পাশাপাশি রান্নাঘরও পরিষ্কার রাখুন। রান্নার জিনিস, বাসনপত্র, চপিং বোর্ড, স্ল্যাব, সিঙ্ক এসবও পরিষ্কার রাখতে হবে। নইলে সেখান থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়।
এছাড়াও রান্নার ক্ষেত্রে যে সব বিষয় মেনে চলবেন-
আমিষের জন্য অন্য পাত্র ব্যবহার করুন- কাঁচা, মাংস, মাছ এসব সংরক্ষণের জন্য যেমন আলাদা পাত্র ব্যবহার করবেন তেমনই রান্নার জন্যেও আলাদা বাসন রাখুন। আমিষ রান্নার জন্য আলাদা চপিং বোর্ড ব্যবহার করুন। মাছ, মাংস রান্না করার সময় এবং সংরক্ষণ করার সময়েও সাবধানে থাকুন। কাঁচা মাংস সব সময় ফ্রিজারে রাখবেন। এছাড়াও এয়ার টাইট কন্টেনারে মাছ-মাংস রাখুন। সংরক্ষিত মাংস থেকে কিছুটা পরিমাণ রান্নার জন্য নিয়ে বাকি মাংস ঠিক ভাবে রাখুন ফ্রিজে।
ঠিক ভাবে খাবার রান্না করুন
সব সময় উচ্চ তাপমাত্রায় খাবার রান্না করলেই যে তা ভাল হবে এমন নয়। বেশি তাপমাত্রায় খাদ্য গুণ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। খাবার ভেঙে ফেলতে উচ্চ তাপমাত্রা জরুরি, কিন্তু সব সময় তা লাগে না। আর তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
খাবার খুব বেশি ঠান্ডা করবেন না
খাদ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ৪০- ১৪০ °F এর মধ্যে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তাই ফ্রিজের তাপমাত্রা ৪০ °F বা তার কম রাখুন। রান্না করে তা ২ ঘন্টা বাইরে রেখে ঠান্ডা হলে তবেই ফ্রিডে রাখুন।
ফুড পয়জনিং-এর লক্ষণ
ডায়ারিয়া ( ৩ দিনের বেশি) জ্বর রক্ত আমাশা বমি ডিহাইড্রেশন
ফুড পয়জনিং এড়াতে যা কিছু খাবেন না
কাঁচা খাবার বা হাফ সিদ্ধ খাবার খাবেন না। বিশেষত ডিম, মাংস, যে কোনও সামুদ্রিক খাবার। কাঁচা দুধ, জুস। অনেকক্ষণ কেটে রাখা ফল খাবেন না। নরম পনির বা পুরনো পনির খাবেন না।
কাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হয় সবচেয়ে বেশি
৫ বছরের নীচে শিশু আর ষাটোর্ধ্বদের ক্ষেত্রে সমস্যা বেশি
লিভার-কিডনির সমস্যা থাকলে
গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে
ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।