ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করার পর ৭৫ শতাংশ মানুষ কী বলছেন? আপনিও কি একমত?
Work From Home : দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে বসে কাজ করতে করতে মানসিক অবসাদ দানা বাঁধছে কর্মীদের মনে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৭৫ শতাংশ কর্মী এখন অফিসমুখী হতে চাইছেন।
নয়াদিল্লি : বাড়িতে বসেই অফিস। নাকে-মুখে গিলে, ট্রেন-বাস ধরার দৌড় নেই। কোনও ঝক্কি নেই। বাড়ির ড্রয়িংরুমে বসেই ল্যাপটপ খুলে কাজে বসে যান। বিগত প্রায় দেড় বছর ধরে ড্রয়িং রুমটাই হয়ে উঠেছে অফিসের কিউবিকল। শুনতে ভালই লাগে। কিন্তু সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে অন্য কথা। এখন যাঁরা বাড়িতে বসে কাজ করছেন, তাঁদের ৭৫ শতাংশই এখন চাইছেন অফিসের মুখ দেখতে। বাড়িতে বসে বসে হাঁপিয়ে উঠছেন তাঁরা। এবার তাঁরা রেহাই চাইছেন ওয়ার্ক ফ্রম হোম কালচার থেকে।
করোনা অতিমারি দাঁত-নখ বের করা শুরু করতেই প্রায় সমস্ত বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ক ফ্রম হোমের উপর জোর দিয়েছে। শুরুটা ঠিকঠাকই ছিল। চারিদিকে করোনার দৌরাত্ম্য। তার মধ্যে আর রাস্তা-ঘাটে ভিড়ের মধ্যে বেরোতে কে চায়! কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে বসে কাজ করতে করতে মানসিক অবসাদ দানা বাঁধছে কর্মীদের মনে। দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা।
সম্প্রতি জেজেএলের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৭৫ শতাংশ কর্মী এখন অফিসমুখী হতে চাইছেন। তবে তাঁরা এও চাইছেন, সংস্থাগুলি যেন কর্মীদের নিজেদের পছন্দ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়। যাঁরা বাড়ি থেকে কাজ করতে চাইছেন, তাঁরা এখন যেমন চলছে তেমনভাবে বাড়ি বসেই কাজ করুন। আর যাঁরা অফিসে ফিরতে চাইছেন, তাঁরা যাতে অফিসে বসে কাজ করতে পারেন।
সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ওয়ার্ক ফ্রম হোম যে অফিসে বসে কাজ করার থেকে বেশি ভাল, এমন মনে করা কর্মীর সংখ্যাও আগের তুলনায় কমে এসেছে। তবে অফিসে বসে যাতে কর্মীরা সুষ্ঠভাবে কাজ করতে পারেন, তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করাটাও সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্তব্য বলে মনে করছেন তাঁরা।
গতবছরও একইরকম একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল, ৫২ শতাংশ কর্মী অফিসে ফিরতে চাইছেন। এই বছরের সমীক্ষায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ শতাংশে। গতবছর প্রায় ৯২ শতাংশ কর্মী মনে করেছিলেন, তাঁদের নিজেদের পছন্দ মতো ওয়ার্ক ফ্রম হোম কিংবা ওয়ার্ক ফ্রম অফিসের সুবিধা বেছে নেওয়ার সুযোগ দিক সংস্থাগুলি। চলতি বছরে তা কমে এসেছে ৮৯ শতাংশে।
আরও কিছু তথ্য উঠে এসেছে জেজেএলের এই বছরের সমীক্ষায় । যেমন, ৬২ শতাংশ কর্মী মনে করছেন, ওয়ার্ক ফ্রম হোম বা ওয়ার্ক ফ্রম অফিস কোনওটাই নয়; বরং সম্পূর্ণ ভিন্ন কোনও জায়গায় বসে কাজ করার সুযোগ পেলে ভাল হয়। ৯১ শতাংশ কর্মীর মতে, তাঁরা নিজেদের কাজের সময় নিজেরা ঠিক করার সুযোগ চান। আবার ৮৬ শতাংশ কর্মীর পছন্দ সপ্তাহে চারটি কর্মদিবস।
তবে এই সমীক্ষার দিকে ভাল করে নজর দিলে বোঝা যাবে, বেশিরভাগ কর্মীই এখন মনে করছেন ওয়ার্ক ফ্রম হোমে কাজের সুবিধার থেকে ঝক্কি বেশি। গতবছর প্রায় ৮০ শতাংশ কর্মী মনে করেছিলেন, ওয়ার্ক ফ্রম হোমে আরও ভাল ভাবে কাজ করা যাবে। কিন্তু এখন তা কমে হয়েছে ৬৭ শতাংশ। গতবছরের সমীক্ষা অনুযায়ী ওয়ার্ক ফ্রম হোমে সন্তুষ্ট ছিলেন ৯২ শতাংশ কর্মী। কিন্তু এবার সেটাও কমে হয়েছে ৮৫ শতাংশ। আরও পড়ুন : ওয়ার্ক ফ্রম হোমে বাড়ছে ডায়াবিটিজ আক্রান্তের সংখ্যা