অবসর নিতে বাধ্য হওয়া প্রাক্তন আইপিএস এবার যোগীর প্রতিপক্ষ, কে এই অমিতাভ ঠাকুর?

Amitabh Thakur: অমিতাভের জন্য এটা নীতির লড়াই। এমনটাই বলছেন তাঁর স্ত্রী নূতন। ২০২২-এর বিধানসভা নির্বাচনে যোগীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চান প্রাক্তন এই অফিসার।

অবসর নিতে বাধ্য হওয়া প্রাক্তন আইপিএস এবার যোগীর প্রতিপক্ষ, কে এই অমিতাভ ঠাকুর?
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 14, 2021 | 6:22 PM

লখনউ: বাংলা সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন মিটেছে কয়েক মাস আগেই। এ বার সামনেই হাইপ্রোফাইল নির্বাচন উত্তরপ্রদেশে। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার লড়াই গেরুয়া শিবিরের। অন্যদিকে কোমরবেঁধে নামছে বিরোধী দলগুলিও। এরইমধ্যে যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা ঘোষণা করলেন প্রাক্তন পুলিশ অফিসার। মাস কয়েক আগেই বাধ্যতামূলকভাবে অবসর নিতে হয়েছে ওই আইপিএসকে। এ বার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন সেই আইপিএস অমিতাভ ঠাকুর।

চলতি বছরের ২৩ মার্চ অবসর নিতে হয় আইপিএস অমিতাভের ঠাকুরকে। অভিযোগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে তাঁকে বাধ্য করা হয় অবসর নিতে। আর সেই ঘটনার কয়েক মাস পরই অমিতাভের স্ত্রী নূতন এক বিবৃতিতে জানালেন যে তাঁর স্বামী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে। নূতনের কথায়, তার স্বামীর জন্য এটা নীতির লড়াই। তিনি জানিয়েছেন, যোগী আদিত্যনাথ যেখান থেকেই লড়াই করুন না কেন, সেখানেই প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়াবেন অমিতাভও ঠাকুর। স্ত্রী নতুন আরও জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকাকালীন উত্তরপ্রদেশের নানা ধরনের অগণতান্ত্রিক, বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ করেছেন যোগী আদিত্যনাথ। নির্বাচনে তারই প্রতিবাদ জানাবেন অমিতাভ।

গত ২৩ মার্চ অমিতাভ ঠাকুরের বাধ্যতামূলক অবসরের নোটিস দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তাঁর মেয়াদ থাকার কথা ছিল ২০২৮ পর্যন্ত। প্রায় ৭ বছর আগে অবসর নিতে হয়েছে তাঁকে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে যে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল, তাতে বলা হয়ে, ওই অফিসার বাকি থাকা কর্মজীবনের জন্য যথেষ্ট দক্ষ নন। তাই জনস্বার্থে তাঁকে অবসর দেওয়া হচ্ছে। তবে এমন সিদ্ধান্ত অমিতাভ ঠাকুরের জীবনে নতুন নয়। কর্মজীবনে একাধিকবার সাসপেন্ড হয়েছেন ১৯৯২ ব্যাচের উত্তরপ্রদেশ ক্যাডারের এই আইপিএস অফিসার।

কে এই অমিতাভ ঠাকুর?

উত্তরপ্রদেশের অন্তত ১০টি জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের সিভিল ডিফেন্স বিভাগের আইজিও ছিলেন অমিতাভ ঠাকুর। অভিযোগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন বলেই তাঁকে অবসর নিতে বাধ্য করা হয়েছে। সূত্রের খবর, টাকা নিয়ে পুলিশ অফিসারদের পোস্টিং দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি।

প্রথমে ২০০৫ সালে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। তখন তিনি উত্তরপ্রদেশের গন্দা জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। এক দুষ্কৃতীকে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। অমিতাভ ঠাকুর সেই অভিযোগের জবাবে জানিয়েছিলেন যে পুরনো অফিসারদের পড়ে থাকা ফাইলের কাজ করছিলেন তিনি।

২০০৬ সালে ফের একবার সাসপেন্ড হন তিনি। তখন তিনি ফিরোজাবাদের পুলিশ সুপার। একটি ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে জসরানা থানার পুলিশ অফিসারকে বদলির নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক সেই বদলির বিরোধিতা করেন। বিধায়কের লোকজনের হাতে রীতিমতো হেনস্থা হতে হয় অমিতাভের ঠাকুরকে। এমনকি বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে গেলে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন অমিতাভ ঠাকুর। এরপরই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়।

২০১৫ তে ফের বিতর্কে জড়ান এই অমিতাভও ঠাকুর। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তাঁর স্ত্রী নূতন একটি অভিযোগে জানান রাজ্যের মন্ত্রী গায়ত্রী প্রসাদ প্রজাপতি অবৈধ খননের সঙ্গে যুক্ত। এই অভিযোগ সামনে আসার পর অমিতাভ ঠাকুর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাঁর পরিবারের জন্য নিরাপত্তা দাবি করেন। এই ঘটনার কিছুদিন পরই অমিতাভের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন এক মহিলা। তিনি অভিযোগ করেন, চাকরি দেওয়ার নামে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণ করা হয়েছে তাঁকে। এখানেই শেষ হয়নি। ২০১৫ তে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করেন অমিতাভ ঠাকুর। তিনি অভিযোগ করেছিলেন মুলায়ম সিং যাদব তাঁকে হুমকি দিচ্ছে। সেই ফোনকলের রেকর্ডিংও প্রকাশ করেন তিনি। আইআইটি কানপুর থেকে বিটেক ডিগ্রি পাওয়ার পর আইআইএম লখনউ থেকে পিএইচডি করেন প্রাক্তন এই অফিসার। আরও পড়ুন: ‘আমি যুদ্ধ হতে দেব না, আফগানদের মরতে দেব না’, দেশবাসীকে বার্তা প্রেসিডেন্ট ঘানির