AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মায়ের মৃতদেহ ‘আগলে’ ক্ষুধার্ত একরত্তি, করোনার ভয়ে মানবিকতা জলাঞ্জলি দিলেন ‘হৃদয়হীন’ প্রতিবেশীরা

দু'দিন কেটে যাওয়া পর দুর্গন্ধের চোটে বাধ্য হয়ে পুলিশকে ফোন করেন ওই বাড়ির মালিক। এরপর স্থানীয় প্রশাসনের মদতে উদ্ধার করা হয় ১৮ মাসের একরত্তিকে।

মায়ের মৃতদেহ 'আগলে' ক্ষুধার্ত একরত্তি, করোনার ভয়ে মানবিকতা জলাঞ্জলি দিলেন 'হৃদয়হীন' প্রতিবেশীরা
ছবি- টুইটার
| Updated on: May 01, 2021 | 12:09 AM
Share

মুম্বই: সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় বিপর্যয় নেমে এসেছে গোটা দেশে। অকুল পাথারে পড়েছেন লাখো-লাখো মানুষ। কেউ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন, কেউ আবার মারা গেলেও তাঁর দেহ শ্মশানে পোড়ানোর বা মাটিতে কবর দেওয়ার মতো জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থায় সমাজের উঁচু থেকে নীচু বহু শ্রেণির মানুষ সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন কেবল মানবিকতার খাতিরে। কোথাও আবার চূড়ান্ত অমানবিক আচরণের সাক্ষী থাকছে সমাজ। যেমনটা সম্প্রতি দেখা গিয়েছে মহারাষ্ট্রে।

মায়ের মৃত্যুর পর মৃতদেহের পাশেই টানা দু’দিন বসে রইল দুধের শিশু। ‘পাছে করোনা হয়ে যায়’, এই আশঙ্কা থেকে কেউ শিশুটির মুখে সামান্য খাবারটুকু তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেননি। সাহায্য করতে বা মৃতদেহটি সরানোর ব্যবস্থা করতে এগিয়েও আসেননি। দু’দিন কেটে যাওয়া পর দুর্গন্ধের চোটে বাধ্য হয়ে পুলিশকে ফোন করেন ওই বাড়ির মালিক। এরপর স্থানীয় প্রশাসনের মদতে উদ্ধার করা হয় ১৮ মাসের একরত্তিকে।

চূড়ান্ত হৃদয় বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের পুণেতে। বাড়ির মালিকের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গত সোমবার মৃত মহিলার দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। অনুমান করা হচ্ছে, শনিবার ওই মহিলার মৃত্যু ঘটে। অর্থাৎ তার আগে দু’দিনের বেশি সময় ধরে অভুক্ত অবস্থায় ছিল ওই শিশুটি। ‘হৃদয়হীন’ প্রতিবেশীদের কেউই এগিয়ে আসেননি। মহিলার মৃতদেহ উদ্ধারের পর শিশুটিকে যত্ন করে দুধ পান করান মহিলা কনস্টেবল সুশীলা গাভালে এবং রেখা ওয়াজে।

সুশীলা বলেন, “আমারও দু’টো বাচ্চা রয়েছে। একজনের বয়স আট, একজনেও ছয়। বাচ্চাটাকে দেখে আমার নিজের সন্তানের মতোই মনে হল। দুধ দিতেই চটজলদি খেয়ে ফেলল। বোঝায় যাচ্ছে ওর কী পরিমাণ খিদে পেয়েছিল।” আরেক মহিলা কনস্টেবল রেখা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে তাঁরা উদ্বিগ্ন থাকলেও দেখা যাচ্ছে শিশুটির শরীর ভালই রয়েছে। “সামান্য জ্বর এলেও এখন আর কোনও সমস্যা নেই। আমরা যখন ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম তখন একটু জ্বর ছিল। চিকিৎসক জানালেন ওকে ভাল করে খাবার দিতে, আর কোনও সমস্যা নেই। এরপর ওকে জল-বিস্কুট খাইয়ে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে আমরা কোভিড পরীক্ষা করাই,” জানান রেখা।

আরও পড়ুন: সংক্রমণ রুখতে নয়া নির্দেশিকা নবান্নের, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ সিনেমা হল-শপিং মল, বেঁধে দেওয়া হল বাজারের সময়

হাসপাতাল সূত্রে খবর, শিশুটির করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। একটি সরকারি হোমে রাখা হয়েছে তাকে। শিশুটির মায়ের দেহ অটোপ্সি করতে পাঠানো হয়েছে। তারপরই বোঝা যাবে কীভাবে ওই মহিলার মৃত্যু হল, আদৌ করোনা হয়েছিল নাকি সেটাও স্পষ্ট হবে। পুলিশ ইন্সপেক্টর প্রকাশ জাদব জানিয়েছেন, “মহিলার স্বামী কর্মসূত্রে উত্তর প্রদেশে গিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ওনার ফিরে আসার অপেক্ষা করছি।”

আরও পড়ুন: করোনার বিরুদ্ধে লড়তে সশস্ত্র সেনাবাহিনীকে বিশেষ আর্থিক ক্ষমতা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের