বছর শেষে করোনার নয়া আতঙ্ক বিশ্বজুড়ে। দেশ তথা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন সংক্রমণ, একমাসেই বিশ্বের ১১৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন ভ্যারিয়েন্ট। দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮১-তে বেড়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বেও শতাধিক দেশে ওমিক্রন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে ছাপিয়ে বিশ্বে ডমিনেন্ট ভ্যারিয়েন্ট হিসাবে রূপান্তরিত হচ্ছে ওমিক্রন। করোনা ও ওমিক্রন সংক্রান্ত যাবতীয় আপডেট দেখে নিন একনজরে-
রাজ্যে ফের একবার দাঁত নখ বের করতে শুরু করেছে করোনা। বুধবার পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, ১০৮৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৪০ জনই কলকাতার।
বুধবার মুম্বইয়ে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় ২,৫১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল মুম্বইয়ে এই সংখ্যাটা ছিল ১,৩৩৩। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মুম্বইয়ের করোনা পরিস্থিতি।
রাজস্থানে বুধবার ২২ জন ওমিক্রনে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এই নিয়ে রাজস্থানে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৮। এর পাশাপাশি গুজরাটে বুধবার ওমিক্রনে আক্রান্ত ১৯ জনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে গুজরাটে ৯৭ জন ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন।
ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। মঙ্গলবার ইংল্যান্ড ও ওয়েলস মিলিয়ে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দৈনিক সংক্রমণের হিসেবে এটিই সর্বোচ্চ। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের জেরে এই সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে। পরিসংখ্যান বলছে, প্রত্যেক দিন রেকর্ড ভেঙে বাড়ছে সংক্রমণ। গত ১৬ ডিসেম্বরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি ২০ জনের মধ্যে একজন আক্রান্ত ছিল রাজধানী শহর লন্ডনে। সেই সংখ্যা পরে বেড়েছে আরও। সেই সঙ্গে বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও। ব্রিটেনে হাসপাতালে রোগী ভর্তির হার প্রায় ৫৩ শতাংশ বেড়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। নিয়ন্ত্রণে আসার কোনও সম্ভাবনাই দেখছে না প্রশাসন।
বর্ষবরণের আগে সতর্ক গোয়া প্রশাসন। ইতিমধ্যেই সেখানে থাবা বসিয়ে দিয়েছে ওমিক্রন। এই পরিস্থিতি সুরক্ষা ব্যবস্থায় কোনও খামতি রাখতে চাইছে না প্রশাসন। গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত বুধবার জানিয়েছেন, সেখানে পার্টি এবং অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানগুলি কেবল তখনই অনুমতি দেওয়া হবে যদি আমন্ত্রিত অতিথিদের প্রত্যেকের সম্পূর্ণ টিকাকরণ হয়ে যায় অথবা তাঁদের কাছে কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট থাকে।
আতঙ্কের মধ্যেই কিছুটা স্বস্তির খবর। দক্ষিণ আফ্রিকা দৈনিক কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে এক সপ্তাহের মধ্যে। এর থেকেই ইঙ্গিত মিলছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার চেয়ে কম গুরুতর হতে পারে। নতুন আক্রান্তের ক্ষেত্রে নয় দিন আগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩ হাজারে আশেপাশে। সোমবার তা ৩৫ শতাংশ কমে প্রায় ১৫ হাজারের আশেপাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
দিল্লির বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ করোনা নিয়ে একাধিক কড়াকড়ির দিকে এগিয়েছে। পরবর্তী সময়ে, হাসপাতালগুলিতে কতগুলি বেড ভর্তি থাকছে, তার উপর নির্ভর করে আরও বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে।
ওমিক্রনের হাত ধরে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কাই করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তবে রাজ্যে বছর শেষে যে এ ভাবে সংক্রমণ বাড়বে, তেমন আঁচ আগে পাওয়া যায়নি। সদ্য খুলেছে স্কুল, চালু হয়েছে লোকাল ট্রেন, ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে দৈনন্দিন জীবন। এরই মধ্যে উদ্বেগ বাড়াল করোনার গ্রাফ। বুধবার রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ১০০০ ছাড়িয়েছে বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর। এ দিনই রাজ্যের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে জরুরি বৈঠক বসছে স্বাস্থ্য দফতরে
বিস্তারিত পড়ুন : রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ১০০০ পার! মমতার নির্দেশের পরই তড়িঘড়ি বৈঠক স্বাস্থ্য ভবনে
দেশের একাধিক বড় শহরের করোনা গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। কলকাতায় দৈনিক সংক্রমণ হাজারেরও বেশি। মুম্বইয়ে দৈনিক সংক্রমণ ২ হাজারের আশেপাশে। পরিস্থিতি যথেষ্টই উদ্বেগজনক। সেই আশঙ্কা এবার আরও বাড়িয়ে দিল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণা। সেখানে বলা হচ্ছে, ভারতে কয়েক দিনের মধ্যেই কোভিড-১৯ আক্রান্তের হার লাগামছাড়াভাবে বাড়তে পারে। করোনার সংক্রমণের এক ঢেউ দেখা যেতে পারে, যাতে ব্যাপক সংখ্যায় মানুষ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই ঢেউ খুব বেশিদিন স্থায়ী বলে না বলেই অনুমান গবেষণায়। ১৪০ কোটির দেশে ওমিক্রনের এই ঢেউ যথেষ্ট উদ্বেগজনক হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কলকাতা পুরনিগমের ৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সাধনা বসু। মঙ্গলবার মেয়রের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তিনি। কিছুক্ষণ পর থেকেই তাঁর শরীর খারাপ হতে শুরু করে। পরে তাঁর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়েছে। মঙ্গলবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকা অনেকেরই গতরাত থেকে জ্বর এসেছে। আক্রান্তের তালিকায় রয়েছেন খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ঘরে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরও। বুধবার তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। মঙ্গলবার এই কর্মীর উপরেই যাবতীয় অনুষ্ঠানের একাধিক বিষয়ের দায়িত্বভার ন্যস্ত ছিল বলে খবর।
মহারাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। সে রাজ্যের মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে কোভিড প্রোটোকল অনুসরণ না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বলেছেন, “বর্ষবরণের আগে প্রচুর মানুষ জড়ো হন। আমরা তাঁদের আনন্দ নষ্ট করতে চাই না। তবে যদি প্রতিষ্ঠানগুলি ৫০ শতাংশ এবং ২৫ শতাংশের নিয়ম না মানে, আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। আমাদের ফ্লাইং স্কোয়াডগুলি বিভিন্ন জমায়েতের উপর নজর রাখবে। অনিয়ম ধরতে সিসিটিভি ফুটেজ ব্যবহার করুন। নিয়ম না মানলে প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
রাজধানীতে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। দৈনিক সংক্রমণ বাড়ছে। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন বুধবার বলেছেন, বিদেশ থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁরা বিমানবন্দরে নেগেটিভ হলেও কয়েকদিন পর পজিটিভি ধরা পড়ছেন। এই সময়ের মধ্যে তাদের পরিবারের বাকি সদস্যদেরও সংক্রমিত করছেন। তাঁর কথায়, “আন্তর্জাতিক বিমানের জন্য সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে।”
এক হাজারের উপরে বঙ্গের করোনা গ্রাফ। একদিনে এক হাজারেরও বেশি মানুষ রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ১৭৭ দিন পর রাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজারের উপরে। আক্রান্তদের বেশিরভাগই কলকাতা এবং শহরতলির। ৪ জুলাইয়ের পর এটিই রাজ্যের সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ।
করোনা পরিস্থিতি যে ভাবে ফের অবনতির দিকে যাচ্ছে, তাতে আশঙ্কার মেঘ দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে, ফের নতুন করে কিছু বিধি- নিষেধ জারি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন তিনি। পরিস্থিতির অবনতি হলে প্রয়োজনে পুনরায় স্কুল বন্ধ করার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিনি। বুধবার গঙ্গা সাগরে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের এই বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
বিস্তারিত পড়ুন : ওমিক্রনের চোখরাঙানি! ফের বন্ধ হতে পারে স্কুল, কমতে পারে লোকাল ট্রেন, ইঙ্গিত মুখ্যমন্ত্রীর
করোনা এখনও থাকবে। আমাদের এই ভাইরাসের সঙ্গেই বাঁচতে শিখতে হবে। মানুষকে বাড়ির ভিতরে থাকার পরামর্শ দেওয়া বা স্কুল – কলেজ বন্ধ করে রাখা আর সেভাবে কার্যকারী সিদ্ধান্ত হবে না। এগুলি অতিমারির থেকেও বেশি ক্ষতি করে। এমনটাই মনে করছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন।
উত্তর প্রদেশে আরও এক জন ওমিক্রনে আক্রান্ত। উত্তর প্রদেশের সিদ্ধার্থনগরের বাসিন্দা তিনি। কিছুদিন আগেই ব্রিটেন থেকে দেশে ফিরেছিলেন বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এ প্রকাশ।
করোনায় আক্রান্ত এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে। তাঁর স্বামীর শরীরেও করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সাংসদ তাঁর সংস্পর্শে আসা প্রত্যেককে করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য অনুরোধ করেছেন।
করোনা ও ওমিক্রন সংক্রমণের লাগাতার বৃদ্ধির কারণে বিহারেও নববর্ষের উদযাপনে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি করে আগামী ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি অবধি রাজ্য়ের সমস্ত পার্ক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, “রাজ্যের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে কোনও পার্কে নববর্ষের উদযাপন করা যাবে না। নতুন বছরে ভিড় এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” শুধুমাত্র বর্ষবরণের উদযাপনই নয়, যাবতীয় রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংক্রান্ত জমায়েতের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়া যাবতীয় করোনা বিধিও মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা: কোভিডের নয়া ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এখন উদ্বেগের কারণ। ইতিমধ্যেই দেশের রাজধানীতে হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে। পাল্লা দিয়ে কলকাতাতেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ সংক্রান্ত নির্দেশিকায় বদল আনল রাজ্য সরকার। বাধ্যতামূলক করা হল নমুনা পরীক্ষা (RTPCR)। বিদেশ থেক ফেরার ৮ দিনের মাথায় দ্বিতীয়বার ফের নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ না এলেও ১৪ দিনের একান্তবাস বাধ্যতামূলক বিদেশ ফেরত উড়ান যাত্রীদের এমনটাই নির্দেশ রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার দফতরের।
বিস্তারিত পড়ুন: State Government issued restriction on International Travel: ‘পজিটিভ’ না হলেও ১৪ দিন থাকতে হবে একান্তবাসে, আন্তজার্তিক ভ্রমণে নয়া নির্দেশিকা রাজ্যের
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে। তিনি বলেন, “রাজ্যে ইতিমধ্যেই করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষকে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা নানা ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন।”
বুধবার সকাল থেকেই দিল্লির বিভিন্ন মেট্রো স্টেশন(Metro Station)-র বাইরে যাত্রীদের লম্বা লাইন দেখা যায়। প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ সেই লাইনে দাঁড়িয়ে ধৈর্য হারাতে দেখা যায় অফিস যাত্রীদের। তাদের দাবি, আচমকাই ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে মেট্রো চলাচলের ঘোষণা করায়, সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সংস্থা থেকেই এখনও বাড়ি থেকে কাজের নির্দেশ না দেওয়ায়, তাদের অফিস যেতে হচ্ছে। এদিকে, যাতায়াতের বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না থাকায়, বাধ্য হয়েই মেট্রোর লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে।
তামিলনাডুতে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৫-এ। এ দিন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এই তথ্য জানিয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই চেন্নাইয়ের বাসিন্দা হওয়ায়, গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে নববর্ষের উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বছরের শেষ সপ্তাহে এসেও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ (COVID-19)। উপরি পাওনা হিসাবে জুটেছে ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণও। করোনার এই অতি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্টে ইতিমধ্যেই দেশে ৭৮১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতেই ফের একবার মন্ত্রীদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। সূত্রের খবর, বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ মন্ত্রিসভার সকল সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী। আলোচনা হতে পারে দেশের করোনা ও ওমিক্রন পরিস্থিতি নিয়ে।
রাজ্য সরকারি স্কিম সংক্রান্ত পরিষেবা যাতে মানুষের কাছে সহজেই পৌঁছে যায়, সেই উদ্দেশেই ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্প চালু করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে সে সব ক্যাম্প চালুও হয়েছে ইতিমধ্যেই। সেই সব ক্যাম্পেই এবার যাতে করোনার টিকা দেওয়া সম্ভব হয়, সেই নির্দেশিকাই দিল স্বাস্থ্য দফতর। শুধু টিকা নয়, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একাধিক পরিষেবা দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
বিস্তারিত পড়ুন: Vaccination in Duare Sarkar: নতুন বছরে ‘দুয়ারে স্বাস্থ্য’! দুয়ারে সরকার ক্যাম্পেই মিলবে টিকা
বর্তমানে দেশে সুস্থতার হার ৯৮.৪০ শতাংশ, যা ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর সর্বোচ্চ সুস্থতার হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা মুক্ত হয়েছেন ৭৩৪৭ জন। এই নিয়ে দেশে মোট সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩ কোটি ৪২ লক্ষ ৫১ হাজার ২৯২-তে। দেশে এখনও অবধি ১৪৩ কোটি করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে।
ওমিক্রন সংক্রমণের পাশাপাশি দেশের করোনা সংক্রমণও অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯১৯৫ জন, যা গতকালের আক্রান্তের সংখ্যার তুলনায় ৪৪ শতাংশ বেশি। তবে সুস্থতার হারে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলেছে।
মঙ্গলবারই দেশের ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৬০০-র গণ্ডি পার করেছিল, একদিনেই তা প্রায় ৮০০-র দোরগোড়ায় পৌঁছে গেল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের (Union Health Ministry)-র তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮১।
প্রাথমিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে আপাতত ওমিক্রন সংক্রমণের জন্যও করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হলেও, ওমিক্রন সংক্রমণের চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ব্যবহার করে বিশেষ লাভ হচ্ছে না বলেই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
প্রতি সপ্তাহেই বিশ্বের মহামারি সংক্রমণ নিয়ে আপডেট দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মঙ্গলবারও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়, বিশ্বের একাধিক দেশে হঠাৎ করে যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তার পিছনে দায়ী ওমিক্রন। যে দেশগুলিতে ইতিমধ্যেই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপট দেখা গিয়েছিল, সেখানেও নতুন করে ওমিক্রনের দাপট দেখা দিচ্ছে। “উদ্বেগের কারণ” (Variant of Concern) হিসাবে চিহ্নিত ওমিক্রন থেকে সামগ্রিকভাবে সংক্রমণের ঝুঁকি এখনও অনেক বেশি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণার পর রবিবার থেকেই তামিলনাড়ুতে (Tamil Nadu) ছোটদের টিকাকরণের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের প্রায় ৩৩.২০ লক্ষ কিশোর-কিশোরীকে করোনা টিকা দেওয়া হবে। আপাতত স্কুলেই টিকাকরণ কর্মসূচি চালু করা হবে। এছাড়া বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজনও করা হবে।
রাজ্যে কত সংখ্যক ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী রয়েছে, সে সম্পর্কে এখনও জানা না গেলেও, কেন্দ্রীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা অনুযায়ী, রাজ্যের ৩.৭ শতাংশ বাসিন্দা এই বয়সসীমার অন্তর্গত বলেই জানা গিয়েছে। মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) যে সংখ্যক মজুত টিকা রয়েছে, তা দিয়ে টিকাকরণ শুরু করা হবে, এরপর প্রয়োজন অনুযায়ী কেন্দ্রের কাছে অতিরিক্ত টিকা চাওয়া হবে, এমনটাই জানা গিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে। আপাতত পুরনো টিকাকরণ কেন্দ্রগুলিতেই টিকাকরণ হবে।
রাজধানী দিল্লি(Delhi)-তে আপাতত পুরনো টিকাকরণ কেন্দ্রগুলিতেই ছোটদের টিকাকরণ শুরু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি স্কুল, হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতালেও করোনা টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। দিল্লিতে মোট ৭ থেকে ৯ লক্ষ কিশোর-কিশোরী রয়েছে বলে অনুমান। এছাড়া পার্শ্ববর্তী একাধিক রাজ্য থেকেও পড়ুয়ারা করোনা টিকা নিতে আসতে পারে দিল্লিতে।
জানা গিয়েছে, ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য প্রতিটি রাজ্যে আলাদাভাবে টিকাকরণ কেন্দ্র (Vaccination Centre) চালু করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। এখনও অবধি দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের একটি বড় অংশের দ্বিতীয় ডোজ়ের টিকা বাকি থাকায়, তারাও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, টিকাকরণ কেন্দ্রে যাচ্ছেন করোনা টিকা নিতে। এদিকে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদেরও দ্রুত করোনা টিকাকরণ সারতে চায় কেন্দ্র। সেই কারণেই আলাদা টিকাকেন্দ্র তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেখানে আলাদা কেন্দ্র তৈরি সম্ভব নয়, সেখানে আলাদা লাইনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যকর্মীদের আলাদা প্রশিক্ষণেরও (Special Training) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।