Mamata Banerjee: পেরিয়ে গেল মমতার দেওয়া সময়সীমা! নববর্ষে ডামাডোলই সঙ্গী ‘ইন্ডিয়া’র

India Alliance seat sharing: আসন ভাগাভাগির বিষয়টি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও, জোট নিয়ে রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক করতে পারল না কংগ্রেস। জোট নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার নিয়েই নির্বাচনের বছর ২০২৪-এ পা রাখছে দেশের বিরোধী জোট।

Mamata Banerjee: পেরিয়ে গেল মমতার দেওয়া সময়সীমা! নববর্ষে ডামাডোলই সঙ্গী 'ইন্ডিয়া'র
পেরিয়ে গেল মমতার দেওয়া ডেডলাইন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 31, 2023 | 8:55 PM

কলকাতা: পেরিয়ে গেল তৃণমূল কংগ্রেসের দেওয়া সময়সীমা। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সর্বশেষ বৈঠকে, আসন ভাগাভাগির বিষয়টি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই ৩১ ডিসেম্বরের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও, জোট নিয়ে রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক করতে পারল না কংগ্রেস। রাজ্যে রাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির মধ্যে আসন ভাগাভাগি কীভাবে হবে,তার কোনও রফাসূত্র এখনও বের হল না। বরং, সময় যত এগোচ্ছে, ততই বিরোধী জোট নিয়ে রাজ্যে রাজ্যে ঘোঁট পাকছে। কংগ্রেস অবশ্য আগেই জানিয়েছিল, আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত করার কোনও নির্দিষ্ট ডেডলাইন ঘোষণা করা সম্ভব নয়। কাজেই, জোট নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার নিয়েই নির্বাচনের বছর ২০২৪-এ পা রাখছে দেশের বিরোধী জোট।

বাংলা, কেরল, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য দলগুলির মধ্যে আসন ভাগাভাগি কীভাবে হবে, তা এখনও স্থির করতে পারেনি জোট শরিকরা। সর্বশেষ বৈঠকে জোটের নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, বিভিন্ন রাজ্যের রাজনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আসন ভাগাভাগির আলাদা আলাদা রফাসূত্র বের করা হবে। কিন্তু, সেই বৈঠকের পর থেকে বলতে গেলে এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপই করেনি কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। আম আদমি পার্টি বা তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও আলোচনাই করেনি কংগ্রেস। সমাজবাদী পার্টির সঙ্গেও কওনও বৈঠকও করেননি কংগ্রেস নেতারা। তার উপর মায়াবতীর দল, বসপার পক্ষ থেকে ইন্ডিয়া জোটে সামিল হওয়ার আগ্রহ দেখানো হয়েছে। বিরোধী জোটে মায়াবতী আসলে, অখিলেশ থাকবেন কিনা, তাই নিয়ে রয়েছে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা।

আসন ভাগাভাগি নিয়েযেটুকু আলাপ-আলোচনা হয়েছে, তা মহারাষ্ট্রে। শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে), ২৩টি আসন চেয়েছিল। দিতে রাজি হয়নি কংগ্রেস। রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, একনাথ শিন্ডের বিদ্রোহে শিবসেনা ভেঙে যাওয়ার পর, উদ্ধব গোষ্ঠীর হাতে এখন অতগুলি আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো উপযুক্ত নেতাই নেই। অন্যদিকে,স শিবসেনার রজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত মনে করিয়ে দিয়েছেন, বিগত লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্র থেকে কোনও আসনই জেতেনি কংগ্রেস। তাই, তাদেরকেও শূন্য থেকেই শুরু করতে হবে। অন্যদিকে, ইন্ডিয়া জোটের সর্বশেষ বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মল্লিকার্জুন খাড়্গের নাম প্রস্তাব করায়, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমান অসন্তুষ্ট বলে শোনা গিয়েছে। জোটের বিষয়ে তাঁর অবস্থান নিয়েও চূড়ান্ত ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

এবার আসা যাক বাংলার কথায়। আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা জারি রেখেছে কংগ্রেস। দিন কয়েক আগেই রাজ্যের কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী দাবি করেছিলেন, বাংলায় গত নির্বাচনে যে দুটি আসনে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস, সেই দক্ষিণ মালদহ এবং বহরমপুর আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়তে সম্মত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই অবশ্য তাঁর দাবি খারিজ করে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানান, আসন ভাগাভাগি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে হাইকমান্ড। তিনি আরও দাবি করেন, তৃণমূল কংগ্রেসই নাকি জোট চাইছে না। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুনাল ঘোষ খানিক কটাক্ষের সুরে বলেছেন, কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে জোটে গিয়ে নিজেদের অস্তিত্বই সংকটের মুখে ফেলেছে। কংগ্রেস এই দোনোমোনো চালিয়ে গেলে, তৃণমূল একাই লোকসভার প্রচার শুরু করে দিতে পারে। একমাত্র অবস্থায় স্পষ্ট বামেদের। কোনও পরিস্থিতিতেই তারা তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধতে নারাজ। তবে, কংগ্রেসের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করবে কিনা, তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা থেকেই গিয়েছে।

ইংরাজি প্রবাদে বলে, মর্নিং শোজ দ্য ডে। অর্থাৎ, দিন কেমন যাবে, তা বলে দেয় সকালবেলা। তেমনই, বছর কেমন যাবে, তার ইঙ্গিত পাওয়া যায় বছরের শুরুতেই। আসন ভাগাভাগি নিয়ে চূড়ান্ত ডামাডোল সঙ্গে নিয়েই চব্বিশে পা রাখতে চলেছে ইন্ডিয়া জোট। ইংরাজী প্রবাদ যদি সত্যি হয়, তাহলে নির্বাচনের বছরের শুরুটা ইন্ডিয়া জোটের জন্য মোটেই ভাল বার্তা দিচ্ছে না।