Arvind Kejriwal To PM Modi: ‘দয়া করে এই বাজেট বন্ধ করবেন না’, মোদীকে চিঠি কেজরীবালের
Arvind Kejriwal To PM Modi: আজ দিল্লি বিধানসভায় বাজেট পেশ হচ্ছে না। এর পিছনে কেন্দ্রকেই দায়ী করেছেন কেজরীবাল।
নয়া দিল্লি: এবার দিল্লি বাজেট নিয়ে শুরু জলঘোলা। মঙ্গলবার দিল্লি বিধানসভায় বার্ষিক বাজেট পেশ হওয়ার কথা ছিল। তবে সেই নির্ধারিত দিনে আজ হচ্ছে না বাজেট পেশ। এই নিয়ে কেন্দ্রের দিকেই আঙুল তুলেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। তিনি অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্র বাজেট অধিবেশনে বন্ধ করে দিয়েছে। এবার এই দিল্লি বাজেট বন্ধ না করার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি লিখলেন অরবিন্দ কেজরীবাল।
সোমবার রাজ্য বিধানসভায় আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্ট পেশ করেন নয়া নিযুক্ত অর্থমন্ত্রী কৈলাস গেহলট। আজ সকালে ১১ টায় বিধানসভায় বাজেট পেশের কথা ছিল তাঁর। তবে তা আর হচ্ছে না। এদিকে কেজরীবালের মন্তব্যে নতুন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, দিল্লি সরকার ও লেফটেন্যান্ট গভর্নরের মধ্যে অভিযোগের লড়াই শুরু হয়েছে। মোদীকে লেখা চিঠিতে কেজরীবাল জানিয়েছেন, “দেশের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও রাজ্যের বাজেট থামিয়ে দেওয়া হল। আপনার দিল্লির জনগণের প্রতি এত রাগ কেন?” তিনি আরও লিখেছেন, “দিল্লির জনগণ জোড় হাতে আবেদন করছেন, আমাদের বাজেট পেশ করতে দিন।”
প্রসঙ্গত, গতকাল কেজরীবাল ঘোষণা করেন, আজ দিল্লি বাজেট পেশ করা হবে না। আর এর জন্য তিনি কেন্দ্রকেই দায়ী করেন। নিয়ম অনুযায়ী, বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি প্রথম অনুমোদনের জন্য লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাছে পাঠানো হয়। তারপর তা মুখ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পাঠান। তারপর তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। এইসব প্রক্রিয়া পেরিয়েই দিল্লি বিধানসভায় বাজেট পেশ করা হয়।
লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অফিসের আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, লেফটেন্যান্ট গভর্নর সেই আর্থিক বিবৃতিতে অনুমোদন দিয়ে দিয়েছিলেন। তবে সেখানে কিছু পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়। তারপর গত ৯ মার্চ তা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “প্রস্তাবিত বাজেটে প্রশাসনিক প্রকৃতির কিছু উদ্বেগ ও রাজধানী অঞ্চলের আর্থিক স্বার্থের কথা মাথায় রেখে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কিছু পরিবর্তন করে দিল্লি সরকারকে এই বাজেট পুনরায় জমা দেওয়ার অনুরোধ করেছে। গত চার দিন ধরে দিল্লির উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছি। দিল্লির মানুষের সুবিধার জন্য দিল্লির সরকারের উচিত অবিলম্বে তাদের জবাব জানানো।”
এদিকে গেহলটের অভিযোগ, মুখ্যসচিব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই উদ্বেগের বিষয়ে সঠিক সময়ে তাঁদের জানাননি। তিনি একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “১০ ই মার্চ নিয়ম অনুসারে বাজেটটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। এখন জানা গিয়েছে, গত ১৭ মার্চ মুখ্যসচিবকে পাঠানো এক চিঠির মাধ্যমে দিল্লি সরকারের বাজেট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অনুমোদন দিতে অস্বীকার করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রহস্যজনক কারণে দিল্লির মুখ্যসচিব চিঠিটি তিন দিন লুকিয়ে রেখেছিলেন। আজ (সোমবার) দুপুর ২টার দিকে চিঠিটি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। দিল্লি বিধানসভায় বাজেট পেশের ঠিক আগের দিন সন্ধে ৬টায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চিঠি সহিত ফাইলটি আমার কাছে পেশ করা হয়েছে। এরপর আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উদ্বেগের জবাব দিয়েছি এবং মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনের পরে আজ রাত ৯ টায় ফাইলটি দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাছে জমা দিয়েছি।” এক্ষেত্রে মুখ্য সচিব ও অর্থ সচিবের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। গেহলট বলেছেন, “দিল্লির বাজেট বিলম্বিত করার জন্য দিল্লির মুখ্য সচিব এবং অর্থ সচিবের ভূমিকা খতিয়ে দেখা উচিত।”
এদিকে বর্ষীয়ান আপ আধিকারিক জানিয়েছেন, যদি আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে কোনও অনুমোদনও মেলে, তাহলেও আজ এই বাজেট পেশ হবে না। অন্যদিকে দিল্লি বিধানসভার স্পিকার আর এন গোয়েল বলেছেন, মঙ্গলবার বিধানসভার কার্যবিবরণীতে বাজেট পেশের উল্লেখ রয়েছে। তিনি বলেন, “সেটা এরকমই থাকবে। তবে আজ বাজেট পেশ না হলে আজ অর্থ মন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করবেন। দেখা যাক কী হয়।” নিউজ১৮ ইন্ডিয়ার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কেজরীবাল বলেন, “বাজেট পেশ হবে না মঙ্গলবার। দিল্লির সরকারি কর্মী, ডাক্তার, শিক্ষকরা বেতন পাবেন না।” এর জন্য কেন্দ্রের দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি। এই মর্মে মোদীকে চিঠি লিখে বাজেট পেশের আবেদনও জানিয়েছেন।