Petrol-Diesel Price: পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মোদী-মমতা তরজা! বিজেপি ও অবিজেপি রাজ্যগুলির দামে বিস্তর ফারাক

Fuel Price: ইউক্রেনে আক্রমণের পর গোটা বিশ্ব রাশিয়া বিরোধিতায় সরব হলেও ভারত সেই রাস্তায় যায়নি। পুরনো বন্ধু রাশিয়া ভারতকে কম দামে তেল বিক্রি করার কথা জানিয়েছিল, ভারতেরও সেই বিষয়ে যথেষ্টই আগ্রহী ছিল।

Petrol-Diesel Price: পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মোদী-মমতা তরজা! বিজেপি ও অবিজেপি রাজ্যগুলির দামে বিস্তর ফারাক
গ্রাফিক্স: অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 27, 2022 | 9:07 PM

কলকাতা: বুধবার সব রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি (Corona Pandemic) নিয়ে আলোচনার জন্য সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। কিন্তু বৈঠকে শেষে করোনার বদলে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গই সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছে। পেট্রোল-ডিজেলের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির ফলে নাভিঃশ্বাস উঠছে মধ্যবিত্তের। এক মাঝেই মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে রাজ্যের কোর্টেই বলল ঠেললেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে জ্বালানির ওপর কর কমানোর আবেদন জানিয়েছিল, যাতে মানুষের বোঝা কমে। পশ্চিমবঙ্গ, তেলাঙ্গানা, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্র প্রদেশ, কেরল, মহারাষ্ট্র ও দিল্লি কেন্দ্রের সেই আর্জি মানেনি, ফলে মানুষে বোঝা বেড়েছে। রাজ্যগুলি রাজস্ব বাবদ জ্বালানি থেকে কত রোজগার করেছে, সেই প্রসঙ্গে আমি যাচ্ছি না, তবে এখন আমি তাদের অনুরোধ করছি, করে বোঝা কমিয়ে মানুষের বোঝানোর কমানোর পদক্ষেপ করুন।” মোদীর মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। স্বভাব সিদ্ধ ভঙ্গিতেই তিনি বলেন, “কী ভাবে রাজ্য তেলের দাম কমাবে? আপনারাই তেলের দাম বাড়িয়েছেন, সেই থেকে আপনাদের কত রোজগার হয়েছে সেটা দেখুন। আপনি একতরফা কথা বলেছেন। জনতাকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির প্রশংসা করা হয়েছে। ওই রাজ্যগুলির কেন্দ্রের থেকে অনেক টাকা পায়। আমারা ৯৭ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের থেকে পাব, সেই টাকার অর্ধেক দিলেই জ্বালানির ওপর কর কমিয়ে দেব।”

মোদী-মমতার মন্তব্য নিয়ে তরজা হলেও পরিসংখ্যান কিন্তু অন্য কথা বলছে। বিজেপি শাসিত রাজ্য ও অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে জ্বালানির দামে বিস্তর ফারাক দেখা গিয়েছে।  বিজেপি শাসিত উত্তর ?প্রদেশে পেট্রোলের দাম যেখানে ১০৫.২১ টাকা/ প্রতি লিটার, সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গে পেট্রোলের দাম ১১৫.১২ টাকা/ প্রতি লিটার। বিজেপি শাসিত গুজরাটে পেট্রোলের দাম ১১৮.৩৬ টাকা/ প্রতি লিটার সেখানে অবিজেপি রাজ্য মহারাষ্ট্রে পেট্রোলের দাম ১০৫.৬৬ টাকা/ প্রতি লিটার।

নভেম্বর মাসেই তেলের দাম উর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণে রাজ্য সরকারগুলিকে ভ্যাট কমানোর আর্জি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের আবেদনে সাড়া দিয়ে ২২ টি রাজ্য জ্বালানির দামে কর ছাড় দিয়েছিল। তবে বেশ কিছু রাজ্য কেন্দ্রের প্রস্তাবে রাজি হয়নি, কর কমানোর পথে হাঁটেনি বেশ কিছু অ-বিজেপি রাজ্য। শুধুমাত্র পেট্রোল বিক্রি করে সেই রাজ্যগুলি রাজস্ব বাবদ যে পরিমাণ টাকা আদায় করেছে, তা দেখলে নিঃসন্দেহে অবাক হয়ে যেতে হয়। যেমন, শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি চালিত মহারাষ্ট্র সরকার পেট্রোল থেকেই ৩ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা আয় করেছে। ডিএমকে শাসিত তামিলনাড়ুও পেট্রোল থেকে নজরকাড়া আয় করেছে। পেট্রোল থেকে এই দক্ষিণী রাজ্য মোট ২ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা আয় করেছে।

ইউক্রেনে আক্রমণের পর গোটা বিশ্ব রাশিয়া বিরোধিতায় সরব হলেও ভারত সেই রাস্তায় যায়নি। পুরনো বন্ধু রাশিয়া ভারতকে কম দামে তেল বিক্রি করার কথা জানিয়েছিল, ভারতেরও সেই বিষয়ে যথেষ্টই আগ্রহী ছিল। তবে কূটনৈতিক দিকগুলিকে বাদ দিলে বাড়তে থাকা তেলের দামের কারণে শেষমেশ সমস্যায় পড়েছেন মধ্যবিত্ত খেটে খাওয়া মানুষ। কারণ জ্বালানির দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নিত্যনৈমিত্তিক জিনিসের দাম প্রতিনিয়তই বাড়ছেই। ফলে মধ্যবিত্ত মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। প্রধানমন্ত্রী করোনা বৈঠকে এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করা যে রাজ্যগুলির জ্বালানির দামে কর কমায়নি, তাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। একদিকে প্রধানমন্ত্রীর চাপ, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার মুখে রাজ্যগুলি কর লাঘব করার পথে হাঁটে কি না, সেটাই এখন দেখার।

আরও পড়ুন Post Poll Violence: শুক্রবারই শাহি দরবারে ভোট পরবর্তী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তরা, সময় দিয়েছেন রাষ্ট্রপতিও