Manipur: ৬টি এলাকায় আফস্পা ফেরানো নিয়ে চলছে আলোচনা? চিন্তা বাড়াচ্ছে মণিপুর

TV9 Bangla Digital | Edited By: জয়দীপ দাস

Nov 19, 2024 | 8:35 PM

Manipur: ১১ নভেম্বর রাতে জিরিবামে সিআরপিএফ ক্যাম্পে হামলা হয়। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যান ১০ যুবক। সিআরপিএফ দাবি করেছিল, ওই ১০ জনই জঙ্গি। ক্যাম্পে হামলা চালাতে এসেছিল। কুকি সংগঠনগুলো সেই অভিযোগ মানতে চায়নি।

Manipur: ৬টি এলাকায় আফস্পা ফেরানো নিয়ে চলছে আলোচনা? চিন্তা বাড়াচ্ছে মণিপুর
বেড়েই চলেছে উদ্বেগ
Image Credit source: Getty Images

Follow Us

সকাল থেকে দফায়, দফায় বৈঠক, ভিডিয়ো কনফারেন্স করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাজ্যের সব জেলায় নিরাপত্তা ঢেলে সাজানোর নির্দেশ দিলেন। নির্দেশ হল, এখনই আরও ৫০ কোম্পানি আধাসেনা মণিপুরে পাঠানো হবে। প্রয়োজনে আরও ফোর্স মণিপুরে যাবে। এনআইএ-র টিম ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি টিমও মণিপুরে যাবে। অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান হবে। পাশাপাশি যুযুধান দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে নতুন করে শান্তি – আলোচনাও শুরু হবে। সঙ্গে আরও ৬টি এলাকায় আফস্পা ফেরানো নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলেও জানিয়েছেন অমিত শাহ। কিন্তু, এই দাওয়াই তো নতুন কিছু নয়। এতে তাতে কাজের কাজ কিছু হবে কী? 

দেড় বছর পরও জ্বলছে মণিপুর  

গত দেড় বছর ধরে মিটিং, আলোচনা কিছু কম হল না। তাতে যে কাজের কাজ খুব একটা হয়নি বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের বড় অংশের। ২০২৩ সালে মে মাস। হাইকোর্টের একটি রায়কে কেন্দ্র করে দাঙ্গা, সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। দেড় বছর পরও মণিপুর জ্বলছে। ছোট্ট রাজ্যটার বেশ কয়েকটা এলাকা, বিশেষত জিরিবাম জেলা ফুটন্ত লাভার উপর দাঁড়িয়ে। অবস্থা এতটাই খারাপ যে গতকাল মহারাষ্ট্রে নির্বাচনী সফর বাতিল করে দিল্লি ফিরতে হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। নদীতে লাশ ভেসে আসা থামছে না। দুই সম্প্রদায়ের সংঘর্ষ থামার লক্ষণ নেই। এমনকি নিরাপত্তাকর্মীদের পাশাপাশি এবার নেতা-মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধিদের উপরও হামলা হচ্ছে। রেহাই পাচ্ছে না সামাজিক সংগঠন, এনজিও এমনকি ক্লাবও। কুকি ও মেইতেইদের ঝগড়া দিয়ে যে ঘটনার শুরু, সেটা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জটিল আকার নিয়েছে।

এই খবরটিও পড়ুন

১১ নভেম্বর রাতে জিরিবামে সিআরপিএফ ক্যাম্পে হামলা হয়। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যান ১০ যুবক। সিআরপিএফ দাবি করেছিল, ওই ১০ জনই জঙ্গি। ক্যাম্পে হামলা চালাতে এসেছিল। কুকি সংগঠনগুলো সেই অভিযোগ মানতে চায়নি। তাঁরা পাল্টা বলে, ওরা মোটেও জঙ্গি ছিল না। গ্রামরক্ষী বাহিনীর সদস্য ছিল। ওই নিরীহ যুবকদের গুলি করে মেরেছে আধাসেনা ও পুলিশ। গত কয়েকদিন ধরে যা চলছে সেটা ওই ঘটনার প্রতিশোধ, পাল্টা প্রতিশোধ। পরে অপহরণ, পরে খুন করে নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেওয়া। তার পাল্টা হিসাবে খুন, লুঠপাট, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া। গত ৭ দিনে মহিলা, শিশু, যুবক এমনকি ৭০ বছরের এক বৃদ্ধাকে খুন করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেইতেই সংগঠনগুলির অভিযোগ, ১০ জঙ্গির হত্যার বদলা নিতেই মেইতেইয়ের খুন করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর এর রেশ জিরিবাম ছাড়িয়ে এমনকি ইস্ফলেও ছড়িয়ে পড়েছে। 

বাড়ছে উদ্বেগ 

শনিবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের বাড়ির দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। রবিবার রাজ্যের আরও ৫- ৬ জন নেতা-মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা হয়। সোমবার সকালে জিরিবামে কংগ্রেস ও বিজেপিতে আগুন লাগানো হয়। কোনওমতে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন দুই রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। বিকেলের দিকে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে অন্তত ১ জনের মৃত্যু খবর এসেছে। মণিপুরের স্থানীয় একটি নিউজ পেপারের সম্পাদক রিঙ্কু খুমুকচাম বলছেন, কুকি এলাকায় মেইতেই বা মেইতেইদের এলাকায় কিকুদের থাকতে দেওয়া হবে না। এটাই শেষ লক্ষ্য। অত্যন্ত বিপজ্জনক এক প্রবণতা। মণিপুরে ভাঙন রোখাটাই এই মুহূর্তে কেন্দ্রের লক্ষ্য হওয়া উচিত। এদিন মণিপুরে বিজেপি সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছে নাগাল্যান্ডে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি বা এনপিপি। এনপিপি’র শীর্ষনেতা কনরাড সাংমার দাবি, মণিপুরের পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ বীরেন সিং। সোমবার বিকেলেও ইম্ফলের রাস্তায় মিছিল করল মেইতেই সংগঠনগুলি। একদা তাঁদের চোখের মণি মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং-ই এখন তাঁদের চক্ষুশূল। এদিক থেকে অন্তত মেইতেই আর কুকিদের দাবি মিলে যাচ্ছে। দু-পক্ষই মুখ্যমন্ত্রীকে সরানোর দাবিতে সরব। কিন্তু চাইলেও এই মুহূর্তে বীরেনকে সরানো কঠিন। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত জল কোনদিকে গড়ায়।

Next Article