কৃষকের ন্যায্য মূল্যের দাবির পক্ষে রিলায়্যান্স, ‘চুক্তি চাষের পরিকল্পনাও নেই’

মঙ্গলবার পঞ্জাবে রিলায়েন্সের অনন্ত ২ হাজার টেলিকম টাওয়ার ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। জায়গায় জায়গায় কেটে দেওয়া হয়েছে রিলায়েন্সের টেলি যোগাযোগের তার।

কৃষকের ন্যায্য মূল্যের দাবির পক্ষে রিলায়্যান্স, ‘চুক্তি চাষের পরিকল্পনাও নেই’
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 04, 2021 | 7:20 PM

নয়া দিল্লি: কৃষকদের দাবির পক্ষে মুকেশ অম্বানী (Mukesh Ambani)। ‘বিস্মিত করার মতো বিবৃতি’তে রিলায়্যান্স জানিয়েছে, কোম্পানি কৃষকদের ফসলের ন্যায্য মূল্যের পক্ষে। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মুকেশ অম্বানীর সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, কৃষক তাঁদের ফসলের “ন্যায্য এবং লাভজনক” মূল্যের যে দাবি করছে রিলায়্যান্স তার পক্ষে। শুধু তাই নয়, কর্পোরেট ধাঁচে ‘চুক্তি চাষ’-এর যে কোনও পরিকল্পনাও তাদের নেই, সে কথাও জোর দিয়ে বলা হয়েছে রিলায়্যান্সের ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।

রিলায়্যান্সের বিবৃতি

“কর্পোরেট কিংবা চুক্তি চাষের উদ্দেশ্য নিয়ে রিলায়্যান্স অথবা আমাদের সহকারি কোনও সংস্থাই পঞ্জাব বা হরিয়ানায় কোনও জমি কেনেনি। আমাদের এই বিষয়ে কোনও রকম কোনও পরিকল্পনা নেই। ”

আন্দোনকারী কৃষকদের দাবি

শুধু মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স নয়, গৌতম আদানির (Gautam Adani) আদানি গ্রুপ (Adani Group), এই দুই সংস্থাই কেন্দ্র সরকারের নতুন কৃষি বিলের মুনাফা পাবে, এই মর্মে প্রতিবাদের সুর চ়ড়েছে। সেপ্টেম্বর থেকেই রাজধানীর সীমানা জুড়ে পঞ্জাব, হরিয়ানা সহ দেশের আরও বিভিন্ন রাজ্যের কৃষকরা অবিরাম আন্দোলন (Farmer’s Protest) করছেন। কৃষকদের বিশ্বাস, সরকার আদানি ও আম্বানিদের সঙ্গে ‘অসাধু আঁতাত’ গড়েই এই আইন প্রণয়ন করেছে। তাঁদের আরও দাবি, আদানি ও অম্বানীরা পঞ্জাব ও হরিয়ানায় বিপুল কৃষি জমি কিনে রেখেছে। পরবর্তীতে সেখানে কর্পোরেট ধাঁচে চাষাবাদ হবে এবং একই সঙ্গে তৈরি হবে বেসরকারি মান্ডি। আর সেটা হলে সরকারি মান্ডির অস্তিত্ব থাকবে না। এতে কৃষকরা তাঁদের ফসলের লাভজনক অর্থ তো দূর সহায়ক মূল্য থেকেও বঞ্চিত হবে। এর প্রতিবাদেই চলছে আন্দোলন।

রিলায়্যান্স নিজেদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবিই নস্যাৎ করেছে। পঞ্জাব ও হরিয়ানা, এই দুই রাজ্যে কোনও চাষি জমি কেনা হয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে রিলায়্যান্স জানিয়েছে, “চুক্তি করে চাষ এবং কৃষকদের থেকে অসাধু উপায়ে কোনও সুযোগ সুবিধা” নেওয়ার কোনও ফন্দি আঁটা হয়নি।

উল্টে রিলায়্যান্সের দাবি, কৃষকরা যেন নিজেদের রক্ত জল করা পরিশ্রমের যথাযথ পারিশ্রামিক পায়, ফসল যেন লাভজনক অর্থে বিক্রি হয়, তার জন্য সব রকমই সহায়তা করা হবে।

রিলায়্যান্সের টাওয়ার ভাঙচুর

যদিও দেশের অন্যতম বড় টেলিকম নেটওয়ার্কের এই দাবি ‘অন্নদাতা’-রা মানতে নারাজ। পঞ্জাবে অগস্ট থেকেই চলছে আন্দোলন। সময় যত এগিয়েছে আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও তীব্র হয়েছে। অতি সম্প্রতি পরিস্থিতি কিছুটা ‘হিংসাত্মক’ আকারও নিয়েছে। গত মঙ্গলবারই পঞ্জাবে রিলায়্যান্সের অনন্ত ২ হাজার টেলিকম টাওয়ার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। জায়গায় জায়গায় কেটে দেওয়া হয়েছে রিলায়্যান্সের টেলি যোগাযোগের তার। পরিস্থিতি আরও হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগে পঞ্জাব ও হরিয়ানার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রিলায়্যান্স জিও ইনফোকম (Reliance Jio Infocomm)। প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে এই ‘তাণ্ডব’-কে যেন অবদমিত করে সেই দাবিই জানিয়েছে মুকেশের কোম্পানি।

সোমবার রিলায়্যান্সের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, এই ভাঙচুরের পিছনে নিশ্চয়ই কোনও ব্যবসায়িক স্বার্থ রয়েছে। তাদের অভিযোগ দুই প্রতিযোগী ভারতী এয়ারটেল (Airtel) এবং ভিআইয়ের (VI) দিকে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এয়ারটেল।