কাশ্মীরে সফল G20 সম্মেলন, কীভাবে ‘অসম্ভব’কে সম্ভব করল NSG ও MARCOS বাহিনী?

শ্রীনগর: বুধবার (২৪ মে), জম্মু ও কাশ্মীরে নির্বিঘ্নেই সমাপ্ত হল জি২০ পর্যটন মন্ত্রীদের সম্মেলন। প্রায় ৬০টি দেশের প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে অংশ নেন। জম্মু ও কাশ্মীরে কেন বৈঠক করা হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে একদিকে যেমন এই হাই প্রোফাইল বৈঠকে যোগ দেয়নি চিন, তেমনই আরেকদিকে এই বৈঠককে কেন্দ্র করে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল পাকিস্তান মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীরা। ২৬/১১ মুম্বই হামলার ধাঁচে হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে এই বৈঠক। বৈঠকে হামলা হতে পরে, গোয়েন্দা সূত্রে এই খবর পেয়েই বৈঠক স্থলে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এনএসজি এবং মার্কোসের মতো শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। শুধু বৈঠকস্থলেই নয়, অংশগ্রহণকারী বিদেশী প্রতিনিধিরা যে যে হোটেলগুলিতে উঠেছিলেন এবং তাঁরা যে যে জায়গাগুলি পরিদর্শন করেন সেই সকল এলাকাগুলিতেও এনএসজি এবং মার্কোস কমান্ডোদের মোতায়েন করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল।

#Video: For the three-day Summit, the National Security Guard (NSG), the MARCOS commandos, and Jammu and Kashmir Police’s special operation group (SOG) have been deployed in and around the Sher Kashmir International Convention Center (#SKICC), the venue for the meeting. pic.twitter.com/oYWIPXPH7n

— Seher Mirza (@SeherMirzaK) May 22, 2023

বৈঠকের আগেই গোয়েন্দা সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছিল যে, জি-২০ পর্যটন মন্ত্রীদের বৈঠক চলাকালীন, কাশ্মীরে ২৬/১১ মুম্বাই হামলার মতো সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানো হতে পারে। বস্তুত, উপত্যকায় যাতে কোনওভাবেই জি২০ সম্মেলন সফল না হয়, তার জন্য পিছন থেকে কলকাঠি নেড়েছিল পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। কাশ্মীরে যাতে বিদেশি বিনিয়োগ না আসে এবং কোনওভাবেই উন্নয়নের কাজ না এগোয়, তা নিশ্চিত করতে চেয়েছিল সন্ত্রাসীবাদীরা। সন্ত্রাসবাদীরা গুলমার্গের একটি হোটেলকে নিশানা করেছে বলেও খবর পাওয়া গিয়েছিল। ওই হোটেলেই বিদেশী প্রতিনিধিদের ওঠার কথা ছিল। ওই হোটেলে কর্মরত এক ব্যক্তিকে আটক করে বিষয়টি জানতে পেরেছিল নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। মূল অনুষ্ঠানেও পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে বলে জানিয়েছিল সেনার গোয়েন্দা বিভাগ। গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা গিয়েছিল, কাশ্মীরে আসা জি-২০ দেশের প্রতিনিধিদের উপর আত্মঘাতী হামলা চালানোর ষড়যন্ত্র চলছে। একই সময়ে তিনটি স্থানে হামলা করার পরিকল্পনা করেছিল তারা। বস্তুত, উপত্যকায় জঙ্গিদের প্রতিটি পদক্ষেপের উপর নজর রাখা হয়েছিল।

After #NSG & #Marcos Now #CRPF Commandos all geared up for upcoming #G20 summit in #Srinagar.#G20Kashmir #G20_20_in_kashmir #G20Summit #2000notes pic.twitter.com/rd6axlpOrq

— Soldier’s Life ?? (@life_soldiers47) May 20, 2023

এই সকল গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পরই, ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সবথেকে এলিট ফোর্স এনএসজি এবং মার্কোস বাহিনীকে বৈঠক এলাকার নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে জি-২০ পর্যটন মন্ত্রীদের বৈঠকে আগত বিদেশি প্রতিনিধিদের হোটেলগুলি শেষ মুহূর্তে হদলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানস্থল গুলমার্গ থেকে অন্য এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়। শ্রীনগরের বিখ্যাত ডাল লেক-সহ জি-২০ দেশের প্রতিনিধিদের যে যে জায়গায় যাওয়ার কথা ছিল, প্রতিটি জায়গাতেই এনএসজি এবং মার্কোস কমান্ডোদের দিয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল। গোটা শ্রীনগর শহরই সিসিটিভি ক্যামেরা এবং ড্রোন নজরদারিতে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। এছাড়া, নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল জম্মুতেও। চেনাব নদীতেও মার্কোস বাহিনী আকাশপথে নজরদারি চালায়। আর এই ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিয়েই সন্ত্রাসবাদী হুমকি উড়িয়ে জম্মু ও কাশ্মীরে সফলভাবে জি-২০ পর্যটনমন্ত্রীদের সম্মেলন আয়োজন করল ভারত।