Lok Sabha Election 2024: কাঠফাটা গরমেই কেন লোকসভা নির্বাচন হয়, জানেন?

Lok Sabha Election 2024: সংবিধানের ৮৩(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, পূর্ববর্তী লোকসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নির্বাচন হয়। এক্ষেত্রে লোকসভা আগেই ভেঙে না গেলে, লোকসভার প্রথম বৈঠকের ৫ বছরের মেয়াদ পূরণের পর নতুন লোকসভা তৈরি করা হয়। 

Lok Sabha Election 2024: কাঠফাটা গরমেই কেন লোকসভা নির্বাচন হয়, জানেন?
ফাইল চিত্র।Image Credit source: Facebook
Follow Us:
| Updated on: Apr 18, 2024 | 1:43 PM

নয়া দিল্লি: এপ্রিল মাসের তীব্র গরম। দাবদাহে পুড়ছে গোটা দেশ। তার মধ্যেই হতে চলেছে লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election 2024)। তাপপ্রবাহের (Heatwave) মধ্যে নির্বাচন হওয়ায়, ভোটারদের সতর্ক করা হয়েছে। এই তীব্র গরমে শরীর সুস্থ রাখতে নির্বাচন কমিশনের তরফেও নানা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এবার প্রশ্ন হল, এই কাঠফাঁটা গরমেই কেন ভোট হয়?

এপ্রিল-মে মাসে সরকারের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হয়। এই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই লোকসভা নির্বাচন হয়। এক্ষেত্রে একটি চলিত যুক্তি রয়েছে যে গ্রীষ্মকালে দিন বড় এবং রাত ছোট হয়। ভোট গ্রহণের জন্য অধিক সময় পেতেই লোকসভা নির্বাচন গ্রীষ্মকালে হয়। তবে আসলে আগের সরকারের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই লোকসভা নির্বাচন হয়। এক্ষেত্রে আগের সরকার যদি ৫ বছরের মেয়াদ পূরণ করার আগেই ভেঙে যায়, তবে নির্বাচনও এগিয়ে আসবে।

প্রথম নির্বাচন কিন্তু গ্রীষ্মে নয়, বরং কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই হয়েছিল। ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসে চরম ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতেই প্রথমবার লোকসভা নির্বাচন হয়েছিল। প্রায় ৯ লক্ষ ভোটার ভোট দিয়েছিলেন সেই নির্বাচনে। সেই সময়ে এখনকার মতো ৫ বা ৭ দফায় নয়, ৬৮ দফায় ভোট গ্রহণ হত। হিমাচল প্রদেশে ১৯৫১ সালের শেষভাগেই ভোটগ্রহণ হয়েছিল পরে প্রতিকূল তাপমাত্রা এড়াতে।

সেখানেই যদি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের চিত্র দেখি, তবে তীব্র দাবদাহের মধ্যে এবার নির্বাচন হতে চলেছে। মৌসম ভবনের তরফে দেশের একটা বড় অংশ জুড়েই তাবপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে তাপপ্রবাহ সবথেকে দীর্ঘ ও শক্তিশালী হবে। ৪৪ দিন দীর্ঘ এই নির্বাচন নিয়ে অনেক রাজনীতিবিদরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

লোকসভা নির্বাচনের ইতিহাস-

বিগত পাঁচ দশক ধরে শীতকালে লোকসভা নির্বাচন হত। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় সেই টাইমলাইনে বদল আনা হয়। শীত থেকে গ্রীষ্মকালে নির্বাচন সরিয়ে আনা হয়।

সংবিধানের ৮৩(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, পূর্ববর্তী লোকসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নির্বাচন হয়। এক্ষেত্রে লোকসভা আগেই ভেঙে না গেলে, লোকসভার প্রথম বৈঠকের ৫ বছরের মেয়াদ পূরণের পর নতুন লোকসভা তৈরি করা হয়।

প্রথমবার, ১৯৫২ সালে যেহেতু ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন শেষ হয়েছিল, সেই হিসাব অনুযায়ীই নির্বাচন হত। দেশের প্রথম সাতটি লোকসভা নির্বাচন ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে হয়েছিল। সবথেকে কম দিনের নির্বাচন হয়েছিল ১৯৮০ সালের জানুয়ারি মাসে। মাত্র ৩ দিনেই লোকসভা ভোট পর্ব মিটিয়ে ফেলা হয়।

মেয়াদ পূরণের আগেই নির্বাচন-

তবে লোকসভা নির্বাচনের ইতিহাসে বেশ কয়েকবার সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেও নির্বাচন হয়েছে। প্রথমবার ১৯৮৪ সালে, ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার পর ডিসেম্বর মাসেই নির্বাচন করানো হয়। ১৯৮৯ সালে ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

এরপরে ১৯৯১ সালে ভিপি সিংয়ের নেতৃত্বে জনতা পার্টির সরকার ভেঙে যাওয়ায় এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী চন্দ্র শেখর বাজেট পেশ করতে ব্যর্থ হওয়ায়, জুন মাসেই নির্বাচন করা হয়। মেয়াদ পূরণের আগেই সরকার ভাঙায়, পরের নির্বাচন ৫ বছরের ব্যবধান রেখে ১৯৯৬ সালের এপ্রিল মাসে পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন হয়।

এরপরে ১৯৯৮ সালে ইউনাইটেড ফ্রন্টের জোট ক্ষমতায় আসার পরও সরকার ভেঙে যায়। ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফের লোকসভা নির্বাচন করা হয় এনডিএ জোট ভেঙে যাওয়ায়। ২০০৪ সালের অক্টোবর মাসে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও, অটল বিহারী বাজপেয়ীর বিজেপি সরকার আগেই সংসদ ভেঙে দেয় এবং ওই বছরই এপ্রিল মাসে নির্বাচন হয়।