Bengal Panchayat Election: বাড়িতে ঢুকে বিজেপি প্রার্থীর হাতে ফোন দিল ২ অপরিচিত, ওপারে কাতর আর্তি স্বামীর, ‘ওরা আমাকে মেরে ফেলবে’
Bengal Panchayat Election: আধার কার্ড ব্যাগে ঢুকিয়ে ছোট বাগু অঞ্চলের বাসিন্দা সান্তা মণ্ডল সোজা হাজির বিডিও অফিসে।
কলকাতা: কৈখালি থেকে গাছের অর্ডার এসেছিল নার্সারি ব্যবসায়ী বাবলু মণ্ডলের কাছে। এমন অর্ডার প্রায়ই আসে। তাই কথা না বাড়িয়ে গাছ পৌঁছে দিতে রাজিও হয়ে যান বাবলু। দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। কিছুক্ষণ পর সেই বাবলুর বাড়ির কাছে হাজির একটি গাড়ি। গাড়ি থেকে নেমে দুজন ঢুকে গেলেন সোজা বাড়ির ভিতর। বাবলুর স্ত্রীর হাতে ধরিয়ে দিলেন ফোন, ‘স্বামীর সঙ্গে কথা বলুন।’ ওপার থেকে ভেসে এল বাবলুর কাঁপা কাঁপা কণ্ঠস্বর, ‘এখনই মনোনয়ন তোলো, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।’ না, কোনও সিনেমার প্লট নয়, এমনই অভিযোগ সামনে এনেছেন রাজারহাটের চাঁদপুর পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থী।
মনোনয়ন পেশের সময় বাংলায় যে ছবি দেখা গিয়েছে, তাকে যুদ্ধক্ষেত্রে সঙ্গে তুলনা করেছেন কেউ কেউ। আর মনোনয়ন পেশ হওয়ার পর যে সব অভিযোগ সামনে আসছে, তা হার মানাচ্ছে বলিউডকেও। স্বামীকে আটকে রেখে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০৭ নম্বর আসনে বিজেপির মহিলা প্রার্থী শান্তা মণ্ডলকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের।
অভিযোগ ঘিরে যখন উত্তেজনা তুঙ্গে, তখন কী করলেন ওই মহিলা প্রার্থী? আধার কার্ড ব্যাগে ঢুকিয়ে ছোট বাগু অঞ্চলের বাসিন্দা শান্তা মণ্ডল সোজা হাজির বিডিও অফিসে। তাঁর মুখে একটাই কথা, ‘তুলে নেব, আমি মনোনয়ন তুলে নেব।’ কেন তুলবেন মনোনয়ন? সোমবার দুপুরে ঠিক কী হয়েছে, তা নিজে মুখে বললেও কারও বিরুদ্ধে নাকি অভিযোগ নেই তাঁর। তিনি বলেন, “স্বামীকে আটকে রেখেছে। ছেলেও বাড়িতে অশান্তি করছে। আমার স্বামী বলেছেন, ব্যবসা করে খাই, ব্যবসা করে খাব।” তিনি জানিয়েছেন, ওই দুই ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে এসে, ফোন দিয়ে কথা বলতে বলেছিলেন। ফোনে তাঁর স্বামী বলেছেন, “এখনই আধার কার্ড নিয়ে যাও। মনোনয়ন তোলো, না হলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।”
প্রার্থী জানান, তিনি ওই দুজনকে বসিয়ে রেখে বাড়ির অন্য দরজা দিয়ে বেরিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। সেখান থেকেই বিডিও অফিসে পৌঁছন। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে উপস্থিত হয় বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব। তাঁরা আশ্বাস দেন, কোনও চিন্তা নেই, তোমার স্বামীকে আমরা ফিরিয়ে দেব। তাতেও মহিলার উদ্বেগ কাটেনি।
কলকাতা উত্তর শহরতলির বিজেপির সহ-সভাপতিও উপস্থিত ছিলেন বিডিও অফিসে। তিনি বলেন, সারা বাংলায় একই ঘটনা আছে। প্রথম মনোনয়ন দিতে দিয়েছে। এবার সেগুলো তোলার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার ৩ টে পর্যন্ত প্রত্যাহারের সময় আছে। তার মধ্যে অনেক কিছু করবে। আর শান্তা মণ্ডল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কী করবে বেচারি, গরিব মানুষ, বাড়িতে দুই সন্তান আছে।’ তবে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি ছাড়ার পাত্র নয়। একজনও মনোনয়ন প্রত্যাহার করলে রাজারহাট স্তব্ধ করে দেবেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।