কলকাতা: মমতাকে বহিষ্কার করায় আজও খেসারত দিতে হচ্ছে কংগ্রেসকে। কয়েকদিন আগেই এ কথা বলতে শোনা গিয়েছিল প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যকে। তারপর থেকেই তা নিয়ে চাপানউতোর জারি আছে। এবার যেন প্রদীপের কথাতেই সিলমোহর দিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোজা কথায়, বর্ষীয়ান কংগ্রেসের নেতার ওই মন্তব্য টাইম মেশিনে চড়িয়ে দিয়েছে বঙ্গ রাজনীতিকে। ২০২৫ থেকে সটান ১৯৯৮। সেই সময় বাংলায় কংগ্রেস ভেঙে জন্ম নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। যা নিয়ে ২৭ বছর পরেও আক্ষেপ ঝরে পড়ছে প্রদীপ ভট্টাচার্যের গলায়।
গত রবিবার খানিক আক্ষেপের সুরেই প্রদীপকে বলতে শোনা যায়, “সোমেন মিত্রের ফোন এল আমার কাছে। আমাকে বললেন, সীতারাম কেশরী বলেছিলেন, ইউ হ্যাভ টু ডু ইট। ওকে তোমাকে বহিষ্কার করতেই হবে। কারণ আমরা করেছি। আমি সোমেনকে বলেছিলাম, তুমি করো না, কিছুতেই করো না। কিন্তু সোমেনের ওপর তখন এমন চাপ তৈরি করা হয়েছিল, তা করতে বাধ্য হল। প্রায়শ্চিত্তটা তাই কংগ্রেস দলকে আজও করতে হচ্ছে।”
প্রদীপ ভট্টাচার্য লোকসভার প্রাক্তন সাংসদ, রাজ্যসভারও প্রাক্তন সাংসদ। কংগ্রেস আমলে রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। ২০১১ সালে পরিবর্তনের কালে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি। তখন রাজ্যে তৃণমূলের জোট সঙ্গী কংগ্রেস। বস্তুত, তৃণমূলের বদান্যতাতেই ২০১৭ সালে কংগ্রেসের হয়ে রাজ্যসভায় যান প্রদীপ। এবার সেই প্রদীপ পেয়ে গেলেন মমতার সিলমোহর। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই প্রদীপের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, “উনি তো ঠিকই বলেছেন।”
এর আগে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষও প্রদীপ ভট্টাচার্যকে সমর্থন করেছিলেন। সাফ বলেছিলেন, “উনি সঠিক কথা বলেছেন। কংগ্রেস নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিপিএম বিরোধী লড়াইটাকে স্বীকৃতি দেয়নি। কোণঠাসা করেছিল, বহিষ্কার করেছিল। তার ফল কংগ্রেস ভুগছে। মমতা নতুন দল গঠন করেছিলেন বলেই আজ সিপিএমের পতন হয়েছে।”
যদিও প্রদীপকে বিঁধতে ছাড়েনি সতীর্থ অধীর চৌধুরী। অধীর বলেন, “আজকে কারও আফসোস হতে পারে। কিন্তু, আগামীদিনে ইতিহাস প্রমাণ করবে মমতা শুধু কংগ্রেসকে নয় এই বাংলার সংস্কৃতিকে ধ্বংসকে করে বর্বরদের রাজনীতিতে পরিণত করেছিলেন।” কটাক্ষ করেছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তাঁর দাবি, “প্রদীপ ভট্টাচার্য ইতিহাসকে বিকৃত করছেন। ওনার মনে হয় তৃণমূলে গিয়ে বিধায়ক হওয়ার ইচ্ছা হয়েছে।”