কলকাতা: শুধুমাত্র ভুয়ো আইএএস সেজে ভ্যাকসিন দেওয়াই নয়, দেবাঞ্জনের একের পর এক কীর্তি সামনে আসছে, যা হার মানাচ্ছে সিনেমার স্ক্রিপ্টকেও। জানা গিয়েছে, পুলিশ সেজে বাসন্তী হাইওয়েতে অভিযান চালিয়েছিলেন দেবাঞ্জন। পুলিশি জেরার মুখে এ কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। লকডাউন মানা হচ্ছে কিনা, সেটা দেখতেই নাকি ভুয়ো অফিসার সেজে গিয়েছিলেন দেবাঞ্জন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দেহরক্ষী অরবিন্দ। ওই দেহরক্ষীও জেরায় এই অভিযানের কথা স্বীকার করেছেন।
জানা গিয়েছে, গাড়ি নিয়ে, রক্ষী নিয়ে এমনভাবে অভিযানে নেমেছিলেন দেবাঞ্জন, যা দেখে বিন্দুমাত্র সন্দেহ হয়নি এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের। নীচুতলার কর্মীরা তাঁকে চিনতে পারেননি বলে নিজেই জানিয়েছেন দেবাঞ্জন। অন্যান্য পুলিশকর্মীদের সঙ্গে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন লাঠি হাতে। কেউ বিধি-নিষেধ ভেঙে রাস্তায় নামছেন কি না, সবাই মাস্ক পরছেন কি না, এ সবই দেখেছিলেন দেবাঞ্জন। শুধু তাই নয়, দেবাঞ্জনের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে বিএসএফের পোশাক। তাতে লাগানো ছিল ব্যাজ ও লেখা ছিল নিজের নাম। তবে বিএসএফ অফিসার সেজে তিনি কোনও কাজ করেছিলেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: বিধানসভার আদব কায়দা শেখাতে বিজেপির ‘কোচিং’, ক্লাস নিচ্ছেন ‘দিলীপ স্যার’, ‘শুভেন্দু স্যার’
তবে পুলিশ, মন্ত্রী কিংবা রাজ্যের নেতা-নেত্রীদের ঘোল খাওয়ানো যে দেবাঞ্জনের অভ্যাস ছিল, সেই প্রমাণ আগেই মিলেছে। সেই কারণেই তাঁর ভ্যাকসিন ক্যাম্পে টিকা নিতে গিয়েছিলেন খোদ সাংসদ মিমি চক্রবর্তীও। শুধু তাই নয়,তৃণমূলের কোর কমিটি গঠনের নামেও প্রতারণা করেছিলেন তিনি। একাধিকবার শিলিগুড়িতে গিয়ে তৃণমূলের নেতা, ঠিকাদার, চা বাগান মালিকের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন দেবাঞ্জন। সেখান থেকে কয়েক কোটি টাকা তোলা হয়েছে বলেও অভিযোগ। পর্যটন দফতরের মৈনাক ট্যুরিজম লজে তিনি থাকতেন। নিজেকে আএএস বলেই পরিচয় দিতেন। সঙ্গে রাখতেন নিরাপত্তারক্ষীদেরও। তৃণমূলের লিগাল সেলের নেতা অত্রি শর্মার স্পষ্ট দাবি, আইএএস পরিচয় দিয়ে দেবাঞ্জন একাধিকবার তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেন, অন্যান্যদের মতোই সন্দেহ হয়নি তাঁরও।