কলকাতা: সাজ সাজ রব ছিল বেশ কয়েকদিন ধরেই। অবশেষে বৃষ্টি ভেজা রবির সকালেই থিকথিক করছে ভিড় ধর্মতলায়। লোকসভা নির্বাচনে বড় জয়ের পর ফের একুশে জুলাইয়ে মঞ্চে দেখা যাবে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সকাল থেকেই উৎসবের মেজাজ ঘাসফুল শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। শুক্র-শনিবার থেকেই কলকাতায় আসতে শুরু করেছিলেন দূর-দূরান্তের তৃণমূল কর্মীরা। হাওড়া স্টেশন থেকে শিয়ালদহ স্টেশন, সর্বত্রই হাজার হাজার মানুষের ভিড়। এদিকে কলকাতাতেও চার জায়গা থেকে চারটি বড় মিছিল আসছে ধর্মতলার শহিদ দিবসের মঞ্চে। শ্যামবাজার, হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশন এবং হাজরা মোড় থেকে চারটি বড় মিছিলের জমায়েত আসছে ধর্মতলার উদ্দেশ্যে।
বাংলাদেশে যদি আপনাদের কোনও পরিবার থাকে, পরিজন থাকে, কেউ পড়াশোনা করতে যান, চিকিৎসা করাতে এসে ফিরতে না পারেন, যদি কোনও সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, আমাকে বলবেন। অসহায় মানুষ বাংলার দরজায় খটখটানি করে, তাহলে আমি নিশ্চয়ই আশ্রয় দেব। আমি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কোনও কথা বলতে পারি না, কারণ বাংলাদেশ একটা আলাদা দেশ, কথা বললে ভারত সরকার করবে। কেউ যদি রিফিউজি হয়ে যায়, পার্শ্ববর্তী এলাকা সম্মান জানাবে। অসমে যখন সমস্যা হয়েছিল, আলিপুরদুয়ারে ছিলেন অনেকে। আমি গিয়েছিলাম দেখা করতে। তবে একটা কথা বলছি, বাংলাদেশ নিয়ে আমরা যেন কোনও প্ররোচনায় না যাই, কোনও প্ররোচনায় পা না দিই। আমাদের সহমর্মিতা, দুঃখ থাকবে। আমরা খবর রাখছি। ছাত্রছাত্রীদের প্রাণ যাচ্ছে: মমতা
যেখানে যেখানে জিতেছেন, ভাল করে মানুষকে গিয়ে ধন্যবাদ জানাবেন। পারবেন না, দলকে জানাবেন। আর যেখানে আমরা জিতিনি, সেখানে ঘরে ঘরে গিয়ে বলবেন, আমাদের ক্ষমা করবেন, হয়তো আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে কোথাও খামতি ছিল, আগামী দিনে দেখব। বড় গাড়িতে ঘোরার থেকে স্কুটার, সাইকেলে ঘোরা ভালো: মমতা
এখনও তো ওরা মেজরিটি পায়নি। অখিলেশজি থাকলে, পুরো হিন্দুস্তানে আমরা সফল হব। এক সঙ্গে কাজ করব। বিজেপির তো মেজরিটি পায়নি। কাউকে কাউকে কিনে, শেয়ার কেলেঙ্কারি করে, কখনও শুনেছেন, টাকা নিয়ে মিনিস্ট্রি দেননি, টাকা দিয়ে দল কিনে নিয়েছেন, এরা এমন, বিবেক হারিয়েছে। কী বৃষ্টি গায়ে লাগল, একবার স্নান করব, ধুয়ে যাবে, নোংরা মনে লাগলে, ধোয়া যাবে না। কেউ যেন আপনাদের লোভী বানাতে না পারে, ভাত রুটি খেয়ে থাকব, কিন্তু অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করব না। যারা ইলেক্টেড হয়ে পরিষেবা দেবেন না, তাঁদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখব না। : মমতা
২ কোটির বেশি মানুষকে ওবিসি সার্টিফিকেট দিয়েছি, তাঁরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু হলেও একটা করে জনস্বার্থ মামলা করে দিচ্ছে। আমার হাতে ১০ লক্ষ চাকরি রয়েছে।: মমতা
১০ হাজার কোটি টাকার বেশি স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে মানুষকে পরিষেবা দিয়েছি। তৃণমূল মানুষের সামাজিক বন্ধু হবে। আমি বিবেকবান চাই, বিত্তবান চাই না। পয়সা আসে, চলে যায়। সেবার কোনও বিকল্প নাই।সব পৌরসভা, পঞ্চায়েত, এমএলএ, এমপি, প্রধান সবাইকে বলব, কারোর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ যেন কেউ না পায়। যদি কোনও অভিযোগ ওঠে, আমরা কিন্তু উপযুক্ত অ্যাকশন নেব। গরিব থাকুন, যা আছে ঘরে, তাই খেয়ে বেঁচে থাকুন। তাহলেই আপনাদের কেউ সরাতে পারবে না: মমতা
আমরা দায়িত্বে আসার কয়েক বছর আগেও বাংলার দারিদ্র সীমার নীচে ছিলেন ৫৭.৬০ শতাংশ মানুষ। মা মাটি মানুষের সরকারের আমলে এটা এসেছে মাত্র ৮ শতাংশে। ৪০ শতাংশের ওপর দারিদ্রতা কমিয়েছি। ১ কোটি ৭২ লক্ষ মানুষ দারিদ্রসীমার থেকে বেড়িয়ে এসেছে। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য ৬০ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছি: মমতা
বাংলা একমাত্র জায়গা, যেখানে পার্লামেন্টে আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হলেন ৩৮ শতাংশ। নির্বাচনের আগে অনেকেই বলেন, মহিলাদের জন্য রিজারভেশন চাই। আমরা প্রমাণ করে দেখিয়েছি। আমরা লোকসভায় ৩৮ শতাংশ নির্বাচিত প্রতিনিধি পাঠিয়ে দিয়েছি: মমতা
উত্তরবঙ্গে আমাদের ফল খুব ভাল হয়নি। আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি, কোচবিহার, রায়গঞ্জ, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের মানুষকে ধন্যবাদ। মালদহে লোকসভা নির্বাচনে আমরা জিতিনি, আমি জানি না কেন আপনারা আমাদের ভুল বুঝলেন, হয়তো আমাদেরই দুর্ভাগ্য। একটা সিট বিজেপিকে, একটা কংগ্রেসকে। ওরা কোনওদিন কিছু করেছে আপনাদের জন্য। তাও ভুল বুঝিনি আমি। আমি বিশ্বাস করি, ছাব্বিশের মালদহের আম আমসত্ত্ব আমরা পাবই: মমতা
এজেন্সি লাগিয়ে, ভয় দেখানোর পরও সরকার গড়েছি। ২১ জুলাই বাংলার ইতিহাসে রক্তঝরা এক দিন। নো আইডি কার্ড, নো ভোটের জন্য লড়াই করেছিল ওঁরা। আজ কিন্তু তা হয়েছে। নো আই কার্ড, নো ভোট, আজ হয়েছে। গত লোকসভা ও বাই ইলেকশনে এত এজেন্সির চমকানি, ধমকানি, গ্রেফতার, অত্যাচারের পরও নির্বাচন কমিশনের এক তরফা দৃষ্টির পরও তিনটে দলের সঙ্গে লড়াই করে জিতে এসেছি, তার জন্য মানুষকে স্যালুট। যাঁরা দেননি, তাঁদের কাছেও সমর্থন আশা করব। সাধারণ মানুষ ছাড়া আমরা চলতে পারব না। আমরা যত জিতব, আমাদের নরম হতে হবে, দায়িত্ব বাড়বে, মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারব। এখানে বিত্তবান চাইনা, বিবেকজ্ঞান চাই: মমতা
অখিলেশের পর মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, মুম্বইতে আপনার সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। আর সেখানে আপনি আমার এক কথাতেই রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। আপনি এখানে কিরণময় নন্দী, লোলিতজি সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে এসেছেন। আপনার হাত ধরেই বাংলার সঙ্গে হিন্দুস্তানের সম্পর্ক মজবুত হবে।
আপনাদের নেতা বড় নেতা। জীবনকে ঝুঁকিয়ে ফেলে দলকে এই পর্যায়ে পৌঁছেছে। আমরা নেগেটিভ পলিটিক্সের কথা বলি না, আমরা পজিটিভ পলিটিক্সের কথা বলি। আর সেই রাজনীতিতেই আমরা বিজেপি সরকারকে ফেলব: অখিলেশ
দিদির ক্ষেত্রে দেখলাম, যাঁরা শুরু থেকে দিদির পাশে থেকে লড়াই করেছেন, তাঁরা আজও লড়াই করে চলেছেন। দিল্লিতে বসে থেকে অনেকে ষড়যন্ত্র করে চলেছেন। দিদির সাহস, শক্তি রয়েছে, সব ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করার। ষড়যন্ত্রকারী কখনও জয় পেয়েও জেতে পারেন, কিন্তু শেষে জিতবেন না, কারণ তাঁরা মিথ্যা নিয়ে লড়ছেন। মোদী সরকার বেশিদিন টিকবে না।
কেউ বড় নেতা হয়ে যেতে পারেন, আবার কেউ পদ পেলেন না, এমনও হতে পারেন. কিন্তু তাঁরা প্রত্যেকেই কার্যকর্তা থাকেন। আর দলের কার্যকর্তারাই মুখ্য। দলের সংগঠনকে মজবুত করেন কর্মী সমর্থকরাই। আজ আপনারা এক কাট্টা, কিংবা আমি আজ এখানে এসেছি, সেটা মনে করিয়ে দেয়, দিদি আমাদের স্মরণ করেছে। গত নির্বাচনে দিদি যখন লড়াই করছিলেন, তখন আমি দুটো কথা বলছিলাম, তাঁর পায়ে চোট ছিল, চলতে পারছিলেন না, তবুও লড়ছিলেন। তখন বলেছিলাম, ‘এক আকেলি লড় জায়েঙ্গি, জিতেগি অর বড় জায়েগি।’ দিদি একা লড়ছেন এমন নয়, কর্মী সমর্থকদের নিয়ে জীবন বাজি রেখে লড়াই করছেন।
আমি মঞ্চের সামনে প্রচুর তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের দেখলাম। কর্মী সমর্থকদের সম্পর্কই দলকে মজবুত করে। দিদির কাছে এমন কর্মী রয়েছেন, তাঁরা দিদির জন্য জীবনও দিতে পারেন। প্রাণ দিতে পরোয়া করে না। আজকের দিন শহিদদের স্মরণ করার। কিন্তু চোখে জল নিয়ে নয়, মাথা উঁচু করে। এটা সব পার্টির সৌভাগ্য হয় না, যেখানে জীবন দিতে পারা কর্মীরা থাকেন।
“একুশের আগে যাঁরা তৃণমূলে দমবন্ধ লাগছিল বলে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, আবার তৃণমূলে ফিরে এসেছিলেন। কথা দিয়েছিলাম, যাঁরা দলে ঢুকছে,তাঁদের কাউকে তৃণমূলের একটা সৈনিকের ওপরেও ছড়ি ঘোরাতে দেব না।”
“আমরা ব্রিগেড করেছিলাম ১০দিনের ব্যবধানে। একেবারে ৪২জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিলাম। আমরা বারে বারে বলেছি, দম্ভ, ঔদ্ধত্য আমাদের নেই। আমি বিজেপির স্বৈরাচারীদের কাছে মাথা নত করব না। তৃণমূল বিশুদ্ধ লোহা। যত পোড়াবে তত শক্তিশালী হবে।”
“আগামীর লড়াইও যদি ভাবি আমরা জিতব, তাহলে আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। সেই জিত যেন ২০১৬, ২০২১, ২০২৪ এর থেকেও বড় হয়।”
সমাজবাদী পার্টির সভাপতি তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবকে নিয়ে সঙ্গে মঞ্চে প্রবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অখিলেশকে সংবর্ধনা জানান তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
“২০২২ সালে একুশে জুলাইয়ের পরের দিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইডি গ্রেফতার করে। তাহলে স্বাধীন ভারতের সর্ব বৃহৎ নিট কেলেঙ্কারির কারণে ইডি কেন ধর্মেন্দ্র প্রধানকে গ্রেফতার করবে না? কেন এই রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ?”
“পুরসভা এবং পঞ্চায়েতে যারা আছেন তাদের মানুষের কথা ভাবতে হবে। নিজের কথা ভাবলে চলবে না। আমি কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত সদস্য হব । বাকিটা পার্টি বুঝে নেবে। এটা হবে না। তিন মাসের মধ্যে ফল পাবেন।”
“আমরা মানব সেবায় বিশ্বাস করি। আমরা ধর্ম বাড়িতে করি। ঠাকুরের ঘরে বসে ধর্ম করি। আমরা যখন মানুষের ভোটে নির্বাচতি তখন আমাদের কোনও ধর্ম নেই। আমাদের একটাই ধর্ম, মানব ধর্ম। মানুষকে পরিষেবা দেওয়া।”
‘গলা কেটে দিলেও তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ বলব। আমরা তৃণমূল কংগ্রেস করি।’
তিনি নেত্রী, তিনি তাঁদের কাছে মাতৃসম। তাঁর বার্তা শুনতেই এক ডাকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাতারে কাতারে মানুষ আসেন কলকাতায়। গন্তব্য ধর্মতলায় একুশের মঞ্চ। কিন্তু এই দিনটায় ধর্মতলা চত্বরে যেমন লাখো মানুষের ভিড় হয়, তেমনি ভিড় জমে কালীঘাটেও। কারণ তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের অনেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি দেখতে যাচ্ছেন। সেটাও একটা দর্শনীয় স্থান। কালীঘাটের মন্দির নয়, কালীঘাটে মমতার বাড়ি দেখতেই ভিড় করছেন কর্মী সমর্থকরা। কার্যত যেন কালীঘাটের মন্দিরের বাইরের থেকে ভিড় মমতার বাড়ির সামনেই। কেবল সেই বাড়ি দেখবেন বলেই।
“বিজেপির কোনও ক্ষমতা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা নেই।”
“কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে দাঁড়াবে এটা তাঁর দল। মানুষের পাশে থেকে মানুষের সেবা করা মমতা শিখিয়েছেন। ২৬ দিন অনশন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঢোলে পড়েছিলেন। যদি আর কয়েক ঘণ্টা দেরি হতো তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের মধ্যে থাকতেন না। সিপিএমের গুন্ডারা ওনাকে মেরে মাথার খুলি ফাটিয়ে দিয়েছিল। আর এক সেন্টিমিটার হলে ব্রেন টাচ করে যেত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের মধ্যে থাকতেন না।”
“কোচবিহারের রাজবংশী মানুষ, আদিবাসী মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে বিজেপির কথায় গলব না। তবে কোচবিহার জিতলে উত্তরবঙ্গে লড়াই শেষ হবে না, কোচবিহার থেকে মালদায় যতদিন না জোড়া ফুল ফুটবে, ততদিন আমার লড়াই শেষ হবে না।”
কলকাতায় এলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। কলকাতা বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যসভায় সাংসদ ডেরেক ওব্রায়ন।
আজ ২১ জুলাই। তৃণমূলের মহা কর্মসূচি। আজ ধর্মতলায় জনপ্লাবন, মানুষের ভিড়। ডিম-ভাত-মাংস ভাতের আয়োজন, বাহারি সাজে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা, উল্লাস-উন্মাদনা! রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন থিম নিয়ে ধর্মতলায় আসছেন কর্মী-সমর্থকরা। কার্যত যেন থিমের কার্নিভাল! কিন্তু ৩১ বছর আগের এদিনের ছবিটা ছিল অন্য। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই। সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা একটি কর্মসূূচি ঘিরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় কলকাতায়। সেই রক্তঝরা দিনের ক্ষত এখনও দগদগে। আর সেই স্মৃতি স্মরণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিস্তারিত পড়ুন: ১৩ জন ‘শহিদ’ কারা? ১৯৯৩-এ ২১ জুলাই কীভাবে রক্তস্নাত হয়েছিল কলকাতা?
শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়। যতীন্দ্র মোহন অ্যাভিনিউয়ের এক পাশে মাটিতে চাদর পেতে বসে পড়েছেন কয়েকজন। কেউ পেঁয়াজ কাটছেন, কেউ টমেটো কাটছেন, কেউ কড়াইতে তেল ঢেলেছেন। মশলা মাখানো হয়েছে মাংসতে। পুরো ‘ফিস্টি মেজাজ’! ঘড়ির কাঁটায় তখন সাড়ে দশটা। মাংসভাত খেয়ে তাঁরা রওনা দেবেন ধর্মতলায়। কীভাবে সম্ভব? পারবেন? নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো উঠে পড়বেন মঞ্চে? পারবেন পৌঁছাতে? প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁদের। পেঁয়াজ কাটতে কাটতেই বলে উঠলেন, ‘সব হবে, মাংস রান্না হতেই ২০-২৫ মিনিট লাগবে, খেতে আর কতক্ষণ! ঠিক পৌঁছে যাব?’
একুশে জুলাই উপলক্ষে ধর্মতলার যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনা আহত একাধিক তৃণমূল কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জীবনতলা কালিতলা এলাকায়। এই ঘটনায় আট জন তৃণমূল কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
দূর-দূরান্তের বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মী সমর্থকরা এসে পৌঁছেছেন কলকাতায়। আমহার্স্ট স্ট্রিটের দুই পাশে লম্বা লাইন জেলা থেকে আসা বাস শতাধিক বাসের। চারপাশে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে একেবারে পিকনিকের মেজাজ।