দুয়ারে সরকারে পঞ্চায়েত বা ক্লাব সদস্যদের ‘নো-এন্ট্রি’! জেলায় কড়া নির্দেশ গেল নবান্ন থেকে
লক্ষ্মীর ভান্ডার ফর্ম পূরণের সঙ্গে কোনও ভাবেই পঞ্চায়েত সমিতি বা ক্লাব সদস্যদের যুক্ত করা যাবে না।
কলকাতা: অল্প দিনেই সাফল্যের মুখ দেখেছে রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প। কিন্তু সেই সঙ্গে অসংখ্যক জালিয়াতি, ফর্ম বিলি নিয়ে বেনিয়ম, ফর্ম পূরণের নামে টাকা তোলার অভিযোগ অস্বস্তিতে রাখছে নবান্নকে। এই অবস্থায় একের পর এক কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে নবান্ন। সোমবার নতুন করে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। জেলাশাসকদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, লক্ষ্মীর ভান্ডার ফর্ম পূরণের সঙ্গে কোনও ভাবেই পঞ্চায়েত সমিতি বা ক্লাব সদস্যদের যুক্ত করা যাবে না। প্রয়োজন হলে স্ব-নির্ভর গোষ্ঠী বা কলেজ পড়ুয়াদের কাজে লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দুয়ারে সরকার কর্মসূচির যে প্রকল্পই হোক না কেন, তাতে যেন কোনও ভাবেই ক্লাব, পঞ্চায়েত বা পুরসভার হস্তক্ষেপ না থাকে। সোমবার এই মর্মে জেলায় জেলায় প্রশাসনের কাছে নির্দেশ গিয়েছে। মুখ্যসচিব জানিয়ে দিয়েছেন, ফর্ম ফিলআপের কাজে পঞ্চায়েত সমিতি বা ক্লাব সদস্যদের কোনও ভাবেই যুক্ত করা যাবে না। কারণ পুরোটাই বেআইনি। সূত্রের খবর, জেলাশাসকদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, যদি একান্তই সাহায্য দরকার পড়ে তবে স্ব-নির্ভর গোষ্ঠী বা কন্যাশ্রীদের ব্যবহার করুন। এমনকী, খুব দরকার হলে কলেজে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীদেও কাজে লাগানো যেতে পারে। কিন্তু পঞ্চায়েত সদস্য বা ক্লাবের সদস্যদের ‘নো-এন্ট্রি’।
গত ১৬ অগস্ট থেকে রাজ্য-জুড়ে শুরু হয়েছে দুয়ারে সরকার প্রকল্প। আর এই প্রকল্পের সূচনা থেকেই লক্ষ্মীর ভান্ডারে নাম নথিভুক্ত করানোর চাহিদা উঠেছে তুঙ্গে। কিন্তু এই বিপুল চাহিদার মাঝেই ক্যাম্পগুলিতে অতিরিক্ত ভিড়, এবং লক্ষ্মীর ভান্ডারে ফর্ম বিলি ঘিরে অনিয়ম মাথাব্যথা বাড়িয়েছে রাজ্য সরকারের।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য নবান্ন থেকে পইপই করে বলে দিয়েছিলেন, দুয়ারে সরকার ব্যতীত অন্য কোথাও থেকে যেন লক্ষ্মীর ভান্ডারের ফর্ম সংগ্রহ না করা হয়। কিন্তু কে শোনে তাঁর কথা? দুয়ারে সরকারে ভিড় বাড়তেই ঘুরপথে শুরু হয়েছিল ফর্ম বিলি। ক্লাব, পঞ্চায়েত, পুরসভা; সব জায়গা থেকেই ফর্ম বিলির অভিযোগ ওঠে। কোথাও কোথাও বিনিময়ে ৫-১০-২০ টাকা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানা যায়। অভিযোগ পেতেই কড়া হাতে না দমন করে নবান্ন। এ বার জানা যাচ্ছে, ফর্ম পূরণের নামে কোথাও কোথাও টাকা নিচ্ছে কেউ কেউ।
এই অবস্থায় গোটা প্রকল্পটিকে যাকে স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিমুক্ত রাখা যায় সেই নিয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কোনও অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। সেই মতো মুখ্যসচিবও এ বার জেলাশাসকদের জানিয়ে দিলেন, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বা ক্লাবের সদস্যদের কোনও ভাবেই দুয়ারে সরকার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা যাবে না। আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রিত্বের মেয়াদ মেরেকেটে আর ৩ মাস, উপনির্বাচনের দাবিতে ফের সুর চড়ল মমতার