আবেদন জমা ৩ লক্ষ ৮১হাজার! খতিয়ে দেখে দুয়ারেই পৌঁছে যাবে ত্রাণ

বিপর্যস্ত এলাকায় দুয়ারে ত্রাণ পৌঁছে দিতে ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোন খাতে কত টাকা দেওয়া হবে তা বিস্তারিত জানিয়ে তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে।

আবেদন জমা ৩ লক্ষ ৮১হাজার! খতিয়ে দেখে দুয়ারেই পৌঁছে যাবে ত্রাণ
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 25, 2021 | 7:40 AM

কলকাতা: রাজ্যের দুয়ারে ত্রাণের (Duare Tran) আবেদন জমা পড়ল ৩ লক্ষ ৮১ হাজার। যার মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলাতে সব থেকে বেশি আবেদন জমা পড়েছে। ১,৬২,৩৭১ টি আবেদন জমা পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে আবেদন জমা পড়েছে ১,১৭,৬৫১ টি। উল্লেখযোগ্য ভাবে সবথেকে বেশি আবেদন জমা পড়েছে বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে। মোট ২ লক্ষ ৪৭ হাজার বাড়ি ভাঙার অভিযোগ জমা পড়েছে। ইতিমধ্যেই ৪০ শতাংশ ইনকোয়ারি রিপোর্ট জমা পড়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।

আবেদনপত্রে জমা দেওয়ার তারিখ পেরিয়ে গিয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া। আবেদনপত্র যাঁরা জমা দিয়েছেন, সেই সব জায়গায় সরকারি আধিকারিকরা গিয়ে জিআই ট্যাগ করে রিপোর্ট দিচ্ছেন। দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পে বাড়ি ভাঙা থেকে শুরু করে গবাদি পশুর মৃত্যু সহ একাধিক ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

বিপর্যস্ত এলাকায় দুয়ারে ত্রাণ পৌঁছে দিতে ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোন খাতে কত টাকা দেওয়া হবে তা বিস্তারিত জানিয়ে তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে।

♦ চাষাবাদের ক্ষতির ক্ষেত্রে- শস্যের ক্ষতির ক্ষেত্রে প্রত্যেক চাষিকে ন্যূনতম ১০০০টাকা থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

♦  বিপর্যয় মোকাবিলায়- যাঁদের বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে গিয়েছে, তাঁদের পরিবার পিছু ২০ হাজার টাকা করে সাহায্য। যাঁদের বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের ৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ।

♦  গবাদি পশুর ক্ষেত্রে- দুগ্ধপ্রদায়ী গবাদি পশু যেমন গরু, মহিষের ক্ষেত্রে ৩০ হাজার টাকা করে সাহায্য। ভেড়া কিংবা ছাগলের ক্ষেত্রে অঙ্কটা ৩ হাজার টাকা। ষাঁড়ের ক্ষেত্রে ২৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বাছুরের ক্ষেত্রে ১৬ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ।

♦  হর্টিকালচার- পান পাতা চাষিদের মাথা পিছু ৫ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ।

♦  ফিশারি- মৎস্যজীবীদের নৌকা পুুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হলে, মাথা পিছু ১০ হাজার টাকা করে সাহায্য। জাল কিনতে মাথা পিছু ২৬০০ টাকা ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত নৌকা মেরামতিতে ৫ হাজার টাকা করে সাহায্য করা হবে।

♦ এমএসএমই- যাঁদের গোডাউন, শোরুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, আমফানের তাণ্ডবে রাজ্যের একাধিক জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। সেই সময় ত্রাণ ও পুনর্গঠনে রাজ্য সরকার যে অর্থ বরাদ্দ করেছিল তা নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন মহল থেকে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ইয়াসের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও অর্থের সদ্বব্যবহারের স্বার্থেই গোটা প্রক্রিয়াটা তিনি প্রশাসনিক স্তরেই রাখতে চান বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: কসবা কাণ্ডের জেরে বড় পদক্ষেপ লালবাজারের, সহজে টিকাকরণ ক্যাম্প খোলা যাবে না শহরে

সন্দেশখালি, ধামাখালি, সাগরের মতো এলাকা দুর্যোগের কবলে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, সব মিলিয়ে প্রায় ১ লক্ষ বাড়ি ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৪০ হাজার হেক্টর কৃষিজমি, ৭ হাজার জলাশয়, ৫৫টি বাঁধ এবং ১৬০০ কিলোমিটার রাস্তা। ক্ষতিগ্রস্তদের সরাসরি সাহায্যে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ নামক মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রাণের জন্য বরাদ্দ প্রত্যেকটি টাকা ঠিক মতো খরচ হচ্ছে কিনা, তাও কড়া নজরে রাখবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।