Durga Puja 2025: ঘুরছে ফেলুদা, দেখছেন সত্যজিৎ! মণ্ডপজুড়ে মগজাস্ত্রের কামাল, উত্তরের ‘গুপ্তধন’ দর্জিপাড়া সর্বজনীন
Feluda Theme in Durga Puja: দর্জিপাড়া সর্বজনীনের উদ্যোক্তারা বলছেন, ফেলুদা বাঙালির আবেগ। সত্যজিৎ বাঙালির অস্মিতা। তাই আমরা গোটা মণ্ডপে ধরার চেষ্টা করেছি। সোনার কেল্লা থেকে জয় বাবা ফেলুনাথ, বাদশাহী আংটি থেকে গোরস্থানে সাবধান, জনপ্রিয় সব গল্পের বিভিন্ন বিভিন্ন আঙ্গিক অসাধরণ শিল্পকলার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে গোটা মণ্ডপে।

কলকাতা: জীবন্ত ফেলুদাকে দেখতে চান? হ্যাঁ এবারের পুজোয় দেখা মিলছে জীবন্ত ফেলুদার। সঙ্গে আবার জটায়ু। বাঙালি পাঠকের রক্তে যদি কৌতূহল, রোমাঞ্চ আর রসবোধ একসঙ্গে দৌড়ায়, তবে তার মূল কারণ নিঃসন্দেহে ফেলুদা-জটায়ু-তোপসে ত্রয়ী। সত্যজিৎ রায় এক হাতে যেন গড়ে তুলেছিলেন এক এমন দুনিয়া, যেখানে গোয়েন্দাগিরি মানে শুধু খুনখারাপির রহস্য নয়, বরং শানিত বুদ্ধি, জ্ঞানের আলো আর ভরপুর রোমাঞ্চের আসর। ‘সোনার কেল্লার’ ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবার ফেলুদার সেই সাম্রজ্য় নিয়েই হাজির হয়েছে শোভাবাজারের দর্জিপাড়া সর্বজনীন। মণ্ডপে পা রাখা মাত্রই কানে আসবে সেই চেনা ফেলুদার থিম সং।
কখনও হারিয়ে যাবেন জয়পুর, আবার কখনও গ্যাংটকে

সোনার কেল্লা থেকে জয় বাবা ফেলুনাথ, বাদশাহী আংটি থেকে গোরস্থানে সাবধান, টিনটোরেটোর যীশু থেকে ছিন্নমস্তার অভিশাপ, জনপ্রিয় সব গল্পের ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিক অসাধরণ শিল্পকলার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে গোটা মণ্ডপে। জোর দেওয়া হয়েছে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ডিটেলিংয়ে। শুধু তাই নয়, মঞ্চাভিনেতাদের নিয়ে এসে সাজানো হয়েছে ফেলুদা, জটায়ু। তাঁরা কথাও বলছে দর্শনার্থীদের সঙ্গে। তুলছে ছবি। আবার কোথাও মডেল ঘুরছে সত্যজিৎ সেজে। কোথাও আবার পুলিশ। সোজা কথায়, বাঙালির প্রিয় গোয়েন্দার কারিকুরি তুলে ধরতে গোটা মণ্ডপেই মগজাস্ত্রের ধারাল ব্যবহার করেছেন উদ্যোক্তরা। যা দেখে আপনি কখনও হারিয়ে যাবেন গ্যাংটকে, আবার কখনও জয়পুরে, আবার কখনও দার্জিলিং, আবার কখনও মুম্বই, লখনৌয়ে। আসলে সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সিরিজের অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হল প্রতিটি গল্পের প্রেক্ষাপট আলাদা। আর সেই জায়গাগুলোর ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভূগোল গল্পের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে। একেকটা রহস্য আমাদের নিয়ে যায় একেক প্রান্তে। তাই যেন গোটা মণ্ডপে ধরতে চেয়েছেন শিল্পী সোমনাথ দাস, সহ-শিল্পী বিশ্বজিৎ পাল। সঙ্গে কাজ করেছে গোটা টিম।
প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে থেকে শুরু হয়ে গিয়েছিল কাজ

দর্জিপাড়া সর্বজনীনের উদ্যোক্তারা বলছেন, ফেলুদা বাঙালির আবেগ। সত্যজিৎ বাঙালির অস্মিতা। তাই আমরা গোটা মণ্ডপে ধরার চেষ্টা করেছি। প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন মাস আগে থেকে শুরু হয়ে গিয়েছিল মণ্ডপসজ্জার কাজ। আর্ট কলেজের অনেক পড়ুয়াই এখানে কাজ করেছেন। উদ্যোক্তাদের তরফে বিপ্রজিৎ মণ্ডল বলছেন, “এবার আমাদের পুজো ৯৪তম বর্ষে পা দিয়েছে। এবার আমাদের ভাবনা রহস্য রোমাঞ্চ। সোনার কেল্লার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষেই আমাদের এই ভাবনা। আমাদের বাজেট প্রায় ২৫ লাখ। ফেলুদার উপর লেখা সব গল্পের উপরেই সেজে উঠেছে আমাদের মণ্ডপ। প্রতিমার মধ্যেও তার ছোঁয়া রয়েছে। ফেলুদা তো প্রচণ্ড অ্যান্টিক ভালবাসতেন। তার সংগ্রহের মধ্যে একটা ছোট দুর্গা ঠাকুর ছিল। তার আদলেই তৈরি হয়েছে আমাদের প্রতিমা।”
