Green Puja: গঙ্গাবক্ষে নয়, ঠাকুর দালানেই প্রতিমা নিরঞ্জন, শতবর্ষের প্রথা ভেঙে ‘গ্রিন পুজো’র তকমা
Durga Puja 2022: এবার আর গঙ্গায় নয়, ঠাকুর দালানেই কৃত্তিম জলাশয় তৈরি করে দেবী প্রতিমার নিরঞ্জন করা হল। আর এই পরিবেশ বান্ধব ভাবনার জন্যই ভবানীপুরের গিরীশ ভবন পেল গ্রিন পুজোর তকমা।
কলকাতা: শতবর্ষের পুরনো রীতিতে এবার ছেদ পড়ল। বনেদি বাড়ির পুজোর বিসর্জন হল ঠাকুর দালানেই। সারা ভারতে বনেদি বাড়ির পুজোয় এমন নজির প্রায় নেই বললেই চলে। প্রতি বছর ভবানীপুরের গিরীশ ভবনের দুর্গা প্রতিমা রীতি মেনে নিরঞ্জন হত গঙ্গাবক্ষেই। কিন্তু এবার বছরের পর বছর ধরে চলে আসা সেই রীতি ভাঙা হল। এবার আর গঙ্গায় নয়, ঠাকুর দালানেই কৃত্তিম জলাশয় তৈরি করে দেবী প্রতিমার নিরঞ্জন করা হল। আর এই পরিবেশ বান্ধব ভাবনার জন্যই ভবানীপুরের গিরীশ ভবন পেল গ্রিন পুজোর তকমা।
প্রসঙ্গত, এর আগে শহর কলকাতা ‘গ্রিন বিসর্জন’-এর সাক্ষী থেকেছে। কিন্তু বনেদি বাড়ির পুজোয় বিভিন্ন রীতি-রেওয়াজ থাকে। সেই কারণে, শহরের ‘গ্রিন বিসর্জন’-এ সামিল হতে দেখা যায়নি কোনও বনেদি বাড়ির পুজোকে। তবে এবার পরিবেশ সচেতনতার নয়া দিশা দেখাল ভবানীপুরের গিরীশ মুখোপাধ্যায় পরিবার। শতবর্ষের পুরনো ভাবনা ভাঙা হল। দশমীর রাতে বিশেষভাবে তৈরি মেটাল ট্যাঙ্কের জলে নিরঞ্জন করা হল প্রতিমা। দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য ছিল হোস পাইপের ব্যবস্থাও।
১৮৩২ সালে শুরু হয়েছিল এই বনেদি বাড়ির পুজো। তত্ত্বাবধানে ছিলেন বিশিষ্ট গুড় ব্যবসায়ী হরচন্দ্র মুখোপাধ্যায়। পরবর্তী সময়ে তাঁর পুত্র গিরীশ মুখোপাধ্যায়ের চেষ্টায় তৈরি হয় এখনকার ঠাকুর দালানটি। উত্তমকুমারও জড়িত ছিলেন এই পুজোর সঙ্গে। সেও এক ইতিহাস।পুজোর দিনগুলোতে সারারাত যাত্রাপালার আয়োজন হত। আর অভিনয় থেকে শুরু করে যাবতীয় আয়োজনের দায়িত্বে থাকতেন উত্তমকুমার স্বয়ং। ১৯৭৫ এর পুজোয় শেষবার এই দালানে তিনি অভিনয় করেছিলেন। এবার ১৯০ বছরে পা দিল এই বনেদি বাড়ির পুজো।
এই বছর গিরীশ ভবনের দেবী প্রতিমার বিসর্জনের জন্য মূর্তি নির্মাণেও বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল। যে কাঠামোয় প্রতিবার পুজো হয়, এবারে তা পালটে ফেলা হয়েছে। প্রতিটি প্রতিমার জন্য ধাতুর ধাঁচা করা হয়েছে এবং প্রতিমাগুলি আলাদাভাবে ভাবে কাঠামো থেকে খুলে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। গিরীশ ভবনের প্রাঙ্গণেই কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করে সেখানেই নিরঞ্জন হয় দেবী প্রতিমার। গলে যাওয়া মাটি সংরক্ষণ করে আগামী বছর পুনরায় ব্যবহার করা হবে প্রতিমা গড়ার কাজে। এর মূল উদ্দেশ্য হল গঙ্গার দূষণ রোধ করা। অর্থাৎ, পুজোয় ধর্ম ও পরিবেশ সংরক্ষণ দু’টিই একসঙ্গে পালিত হল।