Calcutta High Court: ‘কাউকে কি এভাবে বলতে পারেন বাংলাদেশি?’, হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র
Calcutta High Court on Migrant Worker Issue: বিচারপতির প্রশ্ন, "২৪ জুন অর্ডার হল, আর মাত্র দু'দিনের মধ্যে এদের আপনারা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিলেন? শীর্ষ আদালতের নির্দেশ এবং ২১ নম্বর ধারাকে লঙ্ঘন করেছেন। মামলার গ্রহণযোগ্যতা সরিয়ে রাখছি। একজন স্পেশাল ইনফর্মার হঠাৎ এসে বললেন ওই বাংলাদেশি আসছে।

কলকাতা: কাজের জন্য পরিবার সমেত গিয়েছিলেন দিল্লি। তবে তাঁদের বাংলাদেশি দাগিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর অভিযোগ ওঠে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই মামলায় এবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, ২৬ জুন বাংলাদেশে পাঠানো হয় এই পরিযায়ীদের। তার মাত্র দু’দিন আগে আটক করা হয় এদের। মাত্র দু’দিনে কীভাবে সিন্ধান্ত নেওয়া হল, তাঁরা বাংলাদেশি? আইন মোতাবেক অন্তত তিরিশ দিন আটক রেখে তদন্তের প্রয়োজন। এখানে সেসব মানা হল না কেন? প্রশ্ন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর। আচমকা এত তাড়াহুড়োই বা কেন করা হল প্রশ্ন তুলেছে কোর্ট।
প্রসঙ্গত, বীরভূম জেলার দুই পরিবারকে দিল্লি পুলিশ প্রথমে সেখানকারকে এন কাটজু মার্গ থানায় আটক করে রাখে। পরবর্তীতে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। এই মর্মে মামলা করেন তাঁদের (পরিযায়ী শ্রমিকদের) আত্মীয়রা। মামলাকারী আদালতের কাছে অনুরোধ করেন, যাতে ওই দুই পরিবারকে ফিরিয়ে আনা হয় রাজ্যে। সেই মামলারই শুনানি ছিল মঙ্গলবার।
আজ কেন্দ্রের আইনজীবী অশোক চক্রবর্তীর সওয়াল, আদৌ কি এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা আছে? মামলা দিল্লিতে রয়েছে। এরা নাগরিকত্ব নিয়ে যাবতীয় মামলার তথ্য লুকিয়েছে। তাই এই মামলায় এদের জরিমানা হোক।
এই উত্তর শোনার পর বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর প্রশ্ন, “আপনি কি মনে করেন ওরা যদি কলকাতায় আটক হত তাহলে শুধু হাইকোর্ট শুনত? যাকে বহিষ্কার করা হয়েছে তার আর কোনও সমাধান নেই?”
কেন্দ্রের আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী বলেন, “এরা আজ পর্যন্ত কোনও হলফনামা দেয়নি যে এরা বাংলাদেশি নাগরিক নয়।” একই সঙ্গে অ্যাডিশনাল সলিশিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী বলেন, “গত ২৬ জুন বাংলাদেশে এদের পাঠানোর পর কোনও ভাবে তাঁরা এই দেশে আসেননি। তাই দেশের নিরাপত্তার জন্য এটা খারিজ হোক। এটা বাঙালি বিদ্বেষের কোনও বিষয় নয়। ত্রিশ বছর ধরে চলছে।”
বিচারপতির প্রশ্ন, “২৪ জুন অর্ডার হল, আর মাত্র দু’দিনের মধ্যে এদের আপনারা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিলেন? শীর্ষ আদালতের নির্দেশ এবং ২১ নম্বর ধারাকে লঙ্ঘন করেছেন। মামলার গ্রহণযোগ্যতা সরিয়ে রাখছি। একজন স্পেশাল ইনফর্মার হঠাৎ এসে বললেন ওই বাংলাদেশি আসছে। এই একজনের বলার উপর ভিত্তি করে কীভাবে ঠিক করলেন তাঁরা বাংলাদেশি? এত তাড়াহুড়ো কেন? কাউকে কি এভাবে বলতে পারেন বাংলাদেশি?”
বিচারপতি আরও বলেন, “অর্ডারে আপনার অফিসার লিখেছেন বাংলাদেশি বস্তি থেকে আনা হয়েছে। তাই আপনি কারণ জানাতে বাধ্য, কেন বংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করছেন এদর।”
এরপর মামলাকারী আইনজীবীকে বিচারপতি, “আপনারা ওই পরিযায়ীদের বের করে দেওয়ার অর্ডার চ্যালেঞ্জ করেননি? বহিস্কার চ্যালেঞ্জ না করলে আমরা কীসের ভিত্তিতে অর্ডার দেব? হয় এখান থেকে মামলা তুলে নিন দিল্লিতে করুন, নাহলে এখানে এই মামলা কেন চলছে তার উত্তর আদালতকে দিয়ে সন্তুষ্ট করুন।” এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার।
