Kolkata: সর্ষের মধ্যে ভূত! ব্যাঙ্কের লকার থেকে ৬০ লক্ষ টাকার সোনার গয়না ‘গায়েব’-র তদন্তে নেমে থ পুলিশ
Bank fraud in Kolkata: ইশারাদ আলি বলেন, "ঋণ শোধের পর সোনা আনতে গেলে ব্যাঙ্কের সেই সময়ের ম্যানেজার বলেন, বাড়িতে কেন সোনা রাখবেন। ব্যাঙ্কেই সোনা রাখুন। ব্যাঙ্কে সোনা রাখা অনেক নিরাপদ।" ম্যানেজারের কথা শুনে ব্যাঙ্কে সোনা রাখেন ওই দম্পতি।

কলকাতা: ব্যাঙ্কে সোনা রাখলে সুরক্ষিত থাকবে। এই আশ্বাস পেয়েই ব্যাঙ্কে সোনা রেখেছিলেন তাঁরা। পরে সেই সোনা নিতে গিয়েই মাথায় হাত পড়ল এক দম্পতির। ব্যাঙ্ক জানিয়ে দিল, ওই দম্পতি নাকি সোনা আগেই নিয়ে গিয়েছেন। অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নেমে রাষ্ট্রায়ত্ত ওই ব্যাঙ্কের সেই সময়ের দুই কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি ভবানীপুরের। এই ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানালেন ওই দম্পতি। নিজেদের সোনাও ফেরত চাইলেন।
শিয়ালদহের বাসিন্দা ইশারাদ আলি মোল্লা পেশায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবিক লিটারেচারের অধ্যাপক। ইশারাদ ও তাঁর স্ত্রী সিদ্দিকা খাতুন ২০১৭ সালে ছেলেমেয়ের পড়াশোনার জন্য ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ভবানীপুর শাখা থেকে সোনা বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ৫৭১ গ্রাম সোনা বন্ধক রেখে ৯ লক্ষ ৪০ হাজার ঋণ নেন। প্রতিমাসে সেই ঋণ করতে থাকেন তিনি। ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারির মধ্যে ঋণ পুরোপুরি শোধ করে দেন।
ইশারাদ আলি বলেন, “ঋণ শোধের পর সোনা আনতে গেলে ব্যাঙ্কের সেই সময়ের ম্যানেজার বলেন, বাড়িতে কেন সোনা রাখবেন। ব্যাঙ্কেই সোনা রাখুন। ব্যাঙ্কে সোনা রাখা অনেক নিরাপদ।” ম্যানেজারের কথা শুনে ব্যাঙ্কে সোনা রাখেন ওই দম্পতি। ইশারাদ বলেন, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তাঁরা ব্যাঙ্কে যান সোনা আনতে। কিন্তু, ব্যাঙ্কের কথা শুনে মাথায় হাত পড়ে তাঁদের। ব্যাঙ্ক জানিয়ে দেয়, ২০১৮ সালেই নাকি তাঁরা সোনা নিয়ে গিয়েছেন। একটি সইও দেখানো হয়। সিদ্দিকা খাতুন সেই সই দেখে বলেন, “এই সই আমার নয়। এটা নকল সই।”

ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন ইশারাত আলি মোল্লা ও তাঁর ছেলে-মেয়ে
তারপর তাঁরা ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের তদন্ত নেমে দীর্ঘ আট মাস পরে এদিন ভবানীপুর থানা ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তৎকালীন ডেপুটি ম্যানেজার এবং কোষাধ্যক্ষকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ যুক্ত রয়েছেন কি না, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
বর্তমানে ওই সোনার মূল্য প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। অভিযোগকারী পরিবারের বক্তব্য, তাঁরা সোনা ফেরত চান। যাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান। একইসঙ্গে তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেই যদি তাঁদের সোনা সুরক্ষিত না থাকে, তবে সাধারণ মানুষ কোথায় তাঁদের সম্পত্তি গচ্ছিত রাখবেন?
