Na Bollei Noy: বঙ্গ জীবনের অঙ্গে ভাতার মলম, রাজনীতির অর্থনীতি আদৌও ভাবছে জনতা? যে কথা ‘না বললেই নয়’

Na Bollei Noy: সাংগঠনিক বৈঠক হয় অন্য ঘরে, দিলীপ বাবু জানতে পারেন না? একেই কি বলে ‘একঘর’ ব্যাপার? যে কথা ‘না বললেই নয়’।

Na Bollei Noy: বঙ্গ জীবনের অঙ্গে ভাতার মলম, রাজনীতির অর্থনীতি আদৌও ভাবছে জনতা?  যে কথা ‘না বললেই নয়’
না বললেই নয়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 23, 2022 | 4:41 PM

কলকাতা: উত্‍সবে, উপহারে, নিত্য প্রয়োজনে। পাশে আছে সরকার। সরকারে থাকতে দরকার ভোট। আর ভোট নিশ্চিত হতে পারে ভেট বা ভাতায়! যাহা চাই যেন জয় করে পাই, গ্রহণ না করি দান। এসব কথার কথা। বইপত্রে এমন অনেক লাইন লেখা থাকে। তাকেই জীবনের ধ্রুবতারা করতে হবে এমন মাথার দিব্যি কে দিয়েছে? কেউ দেয়নি। অতএব, উত্‍সবে, উপহারে আর নিত্য প্রয়োজনে, হাত পাততে লজ্জা নেই। মাসে মাসে ৫০০ হোক বা ৫০০০। সরকার দিচ্ছে, জনতা নিচ্ছে। ভোট দেয়, তাই ভাতা পায়। হিসেব সিম্পল। এমন অগ্নিমূল্য বাজারে টিকে থাকতে, ভাত খেতে ভাতার উপর নির্ভর করতেই হয়। ভুলেও ভাবা অন্যায়, কেন ক্রয় ক্ষমতা তৈরি হবে না? ভুলেও ভাবা অন্যায়, কেন পেটের ভাত কিনে খেতে সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে? অতএব, ভাতার জন্য যে যেখানে লড়ে যায়, জানবেন, সে আমাদেরই লড়া। যাবতীয় উদ্যোগ, তাই লা জবাব। 

সারা বছরই, বঙ্গ জীবনের অঙ্গে ভাতা নামের মলম আছে। যাতে জীবনের যাবতীয় ওঠাপড়া গায়ে না লাগে। বঙ্গবাসী তো বরাবরই চলতি হাওয়ার পন্থী। কাজেই তাকে ক্যালেন্ডারের খোঁচা দেওয়ার দরকারটা কী? বেরসিক জনতা ক্যালেন্ডার দেখিয়ে বলবে, এবছরও আশ্বিনের মাঝামাঝি উঠিবে বাজনাবাজি। আমরা জানি, ঢ্য়াম কুড়াকুড় শুরু হয়ে গেছে গতকাল। ভরা সভাগৃহে ঘোষণা হয়ে গেছে। এবছর দুর্গাপুজোর জন্য আরও বেশি অনুদান। বিদ্য়ুতের বিলে আরও বেশি ছাড়। ছাড়, ছাড়, ছাড়, রিবেট। নেতা-মন্ত্রীরা শ্রীঘর দর্শন করেছেন বলে না কি স্পনশরশিপ নিয়ে একটু টানাটানি হয়েছে। কাজেই, বিজ্ঞাপনদাতার অভাবে মাঝারি ও ছোট পুজো কমিটির হর্তাকর্তাদের কপালে, ত্রিকোণমিতি খেলা করতেই পারে। এতে অন্যায় কি আছে? বিলকুল নেই। কাজেই, সেই ললাটলিখন মুহূর্তে বদলে গেছে যে ঘোষণায় তাতেও কোনও মহাভারত অশুদ্ধ হয়নি। হচ্ছেও না। ভাবুন, যে তৃষ্ণার্তরা এক ঘটি জলের জন্য হাঁসফাঁস করছিলেন, তাঁরা হঠাৎই সামনে দেখতে পেলেন অনুদান ভর্তি ট্যাঙ্ক।

ছাড়ুন মশাই রাজনীতির কথা। বরং রাজনীতির অর্থনীতি নিয়ে ভাবুন। এই পুজো ঘিরে কত মানুষের পেট চলে। বাঁশের পর বাঁশ জুড়ে প্যান্ডেল তৈরি করেন। আলোয় সাজান চারপাশ। একমেটে দোমেটে থেকে চোখ ধাঁধানো প্রতিমা গড়েন। পুজোর কটাদিন, গলি থেকে রাজপথে হেঁকে যান বেলুন আর বাশি হাতে। স্টল দেন ফুটপাথে। তাঁদের জন্য পুজো মানে অর্থনীতি। পণ্ডিতেরা বলেন, বলে, উৎসব হলেই নাকি টাকা ঘোরে। এক হাত থেকে অন্য হাতে টাকা গেলে নাকি সে টাকা রোটেট হয়। বহু মানুষ কাজ পায়। কাজ পেলে টাকা আসে। আর টাকা এলে সে টাকা আবার ঘুরতে শুরু করে বাজারে। কাজেই বিশ্বাস করতে শিখুন। তর্কে বহুদূর যাওয়ার কী দরকার!

তবুও তর্ক থাকে। যে টাকা অনুদান পাবে পুজো কমিটি। তাতে কটা সরকারি স্কুল হত। কত বাচ্চা মিড ডে মিল পেত। কত জন রাজ্য সরকারি কর্মীর, বকেয়া ডিএ মিটত। এসব কথা ওঠে। কী আর করবেন, নিন্দুকের মুখ তো সহজে বন্ধ হবার নয়! তার থেকে অনেক বেশি জরুরি, আলি বাবা ও চল্লিশ চোরের গল্প ঝালিয়ে নেওয়া। চিচিং ফাঁক হচ্ছে তো হচ্ছেই। কেষ্ট-বিষ্টুদের সম্পত্তির যেন শেষ নেই। আপনি ফুটকড়াই খান, আর প্রহর গুনুন। সে দুঃখে, রসেবশে থাকেন যাঁরা তাঁরা তাড়া তাড়া নোট গুনবেন না কেন? মুশকিল হচ্ছে, গণনার মাঝে হানা দিয়েছে এজেন্সি।

কেন্দ্রের এজেন্সি। এজেন্সিরও রাজনীতি আছে। রাজনীতিরও এজেন্সি আছে। বিরোধীদের তাক করে এজেন্সিকে এগিয়ে দেওয়া হয়েছে কি হয়নি, তা নিয়ে চায়ের পেয়ালায় তুফান তো কোন ছাড় সুনামিও উঠতে পারে। বিরোধীদেরও আবার এজেন্সি নিয়ে বাছবিচার আছে। দিলীপ ঘোষ সিবিআই-কে পছন্দ করেন না, কিন্তু ইডি-কে করেন। ইডি-র প্রতি অন্ধ বিশ্বাস, আর সিবিআই-এর আনুগত্য নিয়ে সন্ধিগ্ধ দিলীপ বাবু। দিলীপবাবুকে নিয়ে আবার রাজ্য বিজেপি সন্দেহবাতিক। তাই দিলীপ ঘোষ, দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। রাজ্য দফতরের ঘরে বসে থাকেন, একলা। অন্য ঘরে, সাংগঠনিক বৈঠক হয়ে যায়, দিলীপ বাবু জানতে পারেন না? না কি জানলেও যান না? একেই কি বলে, ‘একঘর’ ব্যাপার স্যাপার? সব কথা হবে রাত ৮.৫৭। টিভি নাইন বাংলায় যে সময় শুরু হবে, না বললেই নয়।