Calcutta High Court: কথা রাখেনি, শাশুড়ির করা মামলায় বৌমাকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ হাইকোর্টের
Calcutta High Court: চাকরি নেওয়ার সময় ওই মহিলা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি শ্বশুর-শাশুড়ির দায়িত্ব নেবেন। কিন্তু পরে তেমনটা হয়নি।
কলকাতা : ছেলে নেই। বৌমার ওপরেই ভরসা রেখেছিল পরিবার। কিন্তু ছেলের চাকরি পাওয়ার পর বৌমার দেখা পাওয়া ভার! আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও চাকরির বেতনের টাকা দেন না বৌমা। পরিবারের দায়িত্বও নেন না। বেতনের অন্তত কিছুটা অংশ দেওয়া হোক বৃদ্ধাকে। এমনই দাবি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শাশুড়ি নিজে। সেই মামলায় এবার বৌমাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী ২৯ অগস্ট ওই মহিলাকে হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে এই মামলা হয়েছিল।
মূলত শাশুড়ির অভিযোগ, তাঁর মৃত ছেলের চাকরি পাওয়ার পরও তাঁকে কোনও সাহায্য করেননি বৌমা। এমনকী কলকাতা হাইকোর্টের তরফে আগে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেটাও পালন করেননি ওই বৌমা। মঙ্গলবার ছিল সেই মামলার শুনানি। এ দিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, বৌমাকে হাইকোর্টে হাজির হতে হবে। বৌমাকে যাতে হাজির করানো হয়, তার জন্য আইসি-কে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে বজ্রদুলাল মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তিনি ছিলেন প্রাথমিকের শিক্ষক। তাঁর মা, স্ত্রী এবং এক শিশুপুত্রকে রেখে চলে যান বজ্রদুলাল। নিয়ম মাফিক স্বামীর চাকরি পান স্ত্রী কৃষ্ণা পাত্র মণ্ডল। তিনি যখন চাকরি পান, সেই সময় পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা স্কুল পরিদর্শককে একটি হলফনামা দিয়েছিলেন তিনি। বজ্রদুলালের পরিবারের দায়িত্ব নেবেন বলে উল্লেখ করেছিলেন কৃষ্ণা। বজ্রদুলালের বৃদ্ধা মায়ের দেখাশোনা করার কথাও বলেছিলেন তিনি।
কিন্তু শাশুড়ির অভিযোগ, শিক্ষিকার চাকরি পাওয়ার পরই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যান কৃষ্ণা। বজ্রদুলালের মায়ের কোনও দায়িত্ব নেননি বলেই অভিযোগ। এরপর ২০১৭ সালে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বজ্রদুলালের বৃদ্ধা মা দুর্গাবালা মণ্ডল। তাঁর আর্জি মেনে হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, শ্বাশুড়িকে বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ দিতে হবে বৌমাকে। অভিযোগ, ওই নির্দেশের পর প্রথম মাসে ৭,০০০ টাকা দিয়েছিলেন বৌমা। তারপর থেকে আর কোনও টাকা দেননি। সেই অভিযোগ শুনেই বৌমাকে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
কিছুদিন আগেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে ওঠে এমনই একটি মামলা। গ্রুপ ডি পদে কর্মরত এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর চাকরি পান তাঁর স্ত্রী। মৃত ব্যক্তির আগের পক্ষের এক নাবালক সন্তান ছিল। মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, সেই সৎ ছেলেকে দেখভাল করতেন না তিনি। স্বামীর মৃত্যুও হয়েছিল রহস্যজনকভাবে। সেই মামলা শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই মহিলাকে আদালতে হাজির হওয়াক নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে নাবালক সন্তানকে খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি, ওই সন্তান যাতে স্কুলে ভর্তি হতে পারে, তেমন নির্দেশও দিয়েছিলেন বিচারপতি।