Na Bollei Noy: ভুল ধরিয়ে দিলেই কি মুশকিল? যে সব কথা ‘না বললেই নয়’
Na Bollei Noy: কিছু নাছোড়বান্দা মানুষ আছেন। তাঁরা অন্যের ভুলটা চোখে আঙুল দিয়ে না দেখিয়ে থাকতে পারেন না। এই যেমন ধরুন, বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কত ভুল যে হয়েছে, তা সমানে ধরিয়ে দিচ্ছেন।
উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেন জুটির অন্যতম জনপ্রিয় সিনেমা হারানো সুর। সেই সিনেমায়, সুচিত্রা সেন বলেছিলেন, ভুল করার অধিকারটা মানুষের মস্ত একটা পারসোনাল অধিকার। অর্থাত্, ভুল করার অধিকার মানুষের আছে বৈকি! কিন্তু মুশকিল হল অন্য কেউ যখন ভুলটা ধরিয়ে দেয়, তখন ভুলটা যিনি করেছেন, বা যাঁর তরফে হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে, তিনি প্রবল আহত হন। আসলে চোখে আঙুল দিয়ে ভুলটা ধরিয়ে দিলে, বড্ড গায়ে লাগে।
কিন্তু, কিছু নাছোড়বান্দা মানুষ আছেন। তাঁরা অন্যের ভুলটা চোখে আঙুল দিয়ে না দেখিয়ে থাকতে পারেন না। এই যেমন ধরুন, বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কত ভুল যে হয়েছে, তা সমানে ধরিয়ে দিচ্ছেন। আঠাশে সেপ্টেম্বরের মধ্যে অর্থাৎ তেইশ দিনের মধ্যে ২৩ জন চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন গতকাল। আজ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, আরও ৫৪ জন, অর্থাত্ মোট ৭৭ জনকে নিয়োগ করতে হবে। কারণ, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ভুলে এই ৭৭ জন চাকরি পাননি। বা ধরুন, SLST চাকরিপ্রার্থীদের কথা। গত উনত্রিশে জুলাই, SSC চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তারপর, আটই অগাস্ট, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বৈঠক করেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে। যে বৈঠকে ছিলেন, SSC চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারও। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় বা ব্রাত্য বসু, সকলেই আশ্বাস দিয়েছিলেন নিয়োগের ব্যাপারে। কিন্তু, দিন গড়িয়ে গেলেও নাকি, শিক্ষা দফতরের তরফে, তেমন কোনও তত্পরতা SLST চাকরিপ্রার্থীরা দেখতে পাচ্ছেন না। কথা দিয়ে কথা না রাখার ভুলটা তাই তাঁরা আজ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন। আবেদনের ঢঙেই শিক্ষামন্ত্রীকে একটি চিঠি লিখে, দ্রুত নিয়োগের আর্জি জানিয়েছেন। বা ধরুন, নার্সিং চাকরিপ্রার্থীদের কথা। রাজ্যে প্রায় ৩ হাজার নার্স নিয়োগের যে মেধা তালিকা প্রকাশ করেছিল স্বাস্থ্য ভবন, সেই তালিকায় বিস্তর গরমিল রয়েছে অভিযোগ উঠেছে। সেই ভুলটা ধরিয়ে দিতে আজ স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিল, ওই নার্সিং চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চ।
কিন্তু, ভুল ধরিয়ে দেওয়ার এই ঔদ্ধত্য ভালভাবে নেয়নি পুলিশ। বিক্ষোভ শুরুর আগেই, ধরে বেঁধে নিয়ে যায় আন্দোলকারীদের। ঠিক সেই দিনেই স্বাস্থ্য দফতরে নিয়োগের মহাভুল প্রকাশের হুঁশিয়ারি দিলেন বিকাশ ভট্টাচার্য। CPIM নেতা, বর্ষীয়ান আইনজীবী কি তক্কে তক্কে ছিলেন? না হলে, এখনই কেন তিনি বলছেন, শিক্ষা দফতরের দুর্নীতির থেকেও বড়, স্বাস্থ্যের নিয়োগ কেলেঙ্কারি? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকালই তো বলেছেন, এই সরকারের আমলে সব কাগজপত্র আছে বলেই, ভুল ধরছেন সকলে। তাহলে? কাগজপত্র বিকাশবাবুর কাছে থাকলে, তা প্রকাশ করে দিলেই তো পারেন? এই দিচ্ছি, দেব করার কি দরকার আছে? খামোখা অপেক্ষা করিয়ে রাখার রাজনীতি কি আর আমাদের পিছু ছাড়বে না? আর কতদিন জনতাকে ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে হবে বলুন তো? এইসব কথাগুলো আজ না বললেই নয়। না বললেই নয়, রাত ৮.৫৭, টিভি নাইন বাংলায়।