Nawsad Siddique Exclusive: ‘সংখ্যালঘু কার্ড’ দিয়েই এবার শাসককে ‘চেক মেট’ করতে প্রস্তুত নওসাদ
Nawsad Siddique Exclusive: নওসাদের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, "শাসককে কীভাবে জবাব দিতে হয়, কেবল সংখ্যালঘুদের কার্ড ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সংখ্যালঘুদের কোনও উন্নয়ন হয়নি।"
কলকাতা: বৃহস্পতিবার, সাগরদিঘি নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর থেকেই বাংলার রাজনীতিতে একটা নতুন জল্পনার উত্থাপন হয়েছে। উপ নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের জয় নিয়ে বিভিন্ন মহল বিভিন্ন ভাবে বিশ্লেষণ করছে। যে বিশ্লেষণই হোক না কেন, একটা বিষয় নিয়ে প্রায় সকলেই এক মত। তা হল সাগরদিঘিতে সংখ্যালঘু ভোট শাসক দলের থেকে মুখ ফিরিয়েছে। রাজনৈতিক অভিজ্ঞরা এক্ষেত্রে দুটো তিনটে বিষয়কে অনুঘটক হিসাবে দেখছেন। এক আনিস খানের রহস্যমৃত্যু, দুই গত বছরের মাঝামাঝি হওয়া বগটুই কাণ্ড আর তিন নওসাদ সিদ্দিকির গ্রেফতারি। কিন্তু এই গোটা বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন নওসাদ নিজে? TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে সংখ্যালঘুদের মনন নিয়ে কথা বললেন তিনি।
নওসাদ নিজের গ্রেফতারি নিয়ে অবশ্য কিছু বলেননি। তাঁর বক্তব্য, “আনিস খানের সঙ্গে যেটা হয়েছে, বাংলার মানুষ দেখতে পেয়েছেন। বগটুইয়ে যে নির্মম হত্যাকাণ্ড চলেছে, তা বাংলার মানুষ দেখেছে। শুধু আনিস খান, বগটুই নয়, পিছিয়ে পড়া সমস্ত শ্রেণি, এসএসি, এসটি সকলেই বঞ্চিত। মতুয়া, সংখ্যালঘুরা সবাই বঞ্চিত।” শাসকের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে তিনি বলেন, “শুধুমাত্র মাঝেমধ্যে সংখ্যালঘুদের নিয়ে কিছু অনুষ্ঠান, কোনও সময়ে মন্ত্র জপ করে ওদেরকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে।” তাঁর কথায়, “সংখ্যালঘুরা অনেক আগেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। ২০২১ সালের নির্বাচনে এনআরসি-সিএএ-এর যেভাবে ভয় দেখানো হয়েছিল সংখ্যালঘুদের, দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে, এইভাবে বিভ্রান্ত করে ভোট লুঠ করা হয়েছে। তারপর শীতলকুচির ঘটনা। মালদা, মুর্শিদাবাদের মতো জায়গা, যেটা কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত, সেখানেও কংগ্রেসের পরাজয় হয়েছিল। একপ্রকার ভোটটা লুঠ হয়েছিল। সংখ্যালঘুরা আসলে সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে।”
নওসাদের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, “শাসককে কীভাবে জবাব দিতে হয়, কেবল সংখ্যালঘুদের কার্ড ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সংখ্যালঘুদের কোনও উন্নয়ন হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি, সাংবিধানিক অধিকার দেওয়া হচ্ছে না। সংখ্যালঘুরা কেবল প্ল্যাটফর্মের অপেক্ষায় ছিল। এখন প্ল্যাটফর্ম পাচ্ছে। সংখ্যালঘুরা গণতান্ত্রিক উপায়ে উত্তর দেবে।” তাঁর শেষ সংযোজন, “সংখ্যালঘুরা কেবল মুখ ফেরাচ্ছে না, সংখ্যাগুরুরাও মুখ ফেরাচ্ছে। সমাজের সব স্তরের মানুষ মুখ ফেরাচ্ছে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মনে প্রশ্ন একটাই। ঘাসফুলের কাছে এই মুখ ফিরিয়ে নেওয়াটা অশনি সঙ্কেত। যে কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোট একটা ফ্যাক্টর, সেখানে সংখ্যালঘু কাউকে প্রার্থী করা হল না কেন? এবার প্রশ্নটা উস্কে দিয়েছেন ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী। তাঁর মতে সাগরদিঘিতে ভুল করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শাসকের ‘সংখ্যালঘু কার্ড’নিয়েও যে তাৎপর্যপূর্ণ মত রাখলেন নওসাদ, তা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছিল নতুন কাটাছেঁড়া।