Kurmi Protest: ‘এবারও পুজোয় ফেরা হল না’, কুর্মি আন্দোলনে একরাশ হতাশা প্রবাসী বাঙালিদের গলায়

Kurmi Protest: ৬ নং জাতীয় সড়কের উপর খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলি থেকে কলাইকুন্ডা পর্যন্ত কয়েকশো ট্রাক দাঁড়িয়ে। অপরপ্রান্তে চৌরঙ্গী থেকে প্রায় ডেবরা অবধি কয়েকশো ট্রাক দাঁড়িয়ে। চালক ও খালাসি মিলিয়ে প্রায় হাজারখানেক মানুষের গত তিন দিন কাটছে চরম অসহায়তার মধ্যে।

Kurmi Protest: 'এবারও পুজোয় ফেরা হল না', কুর্মি আন্দোলনে একরাশ হতাশা প্রবাসী বাঙালিদের গলায়
কুর্মি সমাজের আন্দোলনে ব্যাহত জনজীবন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 23, 2022 | 5:28 PM

কলকাতা, মেদিনীপুর ও পুরুলিয়া: আদিবাসী সম্প্রদায়ের আন্দোলনের আঁচ এসে পড়েছে কলকাতাতেও। শুক্রবার রানি রাসমণি রোডে আদিবাসী সমাজের মানুষদের একটি সভা রয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধিরা হাওড়া স্টেশন থেকে ছোট ছোট মিছিল করে রানি রাসমনি পর্যন্ত আসেন। এর জেরে হাওড়া ব্রিজ, স্ট্র্যান্ড রোড, মহাত্মা গান্ধী রোড সহ বিভিন্ন জায়গায় যান চলাচল দফায় দফায় ব্যাহত হয়েছে। পুজোর আগে আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধিদের এই সভা ঘিরে সাধারণ যাত্রীদের বেশ নাজেহাল হতে হয়েছে।

এদিকে কুর্মি সমাজের আন্দোলনও শুক্রবার চতুর্থ দিনে পড়ল। ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া – মূলত এই তিন জায়গায় চলছে আন্দোলন। চলছে রেল ও সড়ক অবরোধ। দক্ষিণ পূর্ব রেলের একাধিক ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষরা। পুজোর আগে অনেকেই যাঁরা ভিন রাজ্য থেকে বাংলায় ফেরার পরিকল্পনা নিয়েছেন, তাঁদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

এদিকে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই কুর্মি সমাজের নেতা অজিত প্রসাদ মাহাতোর হাতে একটি চিঠি তুলে দেওয়া হয়েছে। তাতে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের থেকে কুর্মি সমাজের প্রতিনিধিরা তফসিলি উপজাতি কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। অজিত প্রসাদ মাহাতো এই বিষয়ে জানিয়েছেন, “যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তার প্রথম পাতা আমরা দেখেছি। সেটি ঠিক আছে। ভিতরে আমরা এখনও পড়িনি। গোটা বিষয়টি আমরা বিশেষজ্ঞদের কাছে পরামর্শ নেব।”

মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে কুর্মি সমাজের মানুষদের আন্দোলন। আর ওই দিন থেকেই ৬ নং জাতীয় সড়কে আটকে আছে শ’য়ে শ’য়ে মালবাহী ট্রাক। চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন ভিন রাজ্যের ট্রাক চালকরা। একদিকে, ৬ নং জাতীয় সড়কের উপর খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলি থেকে কলাইকুন্ডা পর্যন্ত কয়েকশো ট্রাক দাঁড়িয়ে। অপরপ্রান্তে চৌরঙ্গী থেকে প্রায় ডেবরা অবধি কয়েকশো ট্রাক দাঁড়িয়ে। চালক ও খালাসি মিলিয়ে প্রায় হাজারখানেক মানুষের গত তিন দিন কাটছে চরম অসহায়তার মধ্যে। ভিন রাজ্যের ট্রাক চালকের সংখ্যাই বেশি। এদিকে আন্দোলনকারী বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের দাবি দাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে।

এই বিষয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, “গায়ের জোরে রেল অবরোধ করে তো কাউকে সংরক্ষণ দেওয়া যায় না। তাদের দাবি সংসদে আমরাও তুলেছি। কিন্তু তার একটি পদ্ধতি রয়েছে। সেই মতো কাজ চলছে। কিন্তু এখান থেকে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বাংলার অর্থনীতি এবং সারা দেশের অর্থনীতি খারাপ হবে। আমার মনে হয় এতে তৃণমূলের মদত আছে। সাধারণ মানুষ বুঝবেন, এতে কার ক্ষতি হচ্ছে।”

এদিকে এই আন্দোলন-অবরোধের জেরে ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক প্রবাসী বাঙালি। কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে থাকেন এমন অনেক প্রবাসী বাঙালি পুজোর সময় বাড়ি ফেরেন। কিন্তু বিক্ষোভ-অবরোধের জেরে বেশ কিছু ট্রেন বাতিল হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন তাঁরাও। পুণে থেকে প্রিয়াঙ্কা মুখোপাধ্যায় নামে এক প্রবাসী বাঙালি জানাচ্ছেন, “দুর্গাপুজোর সময় কলকাতায় আসার জন্য টিকিট আগে থেকেই কেটে রেখেছিলাম। দুই বছর করোনার পরে এই বছর পুজোয় কলকাতায় যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ট্রেন বাতিল হয়েছে। আমাদের আর যাওয়া হল না।” তিনি আরও জানান, এখন বিমানের ভাড়া যা দেখাচ্ছে, তাও আকাশছোয়া। একরাশ হতাশা মেশানো গলায় বললেন, ” এই বছরও আমাদের আর যাওয়া হল না।”