SLST: ফিনাইল খেয়ে ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’ ৪ চাকরিপ্রার্থীর, রাতভর হাসপাতালে ঢুঁ মীনাক্ষীর, বেনজির বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি
SLST: বৃহস্পতিবার সেই এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের অনশন মঞ্চেই পুলিশি হানা দেয়। শুরু হয় ধস্তাধস্তি টানা হেঁচড়া। আটক হন একাধিক আন্দোলনকারী।
কলকাতা: ধর্মতলার পর এবার লালবাজার। মহানগরের প্রাণকেন্দ্রে বেনজির হুলস্থুলকাণ্ড। এসএলএসটি ধর্না মঞ্চে অতর্কিতে পুলিশি হানার অভিযোগ। ধুন্ধুমারের পর লকআপে অসুস্থ হয়ে পড়েন ৪ জন। ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। লালবাজারের লকআপে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগে শোরগোল পড়ে যায়। উল্কা গতিতে খবর ছড়িয়ে পড়তেই এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছয় বাম-বিজেপির প্রতিনিধি দল। কিন্তু এসএসকেএম হাসপাতালে হদিশ না পেয়ে রাতভর থানায় থানায় ঢুঁ মারেন মীণাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের। ভোরে ময়দান পিএসেও খোঁজ নেন। বেনজির বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। তথ্য গোপনের অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। শিক্ষা ক্ষেত্রে অরাজকতা চলছে বলে রাজ্য সরকারের বিঁধেছেন তিনি। পুলিশের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলেছে পরিবার।
বৃহস্পতিবার, ২টো ৫৫ নাগাদ লাল বাজার পৌঁছন মীনাক্ষী ও তার অনুগামীরা। সেখানেও কোনও রকম সদুত্তর না পেয়ে কথা বলেন হেয়ারস্ট্রিট থানার সঙ্গে। ৪টে ১৫ নাগাদ ময়দান থানাতে পৌঁছন। চাকরি প্রার্থীদের ময়দান থানা গ্রেফতার করেছে বলে পেয়ে।
ভোর ৫টায় ময়দান থেকে বেরিয়ে মীনাক্ষী জানান, মোট ৬৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। চার জন অসুস্থ হয়েছিল। এসএসকেএম চিকিৎসা হয়েছে। তাঁদের কী কারণের জন্য চিকিৎসা করানো হয়েছে কেউ কিছু বলছে না। চাকরি প্রার্থীরা ছাড়া পেলে তবেই বোঝা যাবে। কেনো তাঁদের চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
ধর্মতলা থেকে লালবাজার- বৃহস্পতিবার দিনভর বেনজির হুলস্থুল কাণ্ডের সাক্ষী থাকে মহানগরের প্রাণকেন্দ্র। চাকরি আদায়ে মরণপণ লড়াই চালাচ্ছেন এসএলএসটি চাকরি প্রার্থীরা। সর্বস্ব বাজি রেখে লড়ছিলেন বাংলার কয়েকশো তরুণ তরুণী। টানা ৭০ দিন ধরে শহিদ মিনার লাগোয়া মাতঙ্গিনী মূর্তির নীচেই চলছিন সুষ্ঠুভাবে বাঁচার দাবিতে লড়াই।
বৃহস্পতিবার সেই এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের অনশন মঞ্চেই পুলিশি হানা দেয়। শুরু হয় ধস্তাধস্তি টানা হেঁচড়া। আটক হন একাধিক আন্দোলনকারী। জবরদস্তি প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারে। তবে লকআপেও থামেনি বিতর্ক। বরং সেখানে বিতর্ক বাড়ে।
খবর ছড়ায়, লক আপেই হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন চার আন্দলোনকারী। অভিযোগ, ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন সালমান শেখ, মাজিজুর রহমান, ঝন্টু হালদের, ইন্দ্রজিৎ মন্ডল। পুলিশই তাঁদের এসএসকেএম-এ নিয়ে যায় বলে দাবি এক সহযোদ্ধার কোল রেকর্ডে।
সেই কল রেকর্ড উল্কা গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় পুলিশ, হাসপাতাল মুখে কুলুপ আঁটে। রাতেই হাসপাতালে পৌঁছন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। অসুস্থতদের হদিশ না পেয়ে লালবাজারে যান সিপিআইএম নেত্রী। রাতভর একাধিক থানাতেও যান বামনেত্রী।
রাতেই বিজেপির পক্ষ থেকে এসএসকেএম-এর বাইরে শুরু হয় ধর্না অবস্থান। আগেই নিয়োগে বেনিয়মে রাজ্যকে তুলোধনা করতে ছাড়েন নি সুকান্ত মজুমদারও।
তবে ধর্মতলায় বৃহস্পতিবার যে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে, তার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে পুলিশের দাবি, কোর্টের শর্ত মানছিলেন না আন্দোলনকারীরা। সেই কারণেই অভিযান। তবুও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এতটা শক্তিপ্রয়োগের প্রয়োজন ছিল কি? লক আপে আত্মহত্যার চেষ্টাতে প্রশ্নের মুখে লালবাজারের নজরদারিও।