Suvendu on Mamata: ‘সংবিধান মানেন না, গোটা রাজ্যে একনায়কতন্ত্র চান’, বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে মমতাকে তুলোধনা শুভেন্দুর
Suvendu on Mamata: এদিন শুভেন্দুকে সরব হতে দেখা যায় বিধানসভা থেকে সাসপেনশন নিয়েও। গলায় প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে বলেন, “বিরোধী দলনেতা-সহ একাধিক বিজেপি বিধায়ককে চার বছরের কাছাকাছি সময়ে মোট চার মাস বহিষ্কার করা হয়েছে। হাইকোর্টেও গিয়েছি আমরা। হাইকোর্টের হস্তক্ষেপেই শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হয়েছে।”

কলকাতা: “গত চারবছর ধরে বাংলার প্রধান বিরোধী দল হিসাবে কাজ করছে বিজেপি। ২ কোটি ২৭ লক্ষ জনগণ বিজেপির প্রার্থীদের নির্বাচিত করে বিধায়ক হিসাবে বিধানসভায় পাঠিয়েছে। কিন্তু, আমরা আক্রান্ত।” বিধানসভার সামনে ধরনা মঞ্চ থেকে এদিন এ ভাষাতেই গর্জে উঠলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তোপের বন্যা বয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। শুভেন্দুর সাফ কথা, “এই বাংলা থেকে তিনি টাটাদের তাড়িয়েছেন, বাংলার ঋণের বোঝা বাড়িয়েছেন, তিনি তোষণের নামে হিন্দু সমাজকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এখন অস্তিত্ব রক্ষার সঙ্কটে। পাহাড় থেকে জনজাতি, পশ্চিমাঞ্চলের কড়মি সমাজ, সুন্দরবনের গরিব মানুষেরা এই সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারা আক্রান্ত। আমরাও আক্রান্ত।”
সরব হন বিধানসভা থেকে সাসপেনশন নিয়েও। গলায় প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে বলেন, “বিরোধী দলনেতা-সহ একাধিক বিজেপি বিধায়ককে চার বছরের কাছাকাছি সময়ে মোট একাধিকবার বহিষ্কার করা হয়েছে। হাইকোর্টেও গিয়েছি আমরা। হাইকোর্টের হস্তক্ষেপেই শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হয়েছে।” শুভেন্দুর এও দাবি, বাম-কংগ্রেস সঙ্গে বিরোধী আসনে ছিল তখন কোনও অ্যাকশন নেয়নি তৃণমূল সরকার। যত রাগ শুধুই বিজেপির উপর। শুভেন্দুর কথায়, “২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সিপিএম বিরোধী আসনে ছিল। একদিন বিরোধী দলনেতাকে সাসপেন্ড করেনি। ২০১৬ সাল থেকে একুশ পর্যন্ত কংগ্রেস ছিল, বাধা দেয়নি। কিন্তু বিজেপিকে প্রতি পদে পদে বাধা দেওয়া হয়।”
তুলে ধরেন ইতিহাসের খতিয়ান
এখানেই না থেমে সুর আরও চড়িয়ে তিনি বলেন, “এই বিধানসভাকে কলুষিত করেছেন এই মুখ্যমন্ত্রী। ২০০৬ সালে বিধানসভার মেম্বার না হয়েও তিনি এখানে ঢুকে সব আসবাবপত্র ভেঙেছেন। এই মুখ্যমন্ত্রী ২০০৫ সালে লোকসভার ডেপুটি স্পিকারকে কাগজ ছুঁড়ে মেরেছিলেন। যেমনভাবে পার্টি চালান তেমনভাবেই এই বিধানসভাকে তিনি নিজের সম্পত্তি হিসাবে ব্যবহার করেন। উনি আসবেন, অনেক ভাষণ দেবেন, আর মিথ্যার ফুলঝুড়ি ছড়াবেন।” শুভেন্দুর সাফ কথা, “১৪ বছর ধরে পুলিশ মন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রীর পদে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, একটাও পুলিশ বাজেট হয় না। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা তলানিতে।” স্কুল-কলেজে সরস্বতী পুজোয় বাধা নিয়েও লাগাতার ক্ষোভ উগরে দেন। খোদ মমতার কলেজে কেন সরস্বতী পুজোর জন্য পড়ুয়াদের হাইকোর্টে ছুটতে হল এদিন ফের একবার সেই প্রশ্ন করেন শুভেন্দু।
সরস্বতী পুজোয় বাধা নিয়ে ক্ষোভ
শুভেন্দুর স্পষ্ট কথা, “আমরা গর্বিত। কারণ, আমরা সনাতনী। আমরা হিন্দু। আমরা বলেছিলাম মা সরস্বতীর পুজো শুধু হিন্দুদের পুজো নয়। সব স্কুলে পুজো হয়। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী যে ল’ কলেজে পড়েছিলেন বলে দাবি করেন সেখানকার ছাত্রীকে কেন কলকাতা হাইকোর্টে যেতে হল? কেন পুলিশ দাঁড় করিয়ে পুজো করা হল? কেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাব্বির আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল না? কেন হরিণঘাটার হেড মাস্টারকে তৃণমূলের বুথ সভাপতি হুমকি দিলেন? কেন পুলিশ, তৃণমূল কংগ্রেস কেউ কোনও ব্যবস্থা নিল না? এই প্রশ্নই আমাদের বিধায়করা করতে চেয়েছিলেন। আমরা মা সরস্বতীর অপমানের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সাসপেন্ড হয়েছি। এতে আমাদের দুঃখ নেই। উনি সংবিধান মানেন না। গোটা রাজ্যে উনি একনায়কতন্ত্র চান। গোটা বাংলাকে শেষ করে দিয়েছেন।”





