Utsashree: উৎসশ্রীতে ‘দেদার দুর্নীতি’, প্রতিবাদে পদ ছাড়লেন তৃণমূলেরই শিক্ষক নেতা

Utshasree Scheme: অর্ঘ্যবাবুর মারাত্মক অভিযোগ, উৎসশ্রী শুরু হতে না হতেই দুর্নীতি চালু হয়ে গিয়েছে। যারা এই দুর্নীতিতে মদত দিচ্ছে, তাদের পদোন্নতিও হচ্ছে।

Utsashree: উৎসশ্রীতে 'দেদার দুর্নীতি', প্রতিবাদে পদ ছাড়লেন তৃণমূলেরই শিক্ষক নেতা
সহজে বদলির আবেদনের জন্য রাজ্যের এই ‘উৎসশ্রী’ পোর্টাল। প্রতীকী চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 19, 2021 | 2:53 PM

কলকাতা: সরকারি শিক্ষকদের বদলি নিয়ে একাধিক বার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে এবং দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষক বদলি পদ্ধতি নিশ্চিত করতে উৎসশ্রী (Utsashree) পোর্টাল তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এবার সেই পোর্টালে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। বদলিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নিজের রাজনৈতিক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন খোদ তৃণমূলেরই এক শিক্ষক নেতা। ক্ষুব্ধ শিক্ষকের নাম অর্ঘ্য চক্রবর্তী। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি পদে ছিলেন অর্ঘ্য।

পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অশোক রুদ্রকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর পদত্যাগপত্র পাঠান অর্ঘ্য চক্রবর্তী। সেখানে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে অর্ঘ্য চক্রবর্তী লেখেন, ‘পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় কাউন্সিলের ভুলে ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের দোষ না থাকা সত্ত্বেও লক্ষাধিক টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া বা উৎসশ্রী প্রকল্পে চরম দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে দল বিরোধী কাজ করা হয় আর দুর্নীতি করলে প্রমোশন পাওয়া যায় —এই ধারনা আমার ছিল না।’ এরপরই ওই শিক্ষক লেখেন, ‘আমি পূর্বেও বলেছি, আবারও বলছি আমাকে অব্যহতি দিন। আমি এই সংগঠনের জেলা সভাপতি থাকতে চাই না।’

অর্ঘ্যবাবুর মারাত্মক অভিযোগ, উৎসশ্রী শুরু হতে না হতেই দুর্নীতি চালু হয়ে গিয়েছে। যারা এই দুর্নীতিতে মদত দিচ্ছে, তাদের পদোন্নতিও হচ্ছে। অথচ যারা দুর্নীতির বিরোধিতায় সরব হচ্ছেন, তাঁদের দল বিরোধীর তকমা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সে কারণেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

কলকাতার একাধিক শিক্ষক সংগঠন এই উৎসশ্রীতে আবেদনের মাধ্যমে বদলির স্বচ্ছতা নিয়ে একাধিক বার সরব হয়েছে। সংগঠনের সদস্যদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উৎসশ্রী পোর্টাল চালু করার উদ্দেশ্য, শিক্ষকরা যাতে বাড়ির কাছে বদলির সুযোগ পান। কিন্তু তার বদলে উৎসশ্রীর মাধ্যমে দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু খোদ তৃণমূলের জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ নিয়ে সরব হওয়ায় এবার তা অন্য মাত্রা নিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পোস্টিং নিয়ে সমস্যা বহু বছরের। অনেককেই কয়েক ঘণ্টার পথ অতিক্রম করে স্কুলে যেতে হয়। কারও বাড়িতে রয়েছেন অসুস্থ ব্যক্তি, আর আবার সন্তান ছোট। সেই সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি এক বিশেষ পোর্টাল তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। ‘উৎসশ্রী’ পোর্টাল চালুর কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পোর্টালের মাধ্যমে সহজেই আবেদন করা যাবে বদলির জন্য।

কিন্তু এই পোর্টালের নিয়ম কানুন নিয়েও একাধিক গলদের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শিক্ষা দফতরে গিয়ে ডেপুটেশনও দিয়েছেন একাধিক স্কুলের শিক্ষক। এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম বদলের আর্জিও জানান তাঁরা। তাঁদের দাবি, এই প্রকল্পে পাঁচ বছরের যে ‘লকিং পিরিয়ড’-এর কথা বলা হয়েছে, তা তুলে নিতে হবে।

একই সঙ্গে শিক্ষকদের একাংশ দাবি করেন, প্রধান শিক্ষক হতে গেলে অন্তত ১০ বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। অথচ এই প্রকল্পে প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকার অভিজ্ঞতা কোনও দাম পাচ্ছে না। তাঁদের কোনও সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। প্রধান শিক্ষকদের ক্ষেত্রে লকিং পিরিয়ড রাখা যাবে না বলেও দাবি ওঠে। এই বদলগুলি না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটার কথাও বলেন অভিযোগকারীরা। এবার সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন শাসকদলের শিক্ষক নেতা। যদিও এ নিয়ে এখনও পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: Sanatan Dinda Sketch: ‘মা আসছেন’, মুখে হিজাব, প্রাণনাশের হুমকি ফোন সনাতন দিন্দাকে