কলকাতা: গলদ কি তবে গোড়াতেই? ট্যাব কাণ্ডে সমস্যা কী সরকারি পোর্টালেই? শিক্ষা দফতরের পোর্টাল নিয়ে ইতিমধ্যেই বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। এই গলদের সুযোগেই কী এতবড় কেলেঙ্কারি? পোর্টালে ইউজার নামের ক্ষেত্রে স্পেশ্যাল ক্যারেক্টার নিষিদ্ধ। কিন্তু, বাংলার শিক্ষা পোর্টালে সহজেই ব্যবহার করা যাচ্ছে স্পেশ্যাল ক্যারেক্টার। পোর্টালের সেই গলদ কাজে লাগিয়েই রাজ্যব্যাপী জালিয়াতি হচ্ছে? প্রশ্ন তুলছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
কোন পথে হয় ট্যাবের আবেদন?
‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে এই ট্যাবের টাকা দিচ্ছে সরকার। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা। এর জন্য ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালে পড়ুয়াদের যাবতীয় তথ্য আপলোড করতে হয়। সেখানেই জমা থাকে পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও আইএফএসসি (IFSC) কোড। উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলিকে নিজস্ব আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে করতে হয় লগ ইন। তারপরই পড়ুয়াদের যাবতীয় তথ্য সেখানে আপলোড করতে হয়। অ্যাকাউন্ট নম্বরের পাশাপাশি আপলোড করতে হয় পড়ুয়ার নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর। এই সব আবেদনের ভিত্তিতেই পড়ুয়াদের জন্য টাকা বরাদ্দ হয়। সরাসরি অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে ১০ হাজার টাকা। কিন্তু অভিযোগ, বেশ কিছু ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েও মাঝপথে টাকা হয়ে যাচ্ছে টাকা গায়েব। তা লগ ইন আর পাসওয়ার্ড নিয়ে বারেবারে উঠছে প্রশ্ন।
কোন পথে হচ্ছে জালিয়াতি?
বাংলার শিক্ষা পোর্টালে কোনও শিক্ষক, কোনও স্কুল, কিংবা কোনও প্রশাসক লগ ইন করতে পারেন। প্রশাসকদের (অ্যাডমিনিস্ট্রেটর) সেকশনে গেলে লগ ইন করার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ইউজার নামের ক্ষেত্রে স্পেশ্যাল ক্যারেক্টার দিয়ে ‘ইউজার নেম’ দেওয়া যাচ্ছে। এবার এই বাংলার শিক্ষা পোর্টালেরই আর একটা অংশে লগ ইনের ক্ষেত্রে দেখা কোনও স্পেশ্যাল ক্যারেক্টার দেওয়া যাচ্ছে না।
সাইবার বিশেষজ্ঞ সাম্যজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, এই ধরনের সাইটে অ্যাডমিন লগ ইন প্যানেলে স্পেশ্যাল ক্যারেক্টার অফ করে রাখা একটা প্রাইমারি কাজ। সিকিউরিটির জন্য এটা করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা দেখা যাচ্ছে। তাঁদের আশঙ্কা, এই ফাঁককে কাজে লাগিয়ে চলতে পারে হ্যাকিং।
প্রসঙ্গ, ট্যাব কেলেঙ্কারি নাম জড়িয়ে গিয়েছে বাংলার প্রায় সব জেলারই। সিংহভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, মাঝপথ থেকে ট্যাবের টাকা গায়েব হয়ে চলে যাচ্ছে অন্য ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে। অভিযোগ, প্রতারণা চলেছে মূলত সাইবার ক্যাফেগুলিতে। ভাড়া খাটানো হয়েছে বহু লোকের অ্যাকাউন্ট। ১০ হাজার টাকা রাখার জন্য তিনশো থেকে ৫ হাজার পর্যন্ত ভাড়া দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। নাম জড়িয়েছে বাংলার ১৫ জেলার। কিন্তু, কোথায় গিয়েছে সেই সব টাকা? গোয়েন্দারা বলছেন, সিংহভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে গায়েব হওয়া টাকা গিয়েছে উত্তর দিনাজপুরের একাধিক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে। জমা পড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এটিএম থেকে তোলা হয়েছে সেই টাকা। ইতিমধ্যেই একাধিক সাইবার ক্যাফের মালিক সহ বহু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে তদন্ত চালাচ্ছে পুলি।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)