Chanderi Saris: পালকের মত হালকা! রাজকীয় চান্দেরি শাড়ি তৈরি হয় প্রাচীন জল প্রযুক্তিতে
Indian Fashion: ওজনেও হালকা, ফলে ঘরোয়া পার্টি হোক বা বিয়েবাড়ি— নারীর সৌন্দর্যকে আরও একটু ঐশ্বর্যশালী করে তুলতে এই শাড়ি পরে যাওয়া যায় যে কোনও অনুষ্ঠানে।
পালকের মতো হালকা আর শিশিরবিন্দুর মতো পেলব উজ্জ্বল— এক কথায় এই হল চান্দেরি শাড়ি (Chanderi Sari) ! ভারতীয় নারীর অন্যতম পছন্দের পোশাক হল চান্দেরি। ভারতীয় হস্তশিল্পকে (Indian Handcraft) অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে চান্দেরি। ফলে যাঁরা হাতে বোনা তাঁতের শাড়ি পছন্দ করেন তাঁদের ওয়্যারড্রোবে চান্দেরি আলাদা জায়গা করে নেবে আশ্চর্য কী! প্রশ্ন হল, এই শাড়ির নাম চান্দেরি কেন? কারণ মধ্যপ্রদেশের চান্দেরি শহরে প্রাচীন জল প্রযুক্তি এবং তাঁতের সাহায্যে প্রস্তুত করা হয় এই শাড়ি। আজকাল এই পদ্ধতি খুব একটা প্রচলিত নয়। গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীত-বসন্ত—যে কোনও আবহাওয়ায় পরার জন্য উপযুক্ত এই হালকা শাড়ি। দেখতে সাদাসিধে হওয়া সত্ত্বেও চান্দেরি অঙ্গের আবরণ হিসেবে রাজকীয় এবং চমকদার। ওজনেও হালকা, ফলে ঘরোয়া পার্টি হোক বা বিয়েবাড়ি— নারীর সৌন্দর্যকে আরও একটু ঐশ্বর্যশালী করে তুলতে এই শাড়ি পরে যাওয়া যায় যে কোনও অনুষ্ঠানে।
চান্দেরি তৈরি হয় সুতি এবং রেশমের মিশ্রণে। তবে শুধু রেশমের তৈরি চান্দেরিও মেলে। ফলে গ্রাহকরা একদিকে যেমন পরিশীলিত রঙের শাড়ি পান তেমনই জেল্লাদার শাড়িও নির্বাচন করতে পারেন।
এদেশে সাধারণত গ্রীষ্মে পরিধেয় হিসেবে অত্যন্ত উপযুক্ত চান্দেরি। সাধারণত ‘শাড়ি’ হিসেবেই পরার চল থাকলেও ‘সিলুয়েট’ হিসেবেও চান্দেরি পরার চল শুরু হয়েছে এবং তা দ্রুত জনপ্রিয়ও হচ্ছে। ফলে আবহাওয়া যেমনই হোক না কেন, এদেশে চান্দেরি পরা অভ্যেস ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ যে কোনও আবহাওয়ার সঙ্গে চান্দেরি ফ্যাশন হিসেবেও মানানসই এবং পোশাক হিসেবেও আরামদায়ক। চান্দেরির অন্যতম বৈশিষ্ট হল, শাড়ির গায়ে জরির সাহায্যে বুনে তোলা মোটিফ বা নকশা। চান্দেরি শাড়িতে ব্যবহৃত সবচাইতে পরিচিত মোটিফ হল ‘কয়েন’। ‘ফ্লোরাল’ বা ‘পুষ্প ও লতাপাতা’র মতো মোটিফও চান্দেরির গুরুত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে তাতে সন্দেহ নেই।
বিশেষ প্রক্রিয়ায় রেশম বারবার জলে ধুয়ে তার আঠালো ভাব দূর করার কারণে এই শাড়িতে একধরনের ‘স্বচ্ছ’ বৈশিষ্ট্য তৈরি হয়। এই স্বচ্ছ বিভ্রমই চান্দেরিকে করে তুলেছে পালকের মতো হালকা এবং চরিত্রে রাজকীয়। স্মর্তব্য, এই শাড়ি একটু আলগা করে বোনা হয়। আর সেই কারণেই শাড়ির নির্মলভাব অটুট থাকে। একসময় কেবলমাত্র রাজকীয়তা প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত হতো চান্দেরি। তবে এখন সমগ্র বিশ্বেই শিল্পের সমঝদারদের মধ্যে এই শাড়ি প্রবল জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। শাড়ির নকশাতে এসেছে বিবিধ পরিবর্তন। শাড়ির ‘আঁচল’ হোক ‘গাত্র’— সবক্ষেত্রেই মোটিফের পরিবর্তন এই শাড়িকে করে তুলেছে আরও আকর্ষণীয়। চান্দেরি শিল্পের বাজারও যথেষ্ট আশাপ্রদ।
ঘরোয়া যে কোনও অনুষ্ঠানে পরে যাওয়ার জন্য চান্দেরি একবারে সঠিক নির্বাচন হতে পারে। আজকাল কুর্তা, ওড়না, স্কার্ট, সিলুয়েট, শাড়ি— নানা রূপে মিটছে চান্দেরির পরার স্বাদ!বৈচিত্র্যময় এবং যথেষ্ট বায়ু চলাচল হয় বলে এই পোশাক পরে কষ্ট বোধ হয় না। গায়েও সেঁটে থাকে না পোশাক। এই কারণেই অনেকেরই হৃদয় চুরি করেছে এই শাড়ি।